সোমনাথ বিশ্বাস : স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাতি। এমবিএ ছাত্র রানা এবার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী। নির্বাচিত পুর প্রতিনিধি না হয়েও রানা করোনাকালে লকডাউনের সময় কোভিড কিচেনের মাধ্যমে তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে দিনরাত মানুষের পাশে থেকেছেন। দাদু প্রয়াত দেবীপ্রসাদ দাস ঠাকুর ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী। বাবা প্রয়াত দুলাল দাস ঠাকুর আপাদমস্তক একজন রাজনীতিবিদ। ছিলেন বাম জমানায় তৃণমূল কংগ্রেসের পুরপিতা। মা দীপু দাস ঠাকুরও রাজনীতির সঙ্গে যোগাযোগ। তিনিও তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর ছিলেন। পুরসভা নির্বাচনে সেই বাড়িরই ছেলে অরিজিৎ দাস ঠাকুর এবার যাদবপুর বিধানসভার ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী। এলাকায় যিনি রানা নামেই পরিচিত ও জনপ্রিয়। মেধাবী ছাত্র রানা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি-কম অনার্স স্নাতক হওয়ার পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পাস করেছেন। তাঁর পড়াশোনার এখানেই শেষ নয়। লখনউয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট থেকে ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম করেছেন। এরপর দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থায় চাকরি করেছেন। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থায় চিফ ম্যানেজার পদে কর্মরত। রানা লকডাউনের সময় কোভিড কিচেনের মাধ্যমে তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে দিনরাত মানুষের পাশে থেকেছেন। আমফান বিপর্যয়ে মানুষের সাহায় হয়েছেন। পাশাপাশি রাজ্য সরকারি প্রকল্পগুলি যাতে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে যায় সেই ব্যবস্থাও করেছেন। এবার খুব স্বাভাবিকভাবেই দল তাঁকে প্রার্থী করেছে। বাম জমানার আঁস্তাকুড় থেকে বেরিয়ে বিগত ১০ বছরে রাজ্য সরকারের সৌজন্যে ওয়ার্ডে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। মানুষের আশীর্বাদে এবার অরিজিৎ দাস ঠাকুর ওরফে রানা যদি কাউন্সিলর নির্বাচিত হন, তাহলে সর্বাগ্রে তিনি মানুষের ঘরে ঘরে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার শপথ নিয়েছেন। ওয়ার্ডে মানুষের জলকষ্ট দূর করাই হবে তাঁর প্রথম চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য একটি কমিউনিটি হল করার পরিকল্পনা রয়েছে। ১০৬ নম্বর ওয়ার্ড ইএম বাইপাস সংলগ্ন। তাই সাঁপুইপাড়া থেকে অভিষিক্তা মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে সৌন্দর্যায়ন প্রাধান্য পাবে তাঁর কাজে। এ-ছাড়াও বাস স্ট্যান্ড থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নতিসাধন, বাজারের আধুনিকীকরণ থেকে ছোট গলিতে চেকার টাইলস বসানোর কাজে হাত দেবেন রানা। পরিবেশবান্ধব আলো, দূষণ রুখতে জঞ্জাল অপসারণে কম্প্যাক্টর মেশিন বসাবেন।
আরও পড়ুন : শহর জুড়ে রঙিন প্রচার
এদিকে জিতেই শুরু করবেন টক টু কাউন্সিলর।এমনই জানিয়েছেন সুশান্ত। বিরোধীদের দেখা নেই। ডাবল হ্যাট্রিকের পথে বুয়া। পুরো নাম সুশান্ত ঘোষ। বাম আমল থেকে এখনও পর্যন্ত টানা পাঁচবারের কাউন্সিলর। হয়েছেন বরো চেয়ারম্যান। এলাকায় যিনি সকলের প্রিয় বুয়াদা নামেই পরিচয় ও জনপ্রিয়। প্রার্থী থাকলেও ১২০ নম্বর ওয়ার্ডে বিরোধীদের দেখা নেই। প্রচার নেই। বুয়া বললেন, মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আছে। জয়ের টানা ৬ বার জয়ের ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী। তাঁর কথায়, একটা সময় যখন প্রথমবার নির্বাচিত হয়ে আসি, বাম জমানায় তখন কাঁচারাস্তা থেকে নিকাশি ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা ছিল। ধীরে ধীরে উন্নয়ন হয়েছে। তবে আমি আরেকটি কমিউনিটি হল এখনও পর্যন্ত করতে পারিনি। জায়গার অভাবে সেটা হয়ে ওঠেনি। এবার কমিউনিটি হলকেই অগ্রাধিকার দেব। সেই সঙ্গে বেশ কিছু জলাশয়ের সংস্কার এবং সৌন্দর্যায়ন করব। ডেঙ্গুর কিছুটা প্রকোপ থাকলেও যুদ্ধকালীন তৎপরতায় স্বাস্থ্যকর্মীদের সারাবছরের প্রচেষ্টায় তা অনেকটাই মোকাবিলা করা গিয়েছে। ভ্যাকসিন প্রায় সম্পন্ন। তবে সুশান্ত ঘোষ একটি বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এবার তিনি নির্বাচিত হলে ‘টক টু মেয়র’-এর মতো সরাসরি সপ্তাহে একদিন ওয়ার্ডের মানুষের সঙ্গে কথা বলার জন্য ১২০ নম্বরে ‘টক টু কাউন্সিলর’ কর্মসূচি হবে।