প্রতিবেদন : মোদির শাসনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে কার্যত কার্ফু চলছে। কোনও স্বাধীনতা নেই। ভারতীয় গণমাধ্যমে যা জরুরি অবস্থার নামান্তর বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি এক বিশ্ব সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিশ্ব সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে মোদির ভারতের স্থান ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৫০-এরও উপরে।
সম্প্রতি মিডিয়া ওয়াচডগ রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স ২০২৫ সালের বিশ্ব সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা সূচক ঘোষণা করেছে। সেই তালিকায় ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারত রয়েছে ১৫১তম স্থানে। রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স বা আরএসএফ ভারতীয় গণমাধ্যমের বর্তমান অবস্থাকে আনুষ্ঠানিক জরুরি অবস্থা বলে অভিহিত করেছে। বলেছে, ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশগুলির মধ্যে একটি।
আরও পড়ুন: বন্ধ হবে রুফটপ ক্যাফে-রেস্তোরাঁ পুর-নির্দেশের পরই শুরু অভিযান
আরএসএফের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাঁর দল বিজেপি সংবাদমাধ্যমের উপর আধিপত্য বিস্তার করেছে। ২০০২ সাল থেকে বিশ্ব প্রেস স্বাধীনতা সূচক প্রকাশ করে আসছে আরএসএফ। বিগত ১০ বছরে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে ভারত বিপজ্জনক অবস্থানে পৌঁছে গিয়েছে। বর্তমানে ভারতের এমনই করুণ অবস্থা যে, তারা প্রতিবেশী বাংলাদেশের থেকেও দুই ধাপ পিছিয়ে। আরএসএফ সুস্পষ্টভাবে তাদের ওয়েবসাইটে লিখেছে, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হিংসা, সংবাদমাধ্যমকে কেন্দ্রীভূত করার চেষ্টার ফলে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ভারতে সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা সংকটে পড়েছে। ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসনাধীনে দেশে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ হয়েছে। প্রতি বছর গড়ে দুই থেকে তিনজন সাংবাদিক নিহত হন। ফলে ভারত এখন বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশগুলির মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। সরকারের সমালোচনা করলেই হয়রানি, ভয় দেখানো, হুমকি এবং শারীরিক নিগ্রহের পাশাপাশি ফৌজদারি মামলা ও নির্বিচারে গ্রেফতারের শিকার হতে হয় এই বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশে।
জম্মু ও কাশ্মীরে সাংবাদিকদের জন্য পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। সেখানে সাংবাদিকরা প্রায়শই পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর হাতে হয়রানির শিকার হন। সাংবাদিকদের আটক করেও রাখা হয়।
আরএসএফ জানিয়েছে, ২০টিরও বেশি ভাষায় প্রায় ১,৪০,০০০ প্রকাশনা রয়েছে ভারতে যার মধ্যে প্রায় ২০,০০০ দৈনিক সংবাদপত্র। তাদের সম্মিলিত প্রচার সংখ্যা ৩৯০ মিলিয়নেরও বেশি। নতুন প্রজন্ম অনলাইন সংবাদ পছন্দ করে। বর্তমানে সংবাদের প্রধান উৎস হিসেবে এটি সংবাদপত্র বা প্রিন্ট মিডিয়াকে ছাড়িয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: নয়া স্ট্রাইক ভারতের! পাকিস্তান থেকে সমস্ত আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা