প্রতিবেদন: আদালত অবমাননার মামলায় বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি মহম্মদ গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বুধবার এই আদেশ দেয়। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মহম্মদ শফিউল আলম মাহমুদ এবং মহম্মদ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এই মামলার অন্য আসামি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শাকিল আকন্দ বুলবুল ওরফে মহম্মদ শাকিল আলমকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন-বাধ্যতামূলক আধার প্যান লিঙ্ক
শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর ১১ মাস আগে দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। অনির্বাচিত ইউনুস সরকার আওয়ামি লিগ নেত্রীকে যে কোনও ছুতোয় জেলে পাঠাতে মরিয়া। দেশত্যাগের পর এই প্রথম কোনও মামলায় দণ্ডিত হলেন মুজিবকন্যা। এর আগে জুন মাসে আইসিটি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়ের করেছিল। সেই অভিযোগে বলা হয় যে তিনি জুলাই মাসে দেশব্যাপী বিক্ষোভের সময় গণহত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ‘২২৬ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’, অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া এমন একটি অডিওর বক্তব্য শেখ হাসিনার উল্লেখ করে হাসিনা ও শাকিল আকন্দ বুলবুলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনে প্রসিকিউটর। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, গত ৩০ এপ্রিল এই সংক্রান্ত শুনানিতে দুই অভিযুক্তকে ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। কিন্তু ধার্য তারিখে তাঁরা হাজির হননি এবং আইনজীবীর মাধ্যমেও ব্যাখ্যা দেননি। সেদিন ট্রাইব্যুনাল দুজনকে সশরীর হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিতে নির্দেশ দেয়। পরদিন দুটি সংবাদপত্রে এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
আরও পড়ুন-আগে তো তোমরা সমতায় ফেরো, সাত দিন বিশ্রাম, তবু বুমরা বাইরে : শাস্ত্রী
বিজ্ঞপ্তিতে দুজনকে ৩ জুন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়। সেদিনও তাঁরা হাজির হননি। পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য ১৯ জুন তারিখ নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল। ১৯ জুন এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে নিয়োগ করে ট্রাইব্যুনাল। মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয় ২৫ জুন। সেদিনের মামলায় প্রস্তুতি নিতে অ্যামিকাস কিউরি মশিউজ্জামানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে এক সপ্তাহ সময় দেয় ট্রাইব্যুনাল। সেদিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয় ২ জুলাই। তার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন দুই অভিযুক্তকে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দিয়েছে বাংলাদেশের ট্রাইব্যুনাল।