বেঙ্গালুরু, ১৬ মে : আইপিএল ফিরছে আজ। কয়েক দিনের বিরতির পর। কিন্তু এই কয়েক দিনে এত
কিছু ঘটেছে যে, কোটিপতি লিগের মেজাজটাই যেন হারিয়ে গিয়েছে!
অবশ্যই আমজনতা এখনও বিরাট আফসোসের মধ্যে। সাদা জার্সিতে আর বিরাট খেলবেন না, এটা মানতে পারছেন না ভক্তরা। কেকেআরের তরফে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছিল। তাতে দেখা যাচ্ছে অজিঙ্ক রাহানে বিরাটকে জড়িয়ে ধরেছেন। শনিবার চিন্নাস্বামীতে এই রাহানে নাইটদের নিয়ে নামবেন আরসিবির বিরুদ্ধে। কিন্তু বিরাট আবেগ দুনিয়া জুড়ে এমনভাবে জাঁকিয়ে বসেছে যে, বাইশ গজের প্রতিদ্বন্দ্বিতা আপাতত গুরুত্ব হারিয়েছে।
আরও পড়ুন-অরণ্যসুন্দরী ঝাড়গ্রাম এবার হয়ে উঠবে আলোকময়, পথবাতি প্রকল্পে বরাদ্দ ১ কোটি ৪০ লক্ষ
নাইটদের জন্য অবশ্য আরসিবি ম্যাচের সাংঘাতিক কোনও গুরুত্ব নেই। এই ম্যাচ ও তার পরের সানরাইজার্স ম্যাচ বড় ব্যবধানে জিতে চুপচাপ বসে থাকা ছাড়া। যদি দিল্লি, মুম্বই পা ফস্কায়। দিল্লি আবার মিচেল স্টার্ককে বাকি ম্যাচে পাচ্ছে না। নেই ট্রিস্টান স্টাবস, ম্যাকগুর্কও। এটা অক্ষর প্যাটেলদের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। চাপের সময়, বিশেষ করে ডেথ ওভারে স্টার্কের মতো অভিজ্ঞ কাউকে দরকার ছিল তাদের। কিন্তু বিশ্ব টেস্ট ফাইনালের আগে বাঁহাতি ফাস্ট বোলার এখন বিশ্রাম নেবেন।
আসলে মাঝের কদিন আইপিএল বন্ধ থাকায় সব দলই কিছু না কিছু হারিয়েছে। নাইটরা যেমন পাচ্ছে না মঈন আলি ও রভমান পাওয়েলকে। প্রথম জনের ক্ষেত্রে পারিবারিক অসুস্থতা ও দ্বিতীয় জনের ক্ষেত্রে চোট সমস্যা। তবে নাইটদের জন্য স্বস্তি এটাই, মঈন বা রভমান কেউ প্রথম দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন না। চিন্নাস্বামীতে বল যতটা সিম করে, ততটা ঘোরে না। তাই মঈন থাকলেও যে খেলতেন, সেই গ্যারান্টি নেই।
তবে কেকেআরের জন্য একটা ভরসার জায়গা হল মূল দলের সবাই আছেন। রাসেল, নারিন ফিরে গেলেও আবার এসেছেন। নাইট বোলিং নারিনকে ছাড়া চলে না। আর বরুণ দলের প্র্যাকটিস শুরুর আগেই চেন্নাইয়ে সেটা শুরু করে দিয়েছিলেন। দুই স্পিনারের জন্য একটা চাপ তাও আছে। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বেশ ছোট। স্পিনাররা এখানে মার খেয়ে যেতে পারেন। অতএব, হর্ষিত, বৈভবকে দায়িত্ব নিতে হবে। ইমপ্যাক্ট সাব ব্যাপারটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে।
আরসিবি হয়তো স্বস্তি পেয়েছে অধিনায়ক রজত পাতিদারকে নেটে ব্যাট করতে দেখে। চোটের জন্য বাকি আইপিএলেই যিনি অনিশ্চিত ছিলেন। তবে ঘুরেফিরে সেই একজনের দিকেই সবার নজর। বিরাটকে আজ মাঠে নামতে দেখে জনতা উদ্বেল হবে। আবেগ উথলে উঠবে স্টেডিয়াম জুড়ে। আর এই আবেগ শুধু আরসিবি ভক্তদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে এমন নয়। কোহলিয়ানায় মজেনি এমন ক্রিকেটপ্রেমী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
হিসেব বলছে ১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবলে দ্বিতীয় স্থানে আরসিবি। সমসংখ্যক ম্যাচে গুজরাট টাইটানসের পয়েন্টও তাই। কিন্তু তারা রান রেটে এগিয়ে। ১১ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে পাঞ্জাব কিংস। ১২ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে কেকেআর বড়জোর ১৫ পয়েন্টে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রথম তিন দলকে কার্যত ধরার জায়গায় নেই। নাইটদের চোখ এখন ১২ ম্যাচে ১৪ পয়েন্টে থাকা মুম্বই ও ১১ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে থাকা মুম্বই ও দিল্লির দিকে। তবে খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে প্লে অফ এখন দূরের ভাবনা নাইটদের। এক্ষেত্রে আবেগের আগে অঙ্কই গুরুত্ব পাচ্ছে।
এদিকে, বেঙ্গালুরুতে শনিবার বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আগের দিনও এখানে ভাল বৃষ্টি হয়েছে। এখন খেলা না হলে আর সিবির বিশেষ ক্ষতি হবে না। কিন্তু কেকেআরের টুর্নামেন্ট থেকে ছুটি হয়ে যাবে।