প্রতিবেদন : কাউন্সিলর থেকে বিধায়ক হয়েছেন। সুজন চক্রবর্তীকে হারিয়ে যাদবপুর কেন্দ্রটি পুনরুদ্ধার করেছেন। আসন্ন কলকাতা পুরভোটে (KMC Election) দলের (TMC) টিকিটে প্রার্থী তিনি। তিনি দেবব্রত মজুমদার
তিনি যাদবপুর (Jadavpur) এলাকায় সকলের প্রিয় মলয় বলেই পরিচিত। আর আগে ৯৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত হয়েছেন দেবব্রত মজুমদার। তবে তাঁর ওয়ার্ড মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় এবার সেখানে ঘাসফুলের প্রার্থী হয়েছেন বাম আমলের মন্ত্রী তথা RSP নেতা প্রয়াত ক্ষিতি গোস্বামীর নিয়ে বসুন্ধরা। আর দেবব্রত মজুমদার লড়ছেন পাশের ওয়ার্ড ৯৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। এই ওয়ার্ড অবশ্য যাদবপুর নয় টালিগঞ্জ বিধানসভার অন্তর্গত।তাই এলাকায় কাজের মানুষ, কাছের মানুষ বলে পরিচিত মলয়ের ওয়ার্ড বদলালেও জয়ের ধারা বদলাবে বলে দাবি করতে পারছেন না তাঁর চরম সমালোচকও। শুধু নিজের ওয়ার্ড নয়, তিনি বিদায়ী পুরবোর্ডের প্রশাসক মণ্ডলীতে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার সুবাদে এবং বিধায়ক হয়ে যাওয়ার পর অন্য ওয়ার্ডেও দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে যেতে হচ্ছে দেবব্রত মজুমদারকে। প্রচারের ফাঁকে সামলাতে হচ্ছে বিধায়কের কাজও। নির্বাচনী বিধি লাগু থাকায় বিদায়ী কাউন্সিলাররা এখন সার্টিফিকেট দিতে পারবেন না। তাই বিধায়ক হিসেবেই সেই সার্টিফিকেট দিতে হচ্ছে মানুষকে। দেবব্রত মজুমদার কলকাতা পুরসভার বিদায়ী বোর্ডে জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর হাত ধরেই পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ ব্যবস্থাপনার আমূল পরিবর্তন এসেছে তিলোত্তমার বুকে। আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় ঝাঁ-চকচকে হয়েছে মহানগরী।
আরও পড়ুন : পুরভোটের প্রচারে এবার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের সঙ্গে নামতে চলেছেন একঝাঁক টেলিতারকা
বিদায়ী বোর্ডে নিজের দফতরের কাজ নিয়ে মলয় মজুমদার জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই কলকাতায় ১২০টি কম্প্যাক্টর স্টেশন তৈরি হয়েছে। আরও কয়েকটির পরিকল্পনা রয়েছে। এখন অনেক জায়গায় ব্যাটারিচালিত গাড়ি জঞ্জাল সংগ্রহ করছে। ওই গাড়ির সংখ্যা প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হবে। তবে এবার শহরের বুকে জঞ্জাল পৃথকীকরণে জোর দিতে চান তিনি। কলকাতায় ২৭টি ওয়ার্ডে এই ব্যবস্থা চালু রয়েছে। অর্থাৎ পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য সংগ্রহ করার সময়ই পৃথক করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। তারপর অপচনশীল পদার্থকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলাই লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই ধাপায় বর্জ্য থেকে সার উৎপাদন হচ্ছে। প্লাস্টিক-বর্জ্যকে কাজে লাগিয়ে দরজা-জানালা, টেবিল-চেয়ার সহ বিভিন্ন জিনিস তৈরি হচ্ছে এখন। বিভিন্ন ধরনের জঞ্জালকে পৃথক পৃথকভাবে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে কাজে লাগানো হচ্ছে। এর ফলে ধাপায় আর জঞ্জালের স্তূপ থাকবে না। এবার দায়িত্ব এলে শহরবাসীকে ভ্যাটমুক্ত কলকাতা উপহার দেওয়ার অগ্রাধিকার দিতে চান দেবব্রত মজুমদার।
গোটা কলকাতা শহরকে জঞ্জালমুক্ত করার পাশাপাশি নিজের ওয়ার্ডে গতকয়েক বছরে অনেক উন্নয়ন ঘটিয়েছেন দেবব্রত মজুমদার। একটি সময়ে ওয়ার্ডে ওপেন ড্রেন ছিল। এখন সবই ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালা। প্রতিটি বাড়িতে পুরসভার পানীয় জল পৌঁছেছে। ওয়ার্ডের সিংহভাগ পুকুর সংরক্ষণ থেকে পার্কের করে সৌন্দর্যায়ন করেছেন। রাজ্য সরকারের সামাজিক প্রকল্প থেকে শুরু করে করোনা ভ্যাকসিন ওয়ার্ডের প্রতিটি মানুষ পেয়েছেন। আগামিদিনে ফের মানুষের আশীর্বাদে নির্বাচিত হলে এলাকার বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে তাঁদের স্বনির্ভর হিসেবে গড়ে ঢুকতে চান দেবব্রত মজুমদার। যেখানে ওয়ার্ডের মধ্যেই ডায়াগনস্টিক প্যাথলজি সেন্টারের মতো কিছু ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে চান তিনি। এলাকায় অনেক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের বাস। ইচ্ছা থাকলেও তাঁরা তাঁদের বাড়ির ছেলে-মেয়েদের ভালো স্কুলে পড়াতে পারেন না। দেবব্রত মজুমদার জানাচ্ছেন, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক স্তরে এলাকায় একটি স্কুল তৈরি করতে চান তিনি। যেখানে বেসরকারি স্কুলগুলোর মতোই সমস্ত পরিকাঠামো থাকবে। যেখানে গরিব মানুষের ছেলে মেয়েরাও পড়াশোনার সুযোগ পাবেন।