প্রতিবেদন : নির্লজ্জ স্বৈরাচারী পদক্ষেপ মোদি সরকারের। গণতান্ত্রিক রীতিনীতির ধার না ধেরে বিরোধীদের সংসদের বিশেষ অধিবেশন (parliament session) ডাকার দাবি খারিজ করে দিল কেন্দ্র। বিরোধীরা একজোট হয়ে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন মঙ্গলবারই। ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই বুধবারই সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশনের দিন ঘোষণা করে দিল কেন্দ্র। ২১ জুলাই থেকে ১২ অগাস্ট পর্যন্ত চলবে অধিবেশন। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবস, এটা জানা সত্ত্বেও ওইদিন থেকেই শুরু করা হচ্ছে সংসদের অধিবেশন। কেন্দ্রের এই একপেশে সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কটাক্ষ করা হয়েছে, পার্লামেন্ট-ফোবিয়ায় ভুগছে মোদি সরকার। কেন্দ্রকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এক্স হ্যান্ডেলে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁর মন্তব্য, বিশেষ অধিবেশন ডাকতে ভয় পাচ্ছে মোদি সরকার। সেইজন্য সংসদ থেকে পালাতে চাইছে। তাই একমাস আগে থাকতেই তাড়াহুড়ো করে বাদল অধিবেশনের দিন ঘোষণা করে দিল কেন্দ্র। কেন ২১শে জুলাই শুরু করা হচ্ছে অধিবেশন? সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে বর্ষাকালীন অধিবেশনের দিন স্থির করা হল। কারণ, ওই দিন তৃণমূল কংগ্রেসের একটি বিশেষ দিন। ২১শে জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবসের সমাবেশ। সব জেনে-বুঝেই ওই দিন সংসদের অধিবেশন শুরু করছে মোদি সরকার। শুধু তাই নয়, সাম্প্রতিককালে মোদি সরকারের জামানায় সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশনের দিনক্ষণ এমন করে দেড়মাস আগে ঘোষণা করতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করেছে তৃণমূল।এদিন সংসদের বিশেষ অধিবেশনের দাবি খারিজ করার জন্য মোদি সরকারকে এক হাত নিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি প্রথম জানিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। কারণ, পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ড, অপারেশন সিঁদুর এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতি— সমস্ত বিষয়টা সংসদকে জানানো জরুরি। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার, সংসদের বিশেষ অধিবেশন না ডেকে বাদল অধিবেশন এমন দিনে শুরু করা হচ্ছে, যে ২১ জুলাই দিনটিতে তৃণমূলের শহিদ তর্পণ। ডেরেকের কথায়, আসলে মোদি সরকার সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকতে ভয় পাচ্ছে। মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে ১৬টি বিরোধী দল পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ড এবং অপারেশন সিঁদুরের পরবর্তী পাহেলগাও পুঞ্চ, উরি রাজৌরির পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনার দাবিতে সংসদের বিশেষ অধিবেশনের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে চিঠি দিয়েছে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্রের ঘোষণা। ইতিমধ্যেই তৃণমূলের পাশাপাশি ইন্ডিয়া জোটের অন্যান্য দলগুলি মোদি সরকারের সমালোচনায় সুর চড়িয়েছে।
আরও পড়ুন- চূড়ান্ত গাফিলতি রেলের, বন্দে ভারতে ছটফট করতে করতে মৃত্যু হল যাত্রীর