বাৎসরিক

সদ্য মুক্তি পেল পরিচালক মৈনাক ভৌমিকের ভূতের ছবি ‘বাৎসরিক’। এই ছবিতে দীর্ঘ ১৪ বছর পর কামব্যাক করলেন অভিনেত্রী, রাজনীতিক শতাব্দী রায়। এছাড়া রয়েছেন ঋতাভরী চক্রবর্তী। গা ছমছমে ভৌতিক পরিবেশের স্বাদ পেতে দর্শক হলমুখী

Must read

বাংলায় হরর, থ্রিলার ঘরানার ছবির সংখ্যা ইদানীং বেড়েছে। সদ্য মুক্তি পেল এমনই একটি হরর ছবি। নাম ‘বাৎসরিক’ (Batshorik)। মৈনাক ভৌমিক পরিচালিত এই ছবির নাম ঘোষণার দিন থেকেই বেশ চর্চিত, তার প্রধান কারণ হল টলিউডের এক সময়ের প্রথম সারির অভিনেত্রী শতাব্দী রায়ের এটা ছিল কামব্যাক ফিল্ম। জনপ্রিয় নেত্রী ও সাংসদ শতাব্দী ১৯৮৩ থেকে ২০১১ প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বড়পর্দায় দাপিয়ে অভিনয় করেছেন। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির নামজাদা নায়ক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় থেকে তাপস পাল— সবার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন। প্রায় ১৪ বছর পর তাঁর বড় পর্দায় ফেরা।

মৈনাকের ‘বাৎসরিক’ (Batshorik) হল দুই নারীর গল্প। এই গল্প যতটা ভূতের, ঠিক ততটাই সম্পর্কের, ভালবাসারও আবার প্রিয়জনের প্রতি অন্ধ মোহাচ্ছন্নতা এবং নানা কুসংস্কারাচ্ছন্নতা থেকে বেরিয়ে আসারও। বেশ গা-ছমছমে এই বাংলা ছবির গল্প স্বপ্না এবং বৃষ্টি এই দুই নারীকে নিয়ে। সম্পর্কে তাঁরা ননদ এবং ভাজ বা ভাইয়ের বউ। স্বপ্নার ভাই নীল। ঘটনাচক্রে গাড়ি ড্রাইভ করার সময় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় নীলের। মৃত্যুর আগে একটা বড় পুরনো বাড়ি কিনেছিল নীল। সেই বাড়িতে এখন বৃষ্টি একাই থাকে। একদিন শোকাচ্ছন্ন ভাইয়ের বউয়ের সঙ্গে থাকতে আসে ননদ স্বপ্না। আসার পর স্বপ্না লক্ষ্য করে বাড়িতে ঘটছে কিছু অস্বাভাবিক, অতিপ্রাকৃত ঘটনা। সেই প্রথম এই বাড়িতে তাঁর ভাইয়ের আত্মার উপস্থিতি টের পায়। ঘটতে নানা অতিলৌকিক ঘটনা। মৃত ভাইয়ের ‘বাৎসরিক’ অবধি স্বপ্না থাকতে চায় ভাইয়ের বউয়ের সঙ্গেই, কারণ স্বপ্না চায় এমন দুঃস্বপ্নের বাড়ি বিক্রি করে বৃষ্টিকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে। স্বপ্না এবং বৃষ্টির গড়ে ওঠে একটা সম্পর্কের সমীকরণ। এরপর কী হবে সেটা তোলা থাক।
আটের দশক থেকে শতাব্দীকে দেখতে অভ্যস্ত দর্শক। কিন্তু কামব্যাক পর্বে এ যেন এক অন্য শতাব্দী। এতটা কঠিন চরিত্রে তাঁকে আগে কখনও দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন-এখনও সক্রিয় সেবাশ্রয়, মেটিয়াবুরুজে ২৫০ মানুষকে বিনামূল্যে চশমা প্রদান

এতদিন পর আবার লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের মুখোমুখি অভিনেত্রী, সাংসদ, কবি। স্বাভাবিকভাবেই নতুন সবকিছু। তবুও তাঁর সহজাত অভিনয় ক্ষমতা একদম আগের মতোই আছে। কেমন অভিজ্ঞতা তাঁর— এই প্রসঙ্গে শতাব্দী বললেন, ‘‘খুব ভাল অভিজ্ঞতা। মৈনাক খুব ভাল পরিচালক, সেইজন্যই ছবিটা করতে রাজি হয়েছিলাম। এরকম হরর ছবি আগে হয়নি যেখানে সম্পর্কই প্রধান। এছাড়া ছবিটা আমার বেছে নেওয়ার কারণ হল এটা নারীকেন্দ্রিক একটা ছবি। ছবিটা যে সত্যি ভাল হয়েছে সেটা প্রমাণও হয়ে গেছে। দর্শকদের ভাল লাগছে।’’
‍‘বাৎসরিক’-এ বৃষ্টির চরিত্রে ঋতাভরী খুব সাবলীল। শতাব্দী রায়ের সঙ্গে খুব সুন্দর সঙ্গত দিয়েছেন। ঋতাভরীর স্বামী নীলের চরিত্রে ঈশান মজুমদার অনবদ্য। শব্দে শিলাজিৎ চক্রবর্তী এবং মিউজিকে স্যাভি। শুভদীপ নস্করের সিনেমাটোগ্রাফি অসাধারণ। সব মিলিয়ে ‘বাৎসরিক’ নিঃসন্দেহে সফল বলা যেতে পারে।

Latest article