প্রতিবেদন: দেশবাসীর ব্যক্তিগত গোপন তথ্যফাঁসের মতো গুরুতর অভিযোগে বিদ্ধ আমেরিকার ট্রাম্প প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রিপাবলিকান সরকারের বিরুদ্ধে ক্যালিফোর্নিয়া, ওয়াশিংটন এবং ওরেগন রাজ্যের সরকারি আইনজীবীরা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়েরের পথে আরও একাধিক রাজ্য।
ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দেশের সরকার মার্কিন নাগরিকদের স্বাস্থ্যবীমা সংক্রান্ত গোপন তথ্য অভিবাসন কর্মকর্তাদের সাথে শেয়ার করেছে। ওরেগনের অ্যাটর্নি জেনারেল ড্যান রেফিল্ড এবং ওয়াশিংটনের অ্যাটর্নি জেনারেল নিক ব্রাউন-সহ আরও ১৮টি ডেমোক্র্যাটিক প্রদেশের সরকারি আইনজীবী মঙ্গলবার মামলা দায়ের করেছেন।
আরও পড়ুন-আদালত অবমাননার দায়ে শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড
তাঁরা বলছেন, মার্কিন স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগ মেডিকেড রোগীদের ফাইল ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির কাছে পাঠিয়েছে, যেখানে অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থা কাজ করে। এই মামলায় স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের প্রধান রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র, এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ ও তার প্রধান ক্রিস্টি নোয়েমকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যগুলির অভিযোগ, সরকার গত মাসে লক্ষ লক্ষ মানুষের মেডিক্যাল ডেটা অভিবাসন কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দিয়ে ফেডারেল গোপনীয়তা আইন ভেঙেছে। যা গুরুতর অপরাধ। স্বাস্থ্যসচিব রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের উপদেষ্টারা গত মাসে ক্যালিফোর্নিয়া, ইলিনয় এবং ওয়াশিংটন রাজ্যের মানুষের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই রাজ্যগুলিতে এমন কিছু নিয়ম আছে যেখানে অ-নাগরিকরাও মেডিকেড প্রোগ্রামে যোগ দিতে পারেন এবং তাঁদের চিকিৎসার খরচ রাজ্যের করের টাকা দিয়েই মেটানো হয়।
আরও পড়ুন-বাধ্যতামূলক আধার প্যান লিঙ্ক
ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বনটা মামলা ঘোষণা করে একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন সংবেদনশীল, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ডেটা অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে অবৈধভাবে শেয়ার করে দীর্ঘদিনের গোপনীয়তা সুরক্ষা লঙ্ঘন করেছে। এই কাজের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় তৈরি হয়েছে, যার কারণে জরুরি চিকিৎসাসেবা নিতে আসা মানুষের সংখ্যা কমে যাবে। জানা গিয়েছে, শেয়ার করা ডেটাগুলিতে বাসিন্দাদের নাম, ঠিকানা, সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর, অভিবাসন স্থিতি এবং চিকিৎসার দাবি সংক্রান্ত তথ্য ছিল। অন্যদিকে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের মুখপাত্র অ্যান্ড্রু নিক্সন এই সিদ্ধান্তের পক্ষে সাফাই দিয়ে বলেছেন যে এটি সমস্ত আইন মেনেই করা হয়েছে। অভিবাসন সংক্রান্ত কঠোর নিয়মের কারণেই তথ্য শেয়ার করা হয়েছে। এদিকে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যটি গত মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা করেছে। গত ১২ জুন ক্যালিফোর্নিয়া প্রশাসন ট্রাম্পের প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করে। কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট রাজ্যের গাড়ির ধোঁয়া নির্গমণের নিয়ম বাতিল করতে চেয়েছিলেন এবং গ্যাসচালিত গাড়ি পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এর মাত্র দুদিন আগে, ক্যালিফোর্নিয়া ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছিল একটি রাজ্য আইনের কারণে ফেডারেল তহবিল প্রত্যাহারের হুমকির বিরুদ্ধে, যা ট্রান্সজেন্ডার হাইস্কুল অ্যাথলেটদের মেয়েদের খেলায় অংশ নিতে দেয়। প্রায় একই সময়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় অভিবাসন অভিযানের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদের মধ্যে লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।