দিঘায় রথ টানার জন্য কলকাতা থেকে আসছে দীর্ঘাকার পাটের দড়ি

রথে চড়ে জগন্নাথ যাবেন মাসির বাড়ি। সেই যাত্রায় অংশ নেবেন হাজার হাজার ভক্ত। দিঘায় জগন্নাথধামের দ্বারোদ্ঘাটনের পর এ বছর প্রথম হতে চলেছে রথযাত্রার।

Must read

সংবাদদাতা, দিঘা : রথে চড়ে জগন্নাথ যাবেন মাসির বাড়ি। সেই যাত্রায় অংশ নেবেন হাজার হাজার ভক্ত। দিঘায় জগন্নাথধামের দ্বারোদ্ঘাটনের পর এ বছর প্রথম হতে চলেছে রথযাত্রার। তার আয়োজনে কোনওরকম ত্রুটি রাখতে চায় না প্রশাসন ও জগন্নাথধাম কর্তৃপক্ষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে দিঘার রথের প্রস্তুতি বৈঠকে প্রায় এক কিলোমিটার লম্বা রথের রশি রাখার কথা বলেছেন। সেইমতো ইতিমধ্যেই বরাত দেওয়া হয়েছে পাটের তৈরি বিশেষ রশির। কলকাতার বড়বাজার, খিদিরপুর-সহ নানা বাজারে উন্নত মানের পাটের সামগ্রী পাওয়া যায়। সেখান থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রফতানি হয় পাটের নানাবিধ সামগ্রী। তাই দিঘায় রথের রশিও আসবে কলকাতা থেকেই। দিঘার জগন্নাথধাম সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৫ তারিখের মধ্যে দিঘায় পৌঁছে যাবে সমস্ত রশি। ২৬ তারিখ হবে নেত্র উৎসব বা রশিপুজো। প্রতিটি রথে থাকবে দুটি করে রশি। জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার পৃথক তিনটি রথের জন্য মোট ৬টি রশির বরাত দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি রশির দৈর্ঘ্য থাকবে প্রায় ১ কিলোমিটার পরিমাপের। দিঘায় জগন্নাথধাম উদ্বোধনের পর থেকেই লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় জমছে। ফলে রথেও যে জনসমুদ্র দেখা দেবে বলার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে ভক্তদের মৃত্যুর ঘটনা এখনও দগদগে। তেমন ঘটনা এড়াতেই এত লম্বা রশি রাখা হচ্ছে দিঘার রথে। প্রশাসনের তরফে পুরনো দিঘা থেকে নতুন দিঘা পর্যন্ত ৮-১০টি ‘মে আই হেল্প ইউ’ কাউন্টার থাকবে। রথের আগের দিন থেকেই দর্শনার্থীদের আলাদা আলাদা গেট গিয়ে প্রবেশ ও প্রস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। ওই সময় দর্শনার্থীরা নেচার পার্কের সামনে মন্দিরের মূল গেট দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। বেরোনোর জন্য তাঁদের ৬ ও ৭ নম্বর গেট ব্যবহার করতে হবে।

আরও পড়ুন-সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে কাঁথির বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েত এল হাতে, প্রধান পদে জয়ী তৃণমূল নেতা

এছাড়াও যাঁরা মাসির বাড়ি দর্শনে যাবেন তাঁরা জাতীয় সড়ক ধরে প্রবেশ করতে পারবেন এবং বেরোনোর সময় তাঁদের সি বিচের রাস্তা ধরে বেরোতে হবে। ভিড় নিয়ন্ত্রণে থাকছে অস্থায়ী বাঁশের ব্যারিকেড। রথের সময় মন্দির উদ্বোধনের দিনের ধাঁচেই যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ২৫ তারিখের পর থেকে সমস্ত গাড়িকেই বাইপাস হয়ে নতুন দিঘায় প্রবেশ করানো হবে। অটো-টোটোতেও থাকবে বিশেষ নিয়ন্ত্রণ। রথযাত্রা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে ২৫ তারিখেই দিঘায় পৌঁছবেন মন্ত্রী সুজিত বসু, অরূপ বিশ্বাস, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পুলক রায়। ২৬ তারিখ আসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। ওইদিন বিকেলে রথযাত্রার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার কথা আছে তাঁর। সেদিনের নেত্র উৎসবেও অংশ নিতে পারেন তিনি। তাই সমস্ত রকম প্রস্তুতিই এখন তুঙ্গে। নিরাপত্তার জন্য হাওড়া, বিধাননগর, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে আনা হবে কয়েক হাজার পুলিশ। তাদের থাকার জন্য ইতিমধ্যে হোটেল বুকও করেছে প্রশাসন। পুলিশের তরফে উড়বে ড্রোন। এছাড়াও কখন কী কী আচারবিধি পালন এবং কীভাবে গোটা রথযাত্রা পরিচালিত হবে এই নিয়ে ২৪ তারিখ নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসবেন মন্দিরের দায়িত্বে থাকা ইসকনের প্রতিনিধিরা। স্নানযাত্রার পর যেহেতু রথযাত্রার আগের দিন অর্থাৎ নেত্র উৎসবের দিনেই জগন্নাথের ফের দেখা মিলবে তাই সেদিনও অতিরিক্ত ভিড় হতে পারে। কলকাতা ইসকনের সহ-সভাপতি মন্দির ট্রাস্টের সদস্য রাধারমণ দাস বলেন, ‘নেত্র উৎসব বা রশিপুজোর দিনে সবাই যাতে রথের রশি ছুঁতে পারেন সেজন্যই কলকাতা থেকে এক কিলোমিটার মতো লম্বা পাটের দড়ি আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

Latest article