প্রতিবেদন : একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে জিনগত বৈচিত্র্যের ঘাটতির ফলে ইনব্রিডিং বা অভ্যন্তরীণ প্রজননের সমস্যায় ভুগছে উত্তরবঙ্গের একশৃঙ্গ গন্ডাররা। এই দীর্ঘস্থায়ী সঙ্কট মেটাতে বিশেষজ্ঞদের শরণাপন্ন হল রাজ্যের বনদফতর। জলদাপাড়া ও গরুমারা জাতীয় উদ্যানের গন্ডারদের জিনগত বৈচিত্র্য ফেরাতে পাশে দাঁড়াচ্ছে ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়াও।
আরও পড়ুন-ফল ঘোষণা করলেন অসীম রায়, সচিব পদে দায়িত্ব নিলেন সৃঞ্জয়, সভাপতি-সহসভাপতি নির্বাচন সোমবার
উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ বিভাগের মুখ্য বনপাল ভাস্কর জে ভি জানিয়েছেন, বিজ্ঞানসম্মতভাবে পরিচালিত একটি প্রজনন পরিকল্পনা তৈরির লক্ষ্যে ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। রাইনো ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট-এর মাধ্যমে লক্ষ্য, গন্ডারদের মধ্যে জিনগত বৈচিত্র্য বাড়িয়ে প্রজাতির প্রজননক্ষমতা এবং স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করা। বনদফতরের অভিমত, দশকের পর দশক ধরে একই জিনগত বংশধারার গন্ডার জলদাপাড়া ও গরুমারায় একসঙ্গে বাস করায়, নতুন বৈচিত্র্যের জিন সংযোজন হয়নি। ফলস্বরূপ, তাদের মধ্যে প্রজনন সক্ষমতা কমে গিয়েছে, কমে গিয়েছে গড় আয়ুও। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে এই প্রজাতির আয়ু ৪০ বছরের বেশি হলেও, উত্তরবঙ্গের অনেক গন্ডার মাঝপথেই মারা যাচ্ছে।
তারপর পুরুষ গন্ডারের তুলনায় মহিলা গন্ডারের সংখ্যা অনেক বেশি। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে গরুমারা ও জলদাপাড়ার মধ্যে গন্ডার অদলবদলের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাতে ভিন্ন জিনের গন্ডারদের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে প্রজনন সম্ভব হয়। পাশাপাশি, ১৯৯০-এর দশকে যেমন অসম থেকে গন্ডার আনার চেষ্টা হয়েছিল, সেই প্রক্রিয়াও নতুন করে চালু করার আলোচনা চলছে। বর্তমানে জলদাপাড়ায় ৩৩১, গরুমারায় ৬১ গণ্ডার রয়েছে। তবু বৈচিত্র্যের অভাবে প্রজনন ও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে যাচ্ছে। বনদফতরের আশা, আন্তঃঅঞ্চল প্রজনন এবং ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার তত্ত্বাবধানে বিজ্ঞানভিত্তিক প্রকল্পের মাধ্যমে এই সঙ্কট কাটিয়ে তোলা সম্ভব হবে।