প্রতিবেদন : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার ওষুধের আন্তর্জাতিক দামে ‘ন্যায়বিচার’ প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়েছেন। তাঁর ঘোষণা— আমেরিকা আর বেশি দামে ওষুধ কিনবে না। যে দামে বিশ্বের সবচেয়ে সস্তা দেশ ওষুধ কিনছে, আমরা সেই দামই দেব। ট্রাম্প এর নাম দিয়েছেন ‘মোস্ট ফেভার্ড নেশন’ নীতি। শুনতে ভাল লাগলেও, বাস্তবে এই নীতির চাপ গিয়ে পড়বে ভারতের মতো ওষুধ-উৎপাদনকারী উন্নয়নশীল দেশগুলির ওপর। কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি ভারতের দামে ওষুধ কিনতে চায়, তবে ফার্মা কোম্পানিগুলি তাদের লাভ বজায় রাখতে ভারতেই দাম বাড়ানোর চেষ্টা করবে। ফলে আমেরিকায় দাম কমাতে গিয়ে ভারতের মতো দেশে সাধারণ মানুষের ওষুধ আরও মহার্ঘ হবে। বহুক্ষেত্রে চিকিৎসা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে। যদিও ট্রাম্পের দাবি, এই নীতিতে ওষুধের দাম ৩০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমবে। একইসঙ্গে খাদ্য, জ্বালানি, নিত্যপণ্যের দামও কমবে! মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, নতুন নীতি কার্যকর হলে কোনও মুদ্রাস্ফীতি থাকবে না। তবে কীভাবে? সে প্রশ্নের উত্তর অবশ্য এড়িয়ে গিয়েছেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুন-পুনর্বাসন ছাড়াই রেলের উচ্ছেদ নোটিশ, ৫০০ পরিবারের পাশে তৃণমূল নেতৃত্ব
প্রশ্ন উঠছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি বিশ্ববাজারের দাম নিজের মতো করে পাল্টে দিতে পারে? নাকি এই নীতি বিশ্বজুড়ে ওষুধের দামে নতুন করে অস্থিরতার জন্ম দেবে? এতদিন ওষুধ কোম্পানিগুলি যেসব দেশে সস্তায় ওষুধ বিক্রি করত, যেমন ভারত, ব্রাজিল বা দক্ষিণ আফ্রিকা—তারা কি এখন সেই দেশগুলিতেও দাম বাড়াতে বাধ্য হবে শুধু আমেরিকাকে সস্তায় ওষুধ দিতে? ট্রাম্প বলছেন, এবার আমেরিকাকে ন্যায়সঙ্গতভাবে দাম দিতে হবে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কথিত ন্যায়ের ভার যে উন্নয়নশীল দেশের রোগীদের ঘাড়ে গিয়ে পড়তে পারে, সেটি হয়তো তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির খসড়ায় লেখা ছিল না। এই নীতির ফলাফল কী হবে, তা সময়ই বলবে। তবে আমেরিকার নতুন ওষুধ নীতির জেরে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় আরও বৈষম্য তৈরি হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।