তুহিনশুভ্র আগুয়ান, দিঘা: শুক্রবার দিঘায় রথযাত্রা শুরু হবে দুপুর আড়াইটায়। বৃহস্পতিবার জগন্নাথধামে (Digha Jagannath Dham) রথযাত্রার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার পর ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল ৯টায় রথে উঠবেন প্রভু জগন্নাথ। সাড়ে ৯টা থেকে সাধারণ মানুষ রথের দর্শন করতে পারবেন। দুপুর ২টো থেকে ২.৩০টা পর্যন্ত হবে আরতি। এরপর রীতিমাফিক রথের রশিতে টান পড়বে। তার আগে সোনার ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা ঝাঁট দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। সৈকত শহর দিঘায় এই প্রথম তৈরি হয়েছে ভক্তি ও আধ্যাত্মিকতার এক মিলনক্ষেত্র। সমুদ্রপাড়ে রথের রশি স্পর্শ করতে ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজ্য থেকে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন দিঘায়। মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথদেবের জন্য নিজের হাতে করে এনেছেন আম ও পেয়ারা। এছাড়াও জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার জন্য নিয়ে এসেছেন পোশাক। নতুন সাজে সেজে উঠবেন তাঁরা। আগামী কাল রথের দিন ৫৬ ভোগে প্রভু জগন্নাথদেবকে তা অর্পণ করা হবে। অনসর পর্ব কাটিয়ে এদিন সকাল ৬.১৭ মিনিট নাগাদ সাধারণের জন্য খুলে যায় জগন্নাথ দর্শনের দ্বার। ভক্তদের চোখে-মুখে ছিল আবেগ ও উচ্ছ্বাস। বৃহস্পতিবার দুপুর ১.৫০ মিনিটে মন্দিরের ৫ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে মন্দিরের দায়িত্বে থাকা ইসকনের প্রতিনিধি, পুলিশ ও মন্ত্রীদের নিয়ে প্রায় ৪০ মিনিট মিটিং করেন। কীভাবে আগামী কাল রথ পরিচালনা হবে তা নিয়ে একপ্রস্ত আলোচনা সারেন। এরপর জগন্নাথের গর্ভগৃহে জগন্নাথ দর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে ডালা অর্কিডের সামনের গেট থেকে বেরিয়ে একেবারে মূল গেটের দিকে যান। সেখানে ডিজি রাজীব কুমারকে সঙ্গে নিয়ে রথ রাখার জায়গা ঘুরে দেখেন। সঙ্গে ছিলেন ৫ মন্ত্রী। রাতেই মন্দির থেকে জাতীয় সড়কে বের করে আনা হবে তিনটি রথ। সেই তিনটি রথ কতটা দূরত্ব ছাড়া রাখা হবে তা একেবারে ফিতে নিয়ে মেপে দেখেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান, যেহেতু আমাদের রাস্তা সরু এবং জগন্নাথথাম অনেক বড় তাই একলক্ষ মানুষকে জগন্নাথধামে (Digha Jagannath Dham) প্রবেশ করানো হবে। কাল সকাল ন’টা থেকে পুরোহিতেরা তাঁদের নিয়ম মেনে পুজোপাঠ করবেন। সকাল থেকে সবাই জগন্নাথধাম এবং রথ দেখতে পারবেন। একদিক থেকে এসে একদিক থেকে বেরোতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথ মন্দির থেকে সরাসরি পৌঁছে যান নবনির্মিত মাসির বাড়িতে। সেখানে নতুন মাসির বাড়ি-সহ পুরনো জগন্নাথ মন্দিরের প্রস্তুতি ঘুরে দেখেন। কয়েক মিনিটের জন্য যান সমুদ্রের পাড়েও। এরপর কোথায় রথ থাকবে এবং আচারবিধি নিয়ে আধিকারিকদের সাথে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, নিমকাঠের মূর্তি রথে আসবে। কিন্তু পাথরের মূর্তি জগন্নাথধামে থাকবে। মানুষ আসুক এবং দর্শন করুক। আগামী কাল ন’টার পর থেকে মানুষ রথদর্শন করতে পারবেন। তখন থেকেই চলবে পুজোপাঠ। পদপিষ্ট এড়াতে রাস্তার দুধারে বাঁশের ব্যারিকেড করা হয়েছে। রয়েছে ড্রপিং পয়েন্ট। ব্যারিকেডের ধারে থাকবে রথের রশি। সেখান থেকে রথ টানবেন দর্শনার্থীরা।
আরও পড়ুন: হিন্দু জোট, আরও হিন্দু চাই, হিন্দুরা সব গেল কোথায় ভাই