বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা বন্ধ রেখে বাংলাকে বঞ্চিত করছে কেন্দ্র। কিন্তু তা সত্ত্বে দেশের মধ্যে এক নম্বরে রাজ্য। উত্তরবঙ্গে উন্নয়নের জোয়ার। আগামীতে দেশকে পথ দেখাবে বাংলা। মঙ্গলবার, শিলিগুড়ি সংলগ্ন ডাবগ্রামের ভিডিওকন গ্রাউন্ডে আয়োজিত পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান থেকে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে ফের গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বিজেপি নাম না করে তিনি বলেন, ওরা বলে কিন্তু করে না। আর আমরা যা বলি তাই করি। মুখ্যমন্ত্রী কথায়, কেন্দ্রের বঞ্চনা সত্ত্বেও উত্তরবঙ্গে উন্নয়নের জোয়ার। এদিন একাধিক প্রকল্পের সূচনা ও উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। জল্পেশ মন্দিরে স্কাইওয়াক তৈরি, মর্গান হাউসের সংস্কারের ঘোষণা করেন।
এদিনের মঞ্চ থেকে বিরোধীদের কুৎসার জবাবে ধুয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদাহরণ তুলে উন্নয়নের খতিয়ান দেন তিনি। বলেন, “আগে উত্তরবঙ্গে কোনও উন্নয়ন হয়নি। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর একাধিক উন্নয়ন মূলক কাজ করা হয়েছে। আজ সবদিক থেকে এগিয়ে চলেছে উত্তরবঙ্গ।” এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে একাধিক প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, শিল্পের পাশাপাশি উত্তরের পর্যটনকে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হবে। কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলায় ৪ বছর ধরে টাকা দিচ্ছ না। পাল্টা প্রোগ্রাম তৈরি করে দেখিয়ে দিয়েছি। মানুষকে বঞ্চিত করা ঠিক নয়।”
নাম না করে বিজেপিকে ধুয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ডবল ইঞ্জিন সরকারের উদাহরণ টেনে বলেন, “অনেকে অনেক কথা বলে, এত দেবো অত দেবো। এতদিন দাওনি কেন? নির্বাচনের আগে বলেছিল, এত দেবো অত দেবো মধ্যপ্রদেশ-মহারাষ্ট্র-রাজস্থান কোথাও দেয়নি। আমরা যা বলি তাই করি। আমরা চারটে কথা বলেছিলাম। খাদ্য সাথী, দুয়ারে রেশন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্টুডেন্টদের জন্য ১০ লক্ষ টাকার জন্য মধ্যে স্মার্ট কার্ড- সব করে দিয়েছি। যখন যা বলেছি করে দেখিয়েছি। আমি কথা দিলে কথা থেকে সরে যাই না কারণ এটাই আমার বিশ্বাসযোগ্যতা। এটাই আমার কাজের সবথেকে বড় যোগ্যতা। আমি অন্তত চেষ্টা করি। চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখি না।”
আরও পড়ুন- প্রয়াত পদ্মভূষণপ্রাপ্ত ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী জয়ন্ত নারলিকর
মুখ্যমন্ত্রী জানান, “কেন্দ্রের কাছ থেকে আমরা ১লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাই। সেই টাকা তো দেয় না, উল্টে জিএসটির নাম করে সব নিয়ে যায়, সেই টাকাটাও আমরা ঠিকমতো পাই না। আবার শিল্পপতিদের কাছ থেকে কর বাবদ অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে।”
জিএসটি-টোলট্যাক্স আদায়ে হয়রানির অভিযোগ নিয়েও সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ করেন, “শিল্পপতিদের কাছ থেকে মিউটেশন ফি নেওয়া হচ্ছে, রাস্তায় গাড়ি চললেও ট্যাক্স নেওয়া হয়- এগুলো আর নেওয়া যাবে না। আমরা বরদাস্ত করব না।” রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “জিএসটির পর ফের নতুন ট্যাক্স নিতে পারবে না কেন্দ্র। এভাবে শিল্পপতিদের হয়রানি রাজ্য বরদাস্ত করবে না।”
স্যোশাল মিডিয়ায় কুৎসার বিরোধিতা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “যারা কুৎসা করে করতে দিন যারা অপপ্রচার করে করতে দিন। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এ আজকাল ফেক ব্যবসা চলছে। বিষাক্ত মনোভাব নিয়ে শুধু টাকা কামানোর উদ্দেশ্যে যারা ভাল কাজ করে তাদের প্রতি আমার সমর্থন থাকবে। যারা কুৎসা করে ইচ্ছা করে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে মানুষের বিভেদ লাগানোর চেষ্টা করে আমি তাদের সমর্থন করি না।”