প্রতিবেদন : বিহার-ভোটের আগে নতুন ষড়যন্ত্রের পটভূমি তৈরি করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে সামনে রেখে কেন্দ্রের সরকার তথা বিজেপি নেমেছে নোংরা খেলায়। নির্বাচন কমিশন বিহার-ভোটকে (Bihar- ECI) সামনে রেখে যে বিশেষ সংশোধন প্রক্রিয়া চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা আসলে সাধারণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত। এমনটাই মনে করছে তৃণমূল-সহ বিরোধী দলগুলি। সবাই এই ইস্যুতে কেন্দ্রের বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে এককাট্টা।
ভোটার তালিকায় স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন বা এসআইআর অর্থাৎ বিশেষ সংশোধনের নামে বিহারে (Bihar- ECI) অভিযানে নেমেছে নির্বাচন কমিশন। সাধারণ মানুষই তাতে বিরক্ত। আধার, ভোটার কার্ড, জব কার্ড ইত্যাদি নথি থাকা সত্ত্বেও কমিশন তা মানতে রাজি হচ্ছে না। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের বক্তব্য, আধার কার্ড ছাড়া আর কোনও নথি দেখাতে পারব না। আর যদি নাম বাদ দেওয়া হয়, তাহলে ভোট হতে দেব না গ্রামে। সাধারণ মানুষের এই মনোভাবে জোর ধাক্কা খেয়েছে কমিশনের অভিযান।
আরও পড়ুন- সোমবার খুলছে কসবার আইন কলেজ
কমিশনের এই পদক্ষেপকে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত বলে মনে করা হচ্ছে। যেখানে ২০ বছরেরও বেশি সময়ে ধরে ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধনীর কাজ হয়নি, সেখানে হঠাৎ করে ভোটের মুখে নির্বাচন কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিল কেন? তাহলে কি এর নেপথ্যে কোনও বিশেষ অভিসন্ধি লুকিয়ে রয়েছে! বিহারের পরেই বাংলায় ভোট। রয়েছে অন্যান্য অবিজেপি রাজ্যের ভোটও। তবে কি মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার এক গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কেন্দ্রের বিজেপি? তাই কমিশনকে দিয়ে এই কাজ করানোর হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে! হঠাৎ ভোটের মুখে এসে এত বড় প্রক্রিয়া শুরুর অর্থ কী?
বিহারেই কমিশনের অভিযান জোর ধাক্কা খেয়েছে। কমিশনকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পৌনে ৮ কোটি ভোটারের তথ্য যাচাই একমাসের মধ্যে কোনওভাবেই সম্ভব নয়। কোনও পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া এটা করার অর্থ হল গরিব, সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক মানুষদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র রচনা করা। যাঁদের কাছে জন্ম শংসাপত্র নেই, তাঁরা কী করে তা দেখাবেন? যাঁরা প্রতি বছর বন্যায় নথিপত্র হারিয়ে ফেলেন, তাঁরাই বা কী করবেন? বিহারের ২০ শতাংশেরও বেশি মানুষ জীবিকার কারণে রাজ্যের বাইরে থাকেন। তাঁদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য এটা একটা ফাঁদ। তা কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না। এর নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য স্পষ্ট। সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ।