রোজই জগন্নাথের ভোগে খুদের পিঠে দিঘায় এখন চলছে উৎসবের আমেজ

Must read

তুহিনশুভ্র আগুয়ান, দিঘা: জগন্নাথের আগমনে দিঘার (Digha) মাসির বাড়িতে যেন উৎসবের আমেজ। সমুদ্রের ঢেউয়ের গর্জন এবং মন্দিরের কাঁসর-ঘণ্টা এখন মিলেমিশে একাকার। মনোরম পরিবেশে সমুদ্র পাড়ে এখন মাসির বাড়ির দৃশ্যপট উপভোগ করতে কাতারে কাতারে ভক্তরা ভিড় জমাচ্ছেন দিঘায়। জগন্নাথের সেবায় এলাহি আয়োজন করেছে মাসির বাড়ি কর্তৃপক্ষ। রোজ সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত পাঁচবার ভোগ নিবেদন করা হচ্ছে প্রভু জগন্নাথকে। সমুদ্র পাড়ে সারে-সারে রাখা হয়েছে জগন্নাথের রথ নন্দী ঘোষ, বলরামের তালধ্বজ এবং সুভদ্রার দর্পদলন। তিনটি রথের ধ্বজা এবং মন্দিরের সুগন্ধী যেন তৈরি করেছে এক অপরূপ আধ্যাত্মিক পরিবেশের। প্রভু জগন্নাথ দেব মিষ্টি খেতে খুবই ভালবাসেন। খুদের পিঠে তার অন্যতম পছন্দের খাবার। তাই রোজ মেনুতে থাকছে এই খুদের পিঠে। রোজ মন্দিরের সেবায়েতরা জগন্নাথের জন্য তৈরি করছেন বিশেষ এই খুদের পিঠে। সাত থেকে আটজন সেবায়েত রোজ বিকেলের মধ্যে এই পিঠে তৈরি করে চলেছেন। এরপর সন্ধ্যায় ভোগে লুচি, পরোটার সাথে সাথে খুদের পিঠে অর্পণ করা হচ্ছে প্রভু জগন্নাথকে। রবিবার তৃতীয় দিনে সকাল থেকেই চলে পুজোপাঠ। ছুটির দিনে দেবদর্শনে ভক্তদের ভিড়ও ছিল বিশেষ চোখে পড়ার মতো। অতিরিক্ত ভিড় এড়াতে রাস্তার মাঝে রাখা হয়েছে বিশেষ গার্ডরেল। সেখানেই লাইন দিয়ে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার দর্শন করছেন ভক্তরা। প্রত্যেকদিন বিগ্রহকে নতুন নতুন সাজে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। দুপুর ১২টায় দেওয়া হয় বিশেষ রাজভোগ। সেই ভোগে থাকছে পাঁচ রকমের ভাজা, শুক্তো, ডাল ও পটলের তরকারি। দুপুর একটা থেকে তিনটে পর্যন্ত বন্ধ থাকছে মাসির বাড়ির দরজা। তখন বিশ্রাম নেন তিন ভাইবোন। এরপর তিনটে থেকে ফের খুলে যায় মাসির বাড়ির দরজা। সন্ধ্যায় অর্পণ করা হয় জগন্নাথের অন্যতম প্রিয় খুদের পিঠে। যেহেতু খুদের পিঠে জগন্নাথের অন্যতম প্রিয় তাই রোজ তা অর্পণ করা হবে। মূলত এটি তৈরিতে চাল, দুধ, চিনি, মৌরি ও এলাচ ব্যবহার করা হয়। কখনও কখনও ময়দা ও অন্যান্য উপকরণও যোগ করা হয়। এই পিঠে তেলে ভেজে বা সেঁকে তৈরি করা হয়। এছাড়াও শয়নে যাওয়ার আগে দেওয়া হয় দুধ এবং ড্রাই ফ্রুটস। রবিবার সকালের দিকে নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে দিঘায়। কিন্তু বিকেলের দিকে অনুকূল আবহাওয়া থাকায় ব্যাপক মানুষ ভিড় জমান মাসির বাড়িতে। সন্ধ্যায় বর্ণিল আলোর সাজে সেজে ওঠা সৈকত চত্বর উপভোগ করেন পর্যটকরা। তার সাথে মাসির বাড়ির পূজার্চনা যেন এক উপরি পাওনা। রোজ সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্যও থাকছে প্রসাদের ব্যবস্থা। শেষ দিন অর্থাৎ ফেরত রথে প্রায় দশ হাজার মানুষকে ভোগ খাওয়ানো হবে। এদিকে জগন্নাথ ধামেও রোজ পাথরের মূর্তিতে চলছে পুজোপাঠ। সেখানেও জগন্নাথের রাজভোগে থাকছে একই মেনু। মাসির বাড়ির মন্দিরের পুরোহিত পূর্ণচন্দ্র নন্দ বলেন, “জগন্নাথের অন্যতম প্রিয় খাবার হল খুদের পিঠে। তাই বছরে একবার যেহেতু জগন্নাথ মাসির বাড়ি আসেন তাই আমরা রোজ তিন ভাই বোনের আপ্যায়নে খুদের পিঠে রাখছি। এছাড়াও সমস্ত আচার ও নিয়ম মেনে মাসির বাড়িতে পুজো পাঠ চলছে।”

আরও পড়ুন-নির্লজ্জ কেন্দ্রের ক্রমাগত বঞ্চনা তাই বলে কি ঘাটাল বাঁচবে না!

Latest article