প্রতিবেদন : আমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার পর ঘুম ভাঙল কেন্দ্রের। জারি করল নয়া নির্দেশিকা। দেশের যেকোনও বিমানবন্দরের (airport) নাকের ডগায় তৈরি করা যাবে না কোনও বহুতল। লাগানো যাবে না কোনও গাছও। কেন্দ্রীয় অসামরিক পরিবহণমন্ত্রক এদিন এক নির্দেশিকায় বলেছে, বিমানবন্দরের ২০ কিমির মধ্যে নির্মাণ করা যাবে না কোনও বহুতল। নির্মাণের উচ্চতা কখনও দু’তলার বেশি হবে না। দেশের সমস্ত বিমানবন্দর লাগোয়া পুরসভাগুলিকে এই নয়া নির্দেশ পাঠাল এয়ারপোর্ট অথরিটি। সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, এবার থেকে বিমানবন্দরের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে বহুতল করতে গেলে এয়ারপোর্ট অথরিটির ক্লিয়ারেন্স বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। সারা দেশেই কার্যকর হবে এই নির্দেশিকা।
তৃণমূলের প্রশ্ন, এত দেরিতে কেন এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। এই নির্দেশিকা নিয়ে তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় তীব্র কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রকে। তাঁর মন্তব্য, এতদিন পরে ঘুম ভেঙেছে কেন্দ্রের। এতবড় দুর্ঘটনা ঘটার পর এই সিদ্ধান্ত। এটা মোদি সরকারের খামখেয়ালি মনোভাবের প্রতিফলন।
আরও পড়ুন-বিপদে সুরবদল, ভারত থেকে চাল আমদানি চায় বাংলাদেশ
কলকাতা বিমানবন্দরের আগে এয়ারপোর্টের (airport) ফানেল এরিয়া মধ্যমগ্রামে ২৬, ২৭, ২৮ ওয়ার্ডে দু’তলার বেশি বহুতল করা যাবে না বলা ছিল। নয়া নির্দেশের ফলে মধ্যমগ্রাম, নিউ ব্যারাকপুর, বিধাননগর, উত্তর দমদম এর আওতায় আসতে চলেছে। এছাড়া নিউ ব্যারাকপুরের ফতেশা খালের পাশে বহুতল নির্মাণের ক্ষেত্রেও নিতে হবে বিশেষ অনুমতি। বাড়ি তৈরি করতে গেলে আবেদন করতে হবে এয়ারপোর্ট অথরিটিকে।
অনলাইনে আবেদন করতে হবে। ছাড়পত্র দিলে, তবে প্ল্যান দেবে স্থানীয় পুরসভা। আগে সর্বোচ্চ ৪৫ মিটার উচ্চতায় বাড়ি করতে দেওয়া হত। এবার সেই উচ্চতা নিয়ন্ত্রণ হবে বলে সূত্রের খবর। যেসব বহুতল আগে থেকেই রয়েছে সেগুলো নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে? এই নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
মধ্যমগ্রাম পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান বর্তমান বিধায়ক এবং মন্ত্রী রথীন ঘোষ জানিয়েছেন, এই ধরনের নির্দেশিকা পুরসভাগুলিতে এসেছে বলে তিনি জেনেছেন। ওদের তরফে বিশেষ টিম এসে এলাকা ঘুরে দেখে গিয়েছে। তাঁর কথায়, আমি যখন চেয়ারম্যান ছিলাম তখন একটা নিয়ম চালু করে রেখেছিলাম যে বহুতল তৈরির ক্ষেত্রে এয়ারপোর্ট অথরিটির সঙ্গে কথা বলা, সেগুলোর এনওসি নেওয়া। তারপর পুরসভার ছাড়পত্র— সেই নিয়ম অনুযায়ী চলা হত। এনওসি ছাড়া বাড়ির নকশা অনুমোদন করা হয় না। তবে স্বাভাবিকভাবেই এখন এই নয়া নির্দেশিকা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে লাগোয়া পুরসভা এবং তার সংলগ্ন অঞ্চলগুলিতে। ইতিমধ্যে যেসব জায়গায় বহুতল তৈরি হয়েছে বা কোনও প্রতিষ্ঠান রয়েছে কিংবা বড় গাছ রয়েছে সেগুলির ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে জল্পনা চলছে।