প্রতিবেদন : পরিকল্পিত চিত্রনাট্যে বহিরাগতদের দিয়ে পরিকল্পনা করেই অশান্তি করা হয়েছে মুর্শিদাবাদে। দু-তিনজন ধর্মীয় নেতা সেজে বিধর্মী কথা বলছে। তারাই উসকানি দিয়েছে। সোমবার, বহরমপুর পৌঁছে মুর্শিদাবাদের অশান্তি নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, হিংসার যে ঘটনা ঘটেছে তা পূর্বপরিকল্পিত। বাইরে থেকে লোক এনে ধর্মের নামে কেউ কেউ ভুল কথা প্রচার করছে। তার জন্য মানুষ প্ররোচিত হয়েছে। সেই কারণেই এমন ঘটনা। মুর্শিদাবাদের প্রকৃত তথ্য তাঁর কাছে আছে। দ্রুত সত্য সামনে আসবে। স্পষ্ট হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর। আজ, মঙ্গলবার অশান্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। এছাড়া সুতিতে তাঁর সভা রয়েছে। এই সভা থেকে কী ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী তা শুনতে মুখিয়ে রয়েছে মুর্শিদাবাদ। নজর থাকবে বাংলারও।
এদিন অশান্তির প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ধর্মীয় জিগির তুলে কয়েকজন ধর্মীয় নেতা সেজেছে। এরা পালে বাঘ না পড়লেও বাঘ, বাঘ বলে চিৎকার করে রাজনৈতিক সুবিধা নেয়। এরা আসলে গৃহশত্রু। সাফ কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যদিও এরপরই তিনি বলেন, আমি সকলকে মিত্র ভাবি। আমার কোনও শত্রু নেই। কিন্তু অশান্তি যারা করে তাদের আমরা মিত্র ভাবি না। মনে রাখতে হবে, মুর্শিদাবাদের ইতিহাস আছে। এটা বাংলার রাজধানী ছিল। মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, গন্ডগোল কারা করিয়েছে, সবাই জানে। এরা নাকি ধর্মের নেতা! মুর্শিদাবাদে কী হয়েছিল আমার কাছে প্রমাণ রয়েছে। তবে আরও বেশ কিছু প্রমাণ হাতে আসবে। তারপর সব সকলের সামনে তুলে ধরব।
এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য একাধিক রাজ্যে নানা ঘটনা ঘটে। মণিপুর, রাজস্থান, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রের কোনও প্রতিনিধি যায়নি। তবে বাংলায় কিছু হলেই কেন একদিনের মধ্যেই সব চলে আসে? প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর অভিযোগ, একেবার পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ধর্মের নামে কিছু বহিরাগত ভুল কথা ছড়িয়েছে। আর কিছু লোক প্ররোচিত হওয়ার ফলে এক গোষ্ঠীর সঙ্গে অন্য গোষ্ঠীর গন্ডগোল লেগেছে। বাংলার মানুষ এসব বরদাস্ত করবে না— সাফ কথা মুখ্যমন্ত্রীর।
মুর্শিদাবাদ সফরে গিয়ে জাফরাবাদে নিহত হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের পরিবার-সহ অন্য ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু বিজেপি কার্যত তাঁদের অপহরণ করে জেলা থেকে কলকাতায় নিয়ে গিয়েছে। এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি ভেবেছিলাম ওদের সঙ্গে কথা বলব কিন্তু তা তো হচ্ছে না। বিজেপি ওদের সরিয়ে নিয়েছে। এটা কি অপহরণের ঘটনা নয়? আমরা এসে ক্ষতিপূরণেরই টাকা দিতাম। তার আগেই তুলে নিয়ে চলে যাওয়া হল। এর পরেই তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন এই লুকোচুরি? কী আড়াল করার চেষ্টা? এরপরেই তিনি স্পষ্ট জানান, সাম্প্রদায়িক অশান্তি যারা করে, আমরা তাদের ঘৃণা করি।
আরও পড়ুন: অপেক্ষা তো অনেক হল, কিন্তু পাল্টা মারেই কি মিটবে সব!