সৌম্য সিংহ : রাজ্যের শাসনক্ষমতায় তখন বামেরা। কলকাতা পুরসভা, পঞ্চায়েত— সবই তখন বামেদের দখলে। একচ্ছত্র আধিপত্য। কিন্তু উন্নয়নের মুখই দেখতে পায়নি কলকাতার গা-ঘেঁষা জোকার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। যেন সিপিএমের শোষণ, অবহেলা আর বঞ্চনার মুক্তাঞ্চল। এলাকার বাসিন্দাদের ‘না ঘরকা, না ঘাটকা’ দশা। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরেই এই এলাকা নিয়ে শুরু হয় নতুন চিন্তাভাবনা। ২০১৩-তে এই এলাকাকে ১৪৪ নম্বর ওয়ার্ড হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত কলকাতা পুরসভার অন্তর্ভুক্ত হয়। মহানগরী লাগোয়া এই আধা শহরের মানুষজনেরও যে নাগরিক পরিষেবা পাওয়ার অধিকার রয়েছে তা প্রমাণিত হয় এই ওয়ার্ডের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে। ২০১৫-তে কলকাতা পুরসভার নির্বাচনে সিপিএমকে পর্যুদস্ত করে ১৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রথম কাউন্সিলরের মর্যাদা পান শেফালি প্রামাণিক (Shefali Pramanik)। এবারেও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে তিনি (Shefali Pramanik) ভোটপ্রার্থী।
আরও পড়ুন-kanika Layek: ঝাড়খণ্ডের শ্যুটার আত্মঘাতী
জোকার থ্রিএ বাসস্ট্যান্ড থেকে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ হাসপাতাল, চেকপোস্ট থেকে রাবার ফ্যাক্টরি, চড়িয়াল খাল থেকে হাঁসপুকুর খালপোল— পাড়ায় পাড়ায় তাঁর জনসম্পর্ক সত্যিই মুগ্ধ করার মতো। কুঁড়েঘর থেকে শুরু করে দোতলা বসতবাড়ি কিংবা আকাশচুম্বী টাওয়ার—সব জায়গাতেই তিনি ঘরের মেয়ে, আপনজন। প্রচারে স্বতন্ত্র ঘরানা। রীতিমতো গল্প করছেন ভোটারদের সঙ্গে। বলছেন, ‘রাস্তা, নিকাশির সমস্যার সমাধান হয়েছে গত ক’বছরে। পানীয় জলেরও সমস্যা সম্পূর্ণ সমাধানের পথে। ২০২২-এ গার্ডেনরিচের জল পৌঁছে যাবে ঘরে ঘরে।’ সত্যিই এখন চেনা মুশকিল। আগের সেই পঞ্চায়েত এলাকাকে। অবহেলিত অজ পাড়াগাঁকে। নগরায়নের পথে গত কয়েক বছরে সফলভাবে এগিয়ে গিয়েছে এই অঞ্চল। তবে পরিবেশ দূষণের কোনও বালাই নেই। সবুজ আর অক্সিজেনে ভরপুর ১৪৪ নম্বর ওয়ার্ড। এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে ৪টি পার্ক। এবারে লক্ষ্য একটি কমিউনিটি হল গড়ে তোলা। এলাকায় কান পাতলেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, শেফালির জয় নয়, জয়ের ব্যবধানটাই এখন গভীর আলোচনার বিষয়।