মহাযজ্ঞে মুখ্যমন্ত্রী, দিঘার মন্দির দেশের গৌরব

ধর্ম কারও একার নয়, ধর্ম সকলের। সব তীর্থস্থানে সকলেই যেতে পারেন। বিষয়টিকে হৃদয় দিয়ে, অন্তর দিয়ে ছুঁয়ে যেতে হয়।

Must read

কুণাল ঘোষ, দিঘা: ধর্ম কারও একার নয়, ধর্ম সকলের। সব তীর্থস্থানে সকলেই যেতে পারেন। বিষয়টিকে হৃদয় দিয়ে, অন্তর দিয়ে ছুঁয়ে যেতে হয়। ধর্মের অধিকার কারও একার নয়। ধর্ম হল মানুষের আস্থা-ভরসা, ভালবাসা, বিশ্বাস। মঙ্গলবার জগন্নাথধামে মহাযজ্ঞ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, জগন্নাথধাম, আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র হয়েছে। এটা বাংলার গর্ব, দেশের গর্ব। আমরা সকলে গর্বিত। এত সুন্দর আর্কিটেকচারের কাজ হয়েছে। এত সুন্দর ভাবে পুজো হচ্ছে। পুরী থেকে দ্বৈতাপতিরা টিম নিয়ে এসেছেন। ইসকন দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেছে। টোটাল টিম আছে ওদের।। আদ্যাপীঠের মুরাল ভাই এসেছেন। দক্ষিণেশ্বর থেকে কুশলরা এসেছেন। বেলুড় মঠ-কামারপুকুর থেকে শুরু করে সনাতন ধর্মের লোকেরা এসেছেন। সব ধর্মের, সব বর্ণের লোকেরা এসেছেন। জয়রামবাটি থেকে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রী সংযোজন, যতটা সম্ভব অন্তর দিয়ে, হৃদয় দিয়ে আমরা চেষ্টা করেছি। এরপরই তিনি বলেন, ধর্ম মুখে প্রচার করে হয় না। ধর্ম হৃদয় দিয়ে ছুঁয়ে যায়, ধর্ম হল মানুষের আস্থা-ভরসা, বিশ্বাস এবং ভালবাসা। এদিন পুজোর সময় পুরোহিত মুখ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেন, আপনার গোত্র শাণ্ডিল্য তো? মুখ্যমন্ত্রী উত্তর দেন, আমার গোত্র মা-মাটি-মানুষও। চিরকাল আমি মা-মাটি-মানুষ গোত্রে পুজো করি। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, মা-মাটি-মানুষ গোত্রে পুজো হয়েছে। মা-মাটি-মানুষ ভাল থাকলে, আমি ভাল থাকি। সবার হয়েই এটা অর্পণ করা হল।

আরও পড়ুন-একাধিক মেট্রো স্টেশনের নাম বদল, নতুন নাম জমা পড়ল নবান্নে

উদ্বোধনের অনুষ্ঠানসূচি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বুধবার বেলা আড়াইটা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে। তিনটের সময় দ্বারোদ্ঘাটন হবে। তারপরে জনতার জন্য খুলে দেওয়া হবে জগন্নাথধাম। আজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গায়ক রূপঙ্কর বাগচী, নচিকেতা, অদিতি মুন্সি, ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়, জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, জুন মালিয়া, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, লাভলি মৈত্র, দেবলীনারা এসেছেন। আরও অনেকে এসেছে দেখলাম। এছাড়া অনেক শিল্পপতিও এসেছেন। এদিনের মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা অরিন্দম শীল, প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসেছেন দেবজ্যোতি মিশ্র, অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, গার্গী রায়চৌধুরী, উমেশ চৌধুরী, রুদ্র চট্টোপাধ্যায়, দেবাঞ্জন মণ্ডল, মায়াঙ্ক জালান। সন্ধ্যায় আসেন দেবও৷ পাঁচ মন্ত্রী ছাড়াও আর এক মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনও এদিন উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন আধিকারিকরাও।
বুধবার দ্বারোদ্ঘাটনের আগে এদিন মন্দিরের ধ্বজা উঠল। যতক্ষণ ধ্বজা লাগানোর কাজ চলল, ততক্ষণ হাতজোড় করে মুখ্যমন্ত্রী ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন সকলকে সঙ্গে নিয়ে। মন্দিরচত্বরে ঢুকেই পুণ্য কলস থেকে পবিত্র জল দেন (পূর্ণাহুতি) সঙ্গে ছিলেন ইসকনের রাধারমণ দাস ও তাঁর সঙ্গীরা। ছিলেন পুরীর দ্বৈতাপতি এবং তাঁর সহযোগীরা। মূল মন্দিরে সফলভাবে ধ্বজা লাগানোর মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন একঝাঁক মন্ত্রী, সাংসদ ও অভ্যাগতরা। এই পর্ব সারা হলে তিনি চলে আসেন মহাযজ্ঞের স্থলে। তার আগে সৌজন্য বিনিময় করেন আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে। ঠিক সময় মেনে এরপর মহাযজ্ঞে অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সকাল থেকেই চলে মহাযজ্ঞের মন্ত্রপাঠ। দিনভর নানা উপচারে চলতে থাকে পূজার্চনা। মহাযজ্ঞে অংশ নিতে উপস্থিত হয়েছিলেন বহু বিশিষ্ট মানুষ। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল এই মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠানে।

Latest article