প্রতিবেদন : সাধারণত স্কুলের বেয়াদপ ছাত্রদের সিধে করতে, পড়ায় মনোযোগী করতে মাস্টার মশাইরা ব্যাপক ধমক দিতেন। বা এখনও দিয়ে থাকেন। তাতেও কাজ না হলে দু’-চার ঘা পড়াটা অস্বাভাবিক নয়। নইলে নিদেনপক্ষে ক্লাসের বাইরে নীল ডাউন তো আছেই। কিন্তু তাই বলে ভরা এজলাসে এক বেয়াদপ আইনজীবীকে ব্যাপক ধমক দিচ্ছেন বিচারপতি! আর এতক্ষণ ধরে চিলচিৎকার করে নিজেকে জাহির করা আইনজীবী এই রাম ধমক খেয়ে ভিজে বেড়াল হয়ে গিয়েছেন। গলা দিয়ে আর আওয়াজ বেরোচ্ছে না। এই ঘটনা কলকাতা হাইকোর্টের। ২০১৬ সালের প্রাথমিকের চাকরি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য হার্মাদ আইনজীবী ফিরদৌস শামিমকে (ব্যাপক চেঁচিয়ে লম্ফঝম্প করে কথা বলছিলেন) প্রচণ্ড ধমক দিয়ে বলছেন, আপনি এত চিৎকার করছেন কেন? কী ভেবেছেন? চিৎকার করলেই আমি রায় দিয়ে দেব? একথা একবার নয়, একাধিকবার বলতে শোনা গিয়েছে বিচারপতিকে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
তিনি বলেন, এটা কি বাজার পেয়েছেন? কলকাতা হাইকোর্টে এই আচরণ বরদাস্ত করব না। এরপরেও হার্মাদ আইনজীবী মিউ মিউ করে কিছু একটা বলার চেষ্টা করলে, বিচারপতি ফের ধমকে বলেন, একদম চিৎকার নয়। পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দিতে হয় আমরা জানি। আগে নিজের আচরণ ঠিক করুন। এটা সহ্য করব না। সেই মুহূর্তে হার্মাদ আইনজীবীকে দেখে মনে হচ্ছিল, তিনি পালাতে পারলে বাঁচেন! ভরা এজলাসে সকলের সামনে, বিচারপতির সামনে নিজেকে জাহির করতে গিয়ে যেভাবে বেইজ্জত হতে হল, এরপরও কি ফের এই দুঃসাহস দেখাবেন এই হার্মাদ কুলপতি? কারণ হাইকোর্টের এজলাসকে তিনি টেলিভিশনের স্টুডিও ভেবে নিয়েছিলেন! প্রায়শই যেখানে ক্যামেরার সামনে বসে নির্বোধের মতো চিল চিৎকার করে আলতু ফালতু ভাষণ দিয়ে থাকেন! সেই কুঅভ্যাস কি আর সহজে যায়? কিন্তু বেচারা এদিন বাঘের মুখে পড়ে একেবারে বেড়াল হয়ে কোনওমতে এ-যাত্রায় বাঁচলেন! নইলে কপালে দুঃখ ছিল।
হাইকোর্টের এই শুনানি লাইভ হওয়ায় তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। তবে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ মঙ্গলবার এই লাইভ ধমকটি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে সামনে আনেন। যা এখন রাজ্য রাজনীতিতে চর্চার বিষয়।