গোটা বিশ্বে কোভিড ছড়িয়ে পড়ার সময় দায় পড়েছিল চিনের উপর। চিনের গবেষণাগারে তৈরি ভাইরাস বিশ্বে এই মারণ রোগ ছড়িয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছিল মূলত মার্কিন গবেষণা ও সংবাদ মাধ্যমে। এবার আরও একটি ছত্রাক ছড়ানোর দায় চাপানো হল চিনের গবেষক পড়ুয়াদের উপর। সম্প্রতি মার্কিন বিশ্ববিদ্য়ালয়গুলির উপর আর্থিক অনুদান নিয়ে কড়া নজরদারি শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। সেই পদক্ষেপে গবেষণারত বিদেশি পড়ুয়াদের উপর বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা এফবিআই। সেই সূত্রেই এবার চিনের দুই গবেষক পড়ুয়াকে গ্রেফতার (2 Chinese Students) করা হল এফবিআই-এর তরফে। অভিযোগ তারা যে ছত্রাক নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছিল, তা মার্কিন শস্যের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে মানুষের শরীরে মারাত্মক মারণ রোগ ছড়াতে সক্ষম।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে জুনইয়ং লিউ নামে এক চিনা গবেষক একটি লাল ছত্রাক নিয়ে আমেরিকায় প্রবেশ করেছিল। ডেট্রয়েট বিমান বন্দরে তাকে চিহ্নিত করা হলেও সেই সময়ে এই ঘটনা নিয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি এফবিআই। এবার মিচিগান বিশ্ববিদ্য়ালয়ের আরেক চিনা গবেষক ইয়ানকুইন জিয়ান সেই একই লাল ছত্রাক নিয়ে কাজ করতে শুরু করায় সজাগ হয় এফবিআই। জানা যায় এই ইয়ানকুইন জিয়ান আবার জুনইয়ং লিউ-এর বান্ধবী। একই ছত্রাকের উপর তারা গবেষণা করছে। লিউ বর্তমানে চিনের বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ে গবেষণা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন-জি৭ বৈঠকের আগেই টরন্টোতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত ১, আহত ৫
এফবিআই ডিরেক্টর কাশ প্যাটেল দাবি করেন, এই ছত্রাকের নাম ফুসারিয়াম গ্রামিনিরাম। এই ছত্রাক হেড ব্লাইট নামে একটি রোগ ছড়ায়। সাধারণত ভুট্টা, গম, বার্লি বা চালে এই ছত্রাক ছড়ায়। সেই উদ্ভিদ থেকে প্রাণী ও মানুষের মধ্যে মারণ রোগ সংক্রামিত হয়। উভয় ক্ষেত্রেই বমি, লিভার নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে বিকৃত সন্তান উৎপাদনের মতো রোগের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এফবিআই-এর তদন্তে উঠে এসেছে, জিয়ান চিনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি আস্থাশীল। অর্থাৎ এফবিআই-এর তদন্তে চিন থেকে আমেরিকায় কৃষিক্ষেত্রে রোগ ছড়ানোর এজেন্ট হিসাবে এই দুই গবেষক মার্কিন মুলুকে যায় বলেই অভিযোগ।
মার্কিন সূত্রে দাবি, চিনা যুবক লিউ-এর মোবাইল থেকে যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে প্ল্যান্ট-প্যাথোজেন যুদ্ধ প্রস্তুতি ও আবহাওয়া পরিবর্তনের বিষয়ে কাজ করে এই যুবক। সেখানেই এফবিআই ডিরেক্টর কাশ প্য়াটেলের দাবি, বারবার এই কারণেই বিদেশ থেকে গবেষণা করতে আসা পড়ুয়াদের উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পড়ুয়ার ছদ্মবেশে অনুপ্রবেশ করছে সেই দেশেরই খাদ্য সরবরাহে হামলাকারীরা।