প্রতিবেদন: এমএসএমই ক্ষেত্রে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে এই রাজ্যে। বিশ্ব এমএসএমই দিবস উপলক্ষে শুক্রবার শহরে মার্চেন্টস চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ আয়োজিত এমএসএমই কনফারেন্স ২০২৫-এর বক্তাদের আলোচনায় উঠে এল এই তথ্য। রাজ্যে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ছোট শিল্পের সম্ভাবনার পাশাপাশি নথিভুক্তির অভাব, লোকবলের ঘাটতি ও ঋণে বঞ্চনার ছবিটাও উঠে এল।
আরও পড়ুন-চন্দননগরে ৬০ টনের লৌহরথ
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক অভিরূপ সরকার বলেন, এই রাজ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নতির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। কর্মসংস্থানের প্রধান চালিকাশক্তি হয়ে উঠছে এই সেক্টর। তিনি স্বীকার করেন, নথিভুক্ত না হওয়ায় বহু শিল্প ঋণ ও অন্যান্য সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আলোচনায় উঠে আসে, শিল্পের অগ্রগতি সত্ত্বেও এমএসএমই-দের ঋণ পেতে নানা বাধা। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে গোটা দেশে এমএসএমই সেক্টরে মোট ঋণ প্রদানের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৩৬ লক্ষ ৯০ হাজার কোটি টাকা। গত বছর এই অঙ্ক প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকা বেশি ছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হচ্ছে ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র শিল্পগুলি, যাদের ঋণের প্রয়োজন এক কোটি টাকার কম। কারণ, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি তুলনামূলকভাবে বড় অঙ্কের ঋণ আবেদনকেই বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
আরও পড়ুন-স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মশলা-আচার পাল্লা দিচ্ছে নামী ব্র্যান্ডের সঙ্গে
রিপোর্ট বলছে, ২০২৩-২৪ সালে যেখানে অতি ক্ষুদ্র শিল্পে ঋণ দেওয়া হয়েছিল ১৮ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা, ২০২৪-২৫ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকায়। অথচ এক কোটি থেকে ৫০ কোটি টাকার মধ্যে যাঁরা ঋণ চেয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ঋণ প্রদানের হার বেড়েছে— এক লক্ষ কোটি টাকা থেকে শুরু করে ২ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত বাড়তি ঋণ দেওয়া হয়েছে এই শ্রেণিকে।
কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন এমসিসিআই সভাপতি অমিত সারোগি, রাজ্য সরকারের আধিকারিক ও ব্যবসায়িক মহলের বিশিষ্ট প্রতিনিধিরা। রাজ্যের এমএসএমই-তে লোকবলের সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়, যার সমাধানে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগের উপর জোর দেওয়া হয়।
ছোট শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রফতানি সম্ভাবনা, এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দিকগুলো নিয়ে একটি টেকনিক্যাল সেশনও অনুষ্ঠিত হয়। সব মিলিয়ে, এদিনের আলোচনায় স্পষ্ট— রাজ্যে ও দেশে এমএসএমই শিল্পে সম্ভাবনা বিপুল, কিন্তু নীতি ও পরিকাঠামোগত সমর্থন ছাড়া সেই সম্ভাবনা বাস্তবায়ন কঠিন।