ইজরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক পরিবেশকর্মী থুনবার্গ

Must read

প্রতিবেদন: আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সুইডিশ জলবায়ুকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ (Greta Thunberg) ও তাঁর সঙ্গীদের নৌকা মাদলীনকে গাজায় প্রবেশ করার আগেই আটকে দিয়েছে ইজরায়েলি বাহিনী। সোমবার ভোররাতে গাজার কিছুটা দূরে থুনবার্গদের নৌকাটিকে আটক করা হয়। পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয় নৌকায় থাকা সকলকে। খবর পাওয়া যায় এই ঘটনার পরপরই নিখোঁজ পরিবেশকর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে সামনে আসে গ্রেটা থুনবার্গের (Greta Thunberg) শেষ ভিডিয়োবার্তাটি। যেখানে সুইডেনের এই জলবায়ুকর্মীকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের অপহরণ করতে চলেছে ইজরায়েল। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া থুনবার্গের ভিডিয়োবার্তাটি প্রকাশ্যে এনেছে ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, যাদের মাধ্যমেই গাজায় ঢোকার পরিকল্পনা নেয় ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল। সংশ্লিষ্ট ভিডিওটিতে থুনবার্গকে বলতে শোনা যাচ্ছে, আমার নাম গ্রেটা থুনবার্গ। আমি সুইডেন থেকে এসেছি। আপনারা যদি এই ভিডিওটি দেখেন, তা হলে জানবেন যে ইজরায়েল এবং তাদের সমর্থকরা আমাদের আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটকে রেখেছে। আমাদের অপহরণ করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমি আমার বন্ধুবান্ধব, পরিবার এবং সহকর্মীদের অনুরোধ করছি তাঁরা যেন আমাকে এবং অন্যদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মুক্ত করতে সুইডেন সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করেন।

আরও পড়ুন-এবার মুক্তিযোদ্ধা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে গ্রেফতারির চক্রান্ত ইউনুস সরকারের

এদিকে ইজরায়েলের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইজরায়েলি কমান্ডোদের হাতে মাদলীন জাহাজ আটকের পর এর কর্মীদের ইজরায়েলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের প্রেরিত জাহাজটি গাজা থেকে প্রায় ১৬০ কিমি দূরে থাকাকালীন আটক করা হয়।
মানবাধিকার কর্মীদের অভিযোগ, এই জাহাজটি ক্ষুধার্ত প্যালেস্তানীয়দের জন্য মানবিক সহায়তা বহন করছিল। ১ জুন সিসিলি থেকে যাত্রা শুরু করা মাদলীন জাহাজের উদ্দেশ্য ছিল গাজায় খাদযসামগ্রী ও প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া। সেই জাহাজ আটকের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত যখন জলবায়ুকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ-সহ ১২ জন কর্মীকে ইজরায়েল আটক করেছে। ইজরায়েলের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক জলসীমায় একটি মানবিক সাহায্যকারী জাহাজের ওপর বলপ্রয়োগ, আন্তর্জাতিক আইন এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর নীতির লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হচ্ছে। লাগাতার সামরিক আক্রমণ ও দীর্ঘস্থায়ী অবরোধের ফলে গাজার জনগণ খাবার, পানীয় জল, চিকিৎসাসামগ্রী এবং অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজনীয়তার তীব্র সংকটের সম্মুখীন। মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলি বারবার এই অবরোধ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে, কারণ এটি গাজার অসামরিক জনগণের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। ইজরায়েলের আক্রমণে গাজায় ৫৪,০০০-এরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে খবর। বিশেষত নারী ও শিশুরা এই যুদ্ধের প্রধান শিকার। মাদলীন জাহাজ আটক এবং গ্রেটা থুনবার্গের মতো আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত কর্মীদের আটক করা আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। মানবাধিকার সংস্থা এবং বিভিন্ন দেশ ইজরায়েলের এই পদক্ষেপের নিন্দা করে অবিলম্বে আটকদের মুক্তি এবং গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য নিরাপদ পথ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে।

Latest article