বাংলার বাসিন্দাদের বাংলা বলার জন্য বিজেপি (BJP) শাসিত রাজ্যগুলি থেকে সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া নিয়ে মামলা পর্যন্ত হয় আদালতে। তাই এবার নতুন ভাবনায় বাংলার বাসিন্দাদের ভারতছাড়া করার পন্থা নিল বিজেপি রাজ্যগুলি। শুধুমাত্র অসমে যাওয়া এবং সেখানে দেশের বাসিন্দা হিসাবে বৈধ নথি না দেখাতে পারার ফলে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার নোটিশ পাঠাল অসম প্রশাসন। এবার নিজের নাগরিকত্ব কিভাবে প্রমাণ করবেন, সেই নিয়ে উদ্বিঘ্ন দিনহাটার উত্তম কুমার ব্রজবাসী। অবশেষে ভরসা বাংলার প্রশাসন। কোচবিহার জেলার দিনহাটার বাসিন্দা উত্তম কুমার ব্রজবাসীর নামে জানুয়ারি মাসে অসম প্রশাসন একটি নোটিশ জারি করে। তাঁকে ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণের নথিসহ অসমের ফরেনার্স ট্রাইবুনাল কোর্টে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেখানে তিনি ব্যর্থ হলে ধরিয়ে দেওয়া হয় এনআরসি নোটিশ। ১৯৪৬ সালের ফরেনার্স অ্যাক্টে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে অসম প্রশাসন। তাঁকে ১৫ জুলাই ফরেনার্স ট্রাইবুনাল কোর্টে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এরপরেই এই নিয়ে সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-যোগীর উত্তরপ্রদেশে মহিলাকে জোর করে প্রস্রাব পান করিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন তান্ত্রিকের
নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে এদিন ক্ষোভপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ”আমি হতবাক ও অত্যন্ত বিচলিত হয়েছি জেনে যে, কোচবিহারের দিনহাটার বাসিন্দা রাজবংশী সম্প্রদায়ের উত্তম কুমার ব্রজবাসীকে অসমের ফরেনার্স ট্রাইবুনাল, এনআরসি নোটিশ জারি করেছে। গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি এই বাংলার বাসিন্দা। তাঁর বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও, তাঁকে “বিদেশি/অবৈধ অনুপ্রবেশকারী” সন্দেহে হয়রানি করা হচ্ছে।
এটি আমাদের গণতন্ত্রের উপর একটি পরিকল্পিত আক্রমণ ছাড়া আর কিছুই নয়। এটিই প্রমাণ করে যে অসমে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, যেখানে তাদের কোনো ক্ষমতা বা অধিকার নেই। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ভয় দেখানো, ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া এবং নিশানা করার একটি পূর্বপরিকল্পিত নোংরা চক্রান্ত চলছে। এই অসাংবিধানিক আগ্রাসন জনবিরোধী এবং এটি বিজেপির বিপজ্জনক ষড়যন্ত্রকে দিনের আলোর মত স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, গণতান্ত্রিক সুরক্ষাকে ধ্বংস করে বাংলার মানুষের পরিচয় মুছে ফেলার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি।
এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে সমস্ত বিরোধী দলগুলির একজোট হওয়া এবং বিজেপির বিভাজনমূলক ও দমন পীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো অত্যন্ত জরুরি। ভারতবর্ষের সাংবিধানিক কাঠামোকে ধ্বংস করা হলে, বাংলা চুপ করে থাকবে না।”