প্রতিবেদন : বাংলার ঘরে ঘরে জগন্নাথদেবের প্রসাদ বিতরণের কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথামতোই সোমবার দিঘার জগন্নাথধামে প্রভু জগন্নাথদেবকে নিবেদন করা হল প্রায় ৩০০ কেজি খোয়া ক্ষীর। এরপর এদিনই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিতরণ করে দেওয়া হল সেই সমস্ত ক্ষীর। তা দিয়ে তৈরি গজা ও প্যাঁড়া পৌঁছে দেওয়া হবে বাংলার প্রতিটি ঘরে। এরই মাঝে বুধবার প্রভু জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে দিঘার জগন্নাথধামে। প্রথম বছর মহাধুমধামে এই স্নানযাত্রার আয়োজন চলছে। প্রস্তুতি নিতে ইতিমধ্যে প্রায় ১০০ জন ইসকনের সন্ন্যাসী এসে পৌঁছেছেন দিঘার জগন্নাথধামে।
আরও পড়ুন-চলতি সপ্তাহেই সন্দেশখালিতে পাল্টা সভা তৃণমূল কংগ্রেসের
এদিন লালপাড় সাদাশাড়িতে জগন্নাথ মন্দিরে ৩০ জন মহিলা তিনশো কেজি ক্ষীর মাথায় নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন। খোল-করতালের মাধ্যমে নাম-গানে মুখরিত হয়ে ওঠে মন্দির চত্বর। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকদের উপস্থিতিতে পিতলের থালার ওপর ক্ষীর নিয়ে তা নিবেদন করা হয় জগন্নাথদেবকে। এরপর মা বিমলাকে সেই ক্ষীর অর্পণ করে জেলার প্রতিনিধিদের হাতে তা তুলে দেওয়া হয়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ২৫টি ব্লক ও পুরসভার প্রতিনিধিদের হাতেও সেই খোয়া ক্ষীরের নৈবেদ্য তুলে দেওয়া হয়। জেলাশাসকের নির্দেশ মতো প্রতিটি ব্লকে ব্লকে মিষ্টি তৈরির জন্য ময়রাদের নামের তালিকা তৈরি করেন বিডিওরা। তাঁদের দিয়েই তৈরি করা হবে গজা ও প্যাঁড়া।
এদিকে, ১২ জুন দিঘার জগন্নাথদেবের রথযাত্রা নিয়ে পুনরায় বৈঠকে বসবে জেলা প্রশাসন। বুধবার জগন্নাথ মন্দিরে অনুষ্ঠিত হবে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা। পিতলের কলসের মাধ্যমে প্রভু জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রাকে স্নান করানো হবে। ইসকনের তরফ থেকে স্নানযাত্রার জন্য মন্দিরের সামনে অবস্থিত খড়ের চালাগুলিকে ইতিমধ্যে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সেখানেই অনুষ্ঠিত হবে স্নানযাত্রা। এরপর আগামী ১৫ দিন বন্ধ থাকবে জগন্নাথদর্শন। ২৬ জুন জগন্নাথদেবের মন্দিরে অনুষ্ঠিত হবে নেত্র উৎসব। এরপর ২৭ জুন জগন্নাথদেব যাবেন প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে মাসির বাড়িতে। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে রথ নিয়ে বৈঠক করার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে বৃহস্পতিবার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলকাতা ইসকনের সহ-সভাপতি তথা মন্দির ট্রাস্টের সদস্য রাধারমণ দাস বলেন, আজ আমরা জগন্নাথদেবকে তিনশো কেজি খোয়া ক্ষীর অর্পণ করলাম। এদিনই বিভিন্ন জেলা এবং ব্লকে ব্লকে বিতরণ করা হয় ক্ষীর। জগন্নাথদেবের প্রসাদ পেতে ইতিমধ্যে বহু মানুষজন মন্দিরে ভিড় জমাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে বাড়িতে বাড়িতে প্রসাদ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন, তা সত্যিই আধ্যাত্মিকতার এক ভাল দিক।