কুণাল ঘোষ, দিঘা: গর্বিত। মঙ্গলবার মহাযজ্ঞ শেষে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ধর্ম কারও একার নয়, ধর্ম সকলের। সব তীর্থস্থানে সকলেই যেতে পারেন। বিষয়টিকে হৃদয় দিয়ে, অন্তর দিয়ে ছুঁয়ে যেতে হয়। মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য, ধর্মের অধিকার কারও একার নয়। ধর্ম হল মানুষের আস্থা-ভরসা, ভালবাসা, বিশ্বাস। জগন্নাথধামের নির্মাণশৈলী নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এত সুন্দর আর্কিটেকচারের কাজ হয়েছে। এত সুন্দর ভাবে পুজো হচ্ছে। পুরী থেকে দ্বৈতাপতিরা টিম নিয়ে এসেছেন।
আরও পড়ুন-মন্ত্রী-তারকা থেকে আমজনতা, সৈকত শহর ফুটছে উন্মাদনায়
ইসকন দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেছে। টোটাল টিম আছে ওদের। আদ্যাপীঠের মুরালভাই এসেছেন। দক্ষিণেশ্বর থেকে কুশলরা এসেছেন। বেলুড় মঠ-কামারপুকুর থেকে সনাতন ধর্মের লোকেরা এসেছেন। সব ধর্মের, সব বর্ণের মানুষ এসেছেন। জয়রামবাটি থেকে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, যতটা সম্ভব অন্তর দিয়ে, হৃদয় দিয়ে আমরা চেষ্টা করেছি। এরপরই তিনি বলেন, ধর্ম মুখে প্রচার করে হয় না। ধর্ম হৃদয় দিয়ে ছুঁয়ে যায়, ধর্ম হল মানুষের আস্থা-ভরসা, বিশ্বাস এবং ভালবাসা। এদিন পুজোর সময় পুরোহিত মুখ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেন, আপনার গোত্র শাণ্ডিল্য তো? মুখ্যমন্ত্রী উত্তর দেন, আমার গোত্র মা-মাটি-মানুষও। চিরকাল আমি মা-মাটি-মানুষ গোত্রে পুজো করি। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, মা-মাটি-মানুষ গোত্রে পুজো হয়েছে। মা-মাটি-মানুষ ভাল থাকলে, আমি ভাল থাকি। সবার হয়েই এটা অর্পণ করা হল। উদ্বোধনের অনুষ্ঠানসূচি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বুধবার বেলা আড়াইটা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে। তিনটের সময় দ্বারোদ্ঘাটন হবে। তারপরে জনতার জন্য খুলে দেওয়া হবে জগন্নাথধাম। আজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।
বুধবার দ্বারোদ্ঘাটনের আগে এদিন মন্দিরের ধ্বজা উঠল। যতক্ষণ ধ্বজা লাগানোর কাজ চলল, ততক্ষণ হাতজোড় করে মুখ্যমন্ত্রী ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন সকলকে সঙ্গে নিয়ে। মন্দিরচত্বরে ঢুকেই পুণ্যকলস থেকে পবিত্র জল দেন (পূর্ণাহুতি) সঙ্গে ছিলেন ইসকনের রাধারমণ দাস ও তাঁর সঙ্গীরা। ছিলেন পুরীর দ্বৈতাপতি এবং তাঁর সহযোগীরা। মূল মন্দিরে সফলভাবে ধ্বজা লাগানোর মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন একঝাঁক মন্ত্রী, সাংসদ ও অভ্যাগতরা। এই পর্ব সারা হলে তিনি চলে আসেন মহাযজ্ঞের স্থলে। তার আগে সৌজন্য বিনিময় করেন আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে। ঠিক সময় মেনে এরপর মহাযজ্ঞে অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সকাল থেকেই চলে মহাযজ্ঞের মন্ত্রপাঠ। দিনভর নানা উপচারে চলতে থাকে পূজার্চনা। মহাযজ্ঞে অংশ নিতে উপস্থিত হয়েছিলেন বহু বিশিষ্ট মানুষ। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল এই মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠানে।