কুণাল ঘোষ, দিঘা: অধ্যাত্মবাদ ও সম্প্রীতির মেলবন্ধন হবে দিঘায়। দিঘা হয়ে উঠবে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র। সোমবার সকালে দিঘায় পৌঁছেই স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, ৩০ এপ্রিল অক্ষয়তৃতীয়ায় আড়াইটে নাগাদ নির্ধারিত সময়ে দিঘায় জগন্নাথধামের দ্বারোদ্ঘাটন ও জগন্নাথদেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে। তার আগে জোরকদমে চলছে হোম-যজ্ঞ ও অন্যান্য আচার-অনুষ্ঠান।
আরও পড়ুন-আস্থা নেই বিএসএফে, পূর্ণমকে ফেরাতে পাঠানকোট রওনা স্ত্রীর
সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ দিঘায় পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। হেলিপ্যাডে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, পুরীর জগন্নাথ ধামের ঐতিহ্যের সঙ্গে মিলিয়ে আগামীর জন্য বাংলার সংস্কৃতি ও কৃষ্টির প্রতীক হয়ে থাকবে দিঘার এই জগন্নাথধাম। সেই কৃষ্টির কথা তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হাজার হাজার বছর ধরে বাংলার স্থাপত্যের নিদর্শন হয়ে থাকবে দিঘার জগন্নাথধাম। বর্তমান ও নতুন প্রজন্মের জন্য এটি কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সম্প্রীতির মিলিত প্রতীক হয়ে থাকবে। একদিকে আধ্যাত্মিকতা, অন্যদিকে সম্প্রীতির মেলবন্ধন হবে দিঘা। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, দিঘার মুকুটে নতুন পালক যোগ হল। এ হল, পুরনো পাথরে নতুনের পথ চলা। সৈকত নগরী দিঘার মুকুটে নতুন পালক জগন্নাথধাম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হবে দিঘা। তাতে এই মন্দির নিশ্চয়ই একটি আলাদা পালক যুক্ত করবে। দিঘাকে উচ্চশিখরে তুলে দেবে। সৈকতনগরী দিঘার যে চেহারা ইতিমধ্যেই পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে, তার আরও শ্রীবৃদ্ধি হবে। আগে তো কিছুই ছিল না। এখন দিঘা-গেট, সৈকত-সরণি, সাত কিলোমিটার ব্রিজ হয়েছে।
আরও পড়ুন-ইতিহাস-বিকৃতি : ব্রাত্য
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বুধবার প্রাণপ্রতিষ্ঠার আগে সাতদিন ধরে দিঘায় চলছে নানা উপাচার। উদ্ঘাটনের একটি নির্দিষ্ট সময় থাকে। অক্ষয়তৃতীয়ার দিন আড়াইটেয় জগন্নাথধামের দারোদ্ঘটন হবে। মঙ্গলবারও যজ্ঞ চলবে। পরশু বুধবার সকাল থেকে হবে ঠাকুর প্রতিস্থাপনার বিভিন্ন উপাচার। তারপরে দ্বারোদঘাটন। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দিঘা এসেছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। আগেই পৌঁছেছেন, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও মন্ত্রী পুলক রায় এবং সুজিত বসু। রয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। দিঘা পৌঁছেই মন্দির প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। কথা বলেন, পুরীর দ্বৈতাপতি ও ইসকনের পুরোহিতদের সঙ্গে। তাঁরাই মুখ্যমন্ত্রীকে মন্দির পরিভ্রমণে সহযোগিতা করেন। মুখ্যমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় জগন্নাথধামের উদ্বোধনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে লিখেছেন, বহু প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে বাংলার নবনির্মিত তীর্থস্থান পরিদর্শনের। বাংলার পুণ্যভূমিতে জগন্নাথ দেবের আহ্বানে শুরু হয়েছে যজ্ঞ ও মঙ্গলারতি। সরেজমিনে সবটা খতিয়ে দেখে আগত অতিথিদের যাতে কোনও অসুবিধা নয়, তার জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যান-চলাচল যাতে সচল থাকে সেই নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।