তুহিনশুভ্র আগুয়ান, মহিষাদল: ক্ষুব্ধ রাধা, বলরাম ও সুভদ্রা। তাঁদের রাগ ভাঙাতে মাসির বাড়ি থেকে গেল ক্ষীর, রাবড়ি, দইয়ের মতো সুস্বাদু আহার। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল (mahishadal) রাজবাড়ির রথযাত্রার প্রাচীন রীতিনীতি আজও চলেছে। রথের পঞ্চম দিনে ‘মেলানভার’ অনুষ্ঠানে মেতে ওঠেন স্থানীয়রা। মহিষাদল রাজবাড়ির এই রথযাত্রা শুরু হয়েছিল প্রায় ২৪৯ বছর আগে। রাজা আনন্দলাল উপাধ্যায়ের স্ত্রী রানি জানকি সূচনা করেছিলেন। কাঠের তৈরি বিশাল রথে জগন্নাথের সঙ্গে মাসির বাড়ি যান রাজবাড়ির কুলদেবতা মদনগোপাল জিউ। রাজবাড়ির মন্দিরেই থাকেন রাধা, বলরাম এবং সুভদ্রা। দিন যত বাড়ে ততই ক্রমশ অগ্নিশর্মা হন রাধা, বলরাম ও সুভদ্রা। রেগে চতুর্থ দিনে জগন্নাথ ও মদনগোপালের জন্য কাঁঠালের বীজ, শাকপাতার শেকড়, আনাজের খোসা প্যাকেট করে মাসির বাড়িতে পাঠান ওঁরা। তা দিয়ে পঞ্চম দিনে তরকারি বানিয়ে অর্পণ করা হয় জগন্নাথ ও মদনগোপালকে। এদিকে পাল্টা মাসির বাড়ি থেকে রাধা, বলরাম এবং সুভদ্রার জন্য পাঠানো হয় নানান ধরনের সুস্বাদু খাবার। ঢাকঢোল বাজিয়ে তা নিয়ে যাওয়া হয় মাসির বাড়ি থেকে মন্দিরে। ইতিহাসবিদ অর্ণব রায় বলেন, যেহেতু মাসির বাড়িতে জগন্নাথ এবং মদনগোপাল দু’জন এসেছেন, তাতে রাগ হয় রাধা, বলরাম এবং সুভদ্রার। রথের পঞ্চম দিনে ভাল খাবারদাবার পাঠানো হয়। প্রচলিত এই রীতিকে ‘মেলানভার’ বলে। আশপাশের ঘাগরা, গড়কমলপুর, জগন্নাথপুর-সহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষজন ভিড় জমান মাসির বাড়ি চত্বরে।
আরও পড়ুন-হিমাচলে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে মৃত ৩, সুড়ঙ্গে আটকে ৩০০ মানুষ