তুহিনশুভ্র আগুয়ান, দিঘা: সাতরঙা রঙিন পাখায় রথযাত্রায় সেজে উঠবে সৈকতসুন্দরী দিঘা। নীল সমুদ্রের ঢেউ এবং হরেক রকম আলো মিলেমিশে তৈরি করবে আনন্দঘন মুহূর্ত। রঙিন আলোর মোড়কে দিঘা মেলে ধরবে তার নবযৌবন। কোথাও জগন্নাথদেব, আবার কোথাও শ্রীচৈতন্য। উদ্বোধনের ধাঁচেই চন্দননগরের আলোর সাজে মোড়া হবে গোটা দিঘাকে। ইতিমধ্যে কলকাতা এবং চন্দননগরের আলোকশিল্পীরা দিঘায় এসে শুরু করে দিয়েছেন আলো লাগানোর কাজ। উদ্বোধনের মতোই প্রথম বছর দিঘার রথযাত্রায় নীল-লাল-সবুজ আলোয় সাজানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। সেইমতো শনিবার থেকেই বিভিন্ন জায়গায় পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন-আসন নিয়ে বচসা, যোগীরাজ্যে চলন্ত ট্রেনে দুষ্কৃতীরা পিটিয়ে মারল যাত্রীকে
জানা গিয়েছে, দিঘা স্টেশন থেকে পুরনো দিঘার নেহরু মার্কেট পর্যন্ত গোটা রাস্তা মুড়ে ফেলা হবে রঙিন আলোয়। মাসির বাড়িতেও হরেক রকমের আলো থাকবে। সেখানে মুভিং লাইটের পাশাপাশি থাকবে চায়না ল্যাম্প। রাস্তাজুড়ে মাথার ওপর থাকবে লম্বা রঙিন আলোর চেন। পাশাপাশি দুই ধারে লাগানো হবে বিভিন্ন দেবদেবীর ছবি দেওয়া আলোর পোস্টার। এই ধরনের আলো মূলত চন্দননগরেই বিখ্যাত। তাই চন্দননগরের আলোকশিল্পীদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হচ্ছে। এছাড়াও জগন্নাথধাম ও মাসির বাড়ির সামনে বিশেষ আলোর পোস্টার তৈরি হবে। সেখানে ডেকরেটর্সের রঙিন কাপড়ের ওপর লাগানো হবে সেই আলো। নেচার পার্কও সাজিয়ে তোলা হবে আলো দিয়ে। প্রতিটি গাছের নিচে থাকবে এলইডি লাইট। গাছের গায়ে জড়ানো থাকবে লাইটের রিবন। নেচার পার্কের সামনে যে জলাভূমিগুলি রয়েছে সেখানেও ফোয়ারার মাধ্যমে আলোর ব্যবস্থা হবে। এছাড়াও গোটা রাস্তার দুদিকে লাগানো হবে আলোর বোর্ড। সেখানে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার পাশাপাশি বিভিন্ন দেবদেবীর ছবি দেওয়া আলো লাগানো হবে। ওপরে থাকবে ভীমের গদা, জগন্নাথের তিলক, কৃষ্ণের বাঁশি-সহ বিভিন্ন ধর্মীয় অংশ। সৈকত সরড়িতেও লাগানো হবে আলো। উদ্বোধনের সময় একমাত্র আকর্ষণ ছিল জগন্নাথধাম। কিন্তু রথের সময় বহু মানুষ ভিড় জমাবেন মাসির বাড়ি। মাসির বাড়ি যেহেতু সৈকত সরণির ধারেই, তাই সমুদ্রপাড়েও আলো লাগানোয় জোর দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গোটা রাস্তা জুড়ে ১০ থেকে ১৫ মিটার অন্তর পরিকাঠামো তৈরি করে মুভিং লাইট লাগানো হবে। মন্দির উদ্বোধনের সময় দমকা হাওয়ায় ভেঙে পড়েছিল একটি আলোর পরিকাঠামো। তবে এবারে যাতে এরকম ঘটনা না ঘটে সেজন্য আলোর কাজের দায়িত্বে থাকা সকলকে আগেভাগেই সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মাটির নিচ পর্যন্ত শক্তভাবে পোঁতার পাশাপাশি শক্ত কিছুর সঙ্গে বাঁধতে হবে পরিকাঠামোগুলিকে। ইতিমধ্যে মন্দির সংলগ্ন এলাকায় বাঁশ দিয়ে পরিকাঠামো তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। রথে বর্ষার কথাও মাথায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সৌভিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘রথেও দিঘা জুড়ে রঙিন আলো লাগানো হবে। সেজে উঠবে জগন্নাথ মন্দির এবং মাসির বাড়ি। উদ্বোধনের ধাঁচেই রঙিন আলোয় সাজানো হবে গোটা দিঘাকে।’