কোয়াডের বিবৃতি ও ভারতের বার্তায় পাকিস্তানের উল্লেখ না থাকায় বিতর্ক

ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত কোয়াডভুক্ত দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের চলতি বছরের দ্বিতীয় বৈঠকের পর প্রকাশিত যৌথ ইস্তাহার ঘিরেই প্রশ্ন উঠছে।

Must read

প্রতিবেদন: একটি বিবৃতি তুলে দিল বহু প্রশ্ন। কোয়াডভুক্ত দেশগুলি (ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া) পহেলগাঁওয়ের সন্ত্রাসবাদী হামলার তীব্র নিন্দা করলেও পাকিস্তানের তরফে জঙ্গি মদতের কোনও উল্লেখ রাখেনি। কোয়াডের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলাকারী, সংগঠক ও অর্থদাতাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। কিন্তু এই যৌথ বিবৃতিতে সরাসরি পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করা বা ভারত সরকারের সাথে সহযোগিতার জন্য স্পষ্টভাবে আহ্বান জানানো হয়নি। ফলে এই অসম্পূর্ণ বিবৃতি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রচেষ্টার কার্যকারিতা এবং কূটনৈতিক সূক্ষ্মতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিল। আর পাকিস্তানের উল্লেখ ছাড়াই বিবৃতি কীভাবে, তা নিয়েও বাড়ছে বিতর্ক।

আরও পড়ুন-এক পরিবারের তিন সদস্যকে পিটিয়ে খুন নিষ্ক্রিয় ছিল পুলিশ

ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত কোয়াডভুক্ত দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের চলতি বছরের দ্বিতীয় বৈঠকের পর প্রকাশিত যৌথ ইস্তাহার ঘিরেই প্রশ্ন উঠছে। এই ইস্তাহারের ভাষা মে মাসে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রেস বিবৃতির অনুরূপ, যেখানে হামলার জন্য দায়ী গোষ্ঠীর পরিচয় বা ভারত সরকারের প্রতি সরাসরি কোনও উল্লেখ এড়ানো হয়েছিল। কোয়াডের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে তারা সন্ত্রাসবাদ এবং সহিংস চরমপন্থার সমস্ত রূপ ও প্রকাশ, যার মধ্যে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদও অন্তর্ভুক্ত, তাকে দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা জানায় এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে সহযোগিতার প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি স্মরণ করায়। এতে ২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করা হচ্ছে এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হচ্ছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আমরা এই ঘৃণ্য কাজের হামলাকারী, সংগঠক এবং অর্থদাতাদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানাই এবং রাষ্ট্রসংঘের সমস্ত সদস্য রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক আইন এবং প্রাসঙ্গিক ইউএনএসসিআর-এর অধীনে তাদের বাধ্যবাধকতা অনুসারে এই বিষয়ে সকল প্রাসঙ্গিক কর্তৃপক্ষের সাথে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করি।

আরও পড়ুন-রেলের অভিযোগ ওড়াল রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতর

কিন্তু এই বিবৃতি প্রকাশ্যে আসার পর বিতর্ক তৈরি হতেই বলা হচ্ছে, পাকিস্তানের নাম সরাসরি উল্লেখ না করা কোয়াডের সদস্য দেশগুলির মধ্যে কূটনৈতিক সংবেদনশীলতা বা বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনার ইঙ্গিত দেয়, যা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের সাথে সংঘর্ষমূলক মনে হতে পারে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের বিষয়ে ভারতের নিজস্ব বার্তাও যথেষ্ট বিভ্রান্তিকর। প্রতিরক্ষামন্ত্রক মঙ্গলবার মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথের সাথে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের ফোনালাপের যে অফিসিয়াল বিবৃতি দিয়েছে তাতেও পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদের কোনও উল্লেখ নেই। এটি সম্ভবত কূটনৈতিক চাপ, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার বিবেচনা অথবা পাকিস্তানের সাথে ভবিষ্যতের আলোচনার পথ খোলা রাখার ইচ্ছার ফল হতে পারে। পহেলগাঁও হামলার বিষয়ে কোয়াডের সতর্ক প্রতিক্রিয়া এবং পাকিস্তানের প্রতি ভারতের নিজস্ব বার্তার এই পরিবর্তনগুলি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ দমনে একটি জটিল চিত্র তুলে ধরল বলাই যায়।

Latest article