ম্যাড়মেড়ে লর্ডসে বুমরাই ব্যতিক্রম

ক্রিকেট কৌলিন্যে লর্ডস এখনও একনম্বর। কিন্তু বাজবলের মতো ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে বাইশ গজ। আগে বল মুভ করত। ব্যাটারদের পরীক্ষা হত।

Must read

লন্ডন, ১১ জুলাই : ক্রিকেট কৌলিন্যে লর্ডস এখনও একনম্বর। কিন্তু বাজবলের মতো ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে বাইশ গজ। আগে বল মুভ করত। ব্যাটারদের পরীক্ষা হত। এখন অতীত। তাই লর্ডসে যা হচ্ছে সেটা নিষ্প্রাণ উইকেটে যান্ত্রিক ক্রিকেট। ইংল্যান্ড প্রায় চারশো। ভারত ১৪২/৩। দু’দিনের ম্যাড়মেড়ে চিত্রনাট্যে একমাত্র ব্যতিক্রম জসপ্রীত বুমরা। আরও এক ফাইফার। ৭৪ রানে ৫ উইকেট। যা তিনি বলেই এখানে সম্ভব হল।
যে তিন ভারতীয় আউট হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে করুণ করেছেন ৪০। যশস্বীর ১৩। আর গোল্ডেন ফর্মে থাকা শুভমনের ১৬। তিন উইকেট ১০৭ রানে পড়ে যাওয়ার পর রাহুল-ঋষভ পার্টনারশিপ চলছে। রাহুল ৫৩ নট আউট। ঋষভ ব্যাটিং ১৯। আঙুলের চোট যে পিছু ছাড়েনি সেটা বোঝা গেল ঋষভের ব্যাটিংয়ে। কিন্তু এখনও ২৪৫ রানে পিছিয়ে ভারত। এই জুটিকে শনিবার যতদূর সম্ভব এগিয়ে যেতে হবে।

আরও পড়ুন-পড়ুয়াদের সামাজিক করার লক্ষ্যে পর্ষদের নয়া উদ্যোগ

চার বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে জোফ্রা আর্চার শুরুতেই ফিরিয়ে দেন যশস্বীকে। পরের দুটি উইকেট স্টোকস ও ওকসের। ওকস অবশ্য অনেক রান দিলেন। বাকিরা যতটা কৃপণ বল করেছেন, ততটাই গুটিয়েছিলেন ব্যাটাররা। রাহুল রাহুল ৫৩ রান করতে ১১৩ বল খেলেছেন। করুণ ৪০ করেছেন ৬২ বলে। উইকেট বোলারদের পাশে না থাকলেও ৩.৪৪-এর বেশি গড়ে রান তুলতে পারেনি ভারত। ইংল্যান্ড সামান্য বেশি ৩.৪৮। তাও কয়েক সপ্তাহ আগে টেস্ট ফাইনালে দাপিয়ে বেড়ানো হ্যাজলউড-এনগিডি এখানে নেই!
স্মিথ (৫১) আর কার্স (৫৬) জোড়া হাফ সেঞ্চুরি করছেন বলেই ইংল্যান্ড ৩৮৭ পর্যন্ত যেতে পেরেছে। না হলে একসময় ২৭১ রানে তাদের ৭ উইকেট পড়ে গিয়েছিল। বুমরা পরপর তিন উইকেট নিয়ে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডকে। পরে এই দু’জন মিলে ৯৯ রান যোগ করেন। বুমরা আরও একবার এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিলেন। এছাড়া দুটি করে উইকেট নিয়েছেন সিরাজ ও নীতীশ। একটি উইকেট রবীন্দ্র জাদেজার।

আরও পড়ুন-সুডা-র সাম্প্রতিক সমীক্ষায় বড় সাফল্য, প্রথম ডেঙ্গিমুক্ত এলাকা স্বীকৃতি পেল পানিহাটি

বাজবল থেকে ইংল্যান্ড আগের দিনই সরে এসেছিল। এদিন সকালের দু’ঘণ্টায় তাঁরা তুলেছে ২২ ওভারে ১০২ রান। এরমধ্যে অবশ্য ৩টি উইকেট হারিয়েছে তারা। কিন্তু সপ্তম উইকেট ২৭১ রানে পড়ে যাওয়ার পর ইংল্যান্ড পরিস্থিতি সামলে নেয় স্মিথ ও কার্সের জন্য। স্মিথ এই সিরিজে দারুণ ফর্মে রয়েছেন।
শুক্রবার লাঞ্চের আগেই হাফ সেঞ্চুরি হয়ে গিয়েছিল স্মিথের। সকালে ২৫১/৪ নিয়ে ব্যাটিং শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। রুটের আর ১ রান দরকার ছিল ৩৭তম সেঞ্চুরিতে পৌঁছতে। তিনি শতরানে পৌঁছে গেলেও আর বেশিদূর এগোতে পারেননি। টেস্ট সেঞ্চুরিতে রুট এখন পাঁচে। সামনে শচীন, পন্টিং, কালিস ও সাঙ্গাকারা। বুমরা অবশ্য পরে বিধ্বংসী চেহারা নিয়ে ফিরিয়ে দেন স্টোকস (৪৪), রুট (১০৪) ও ক্রিস ওকসকে।
আগের দিন শেষ বেলায় নতুন বল নেয় ভারত। স্রেফ তিন ওভার পুরনো বল নিয়ে শুক্রবার খেলা শুরু করেছিলেন শুভমনরা। আর বুমরা সেই সেমি নতুন বল নিয়ে চাপে ফেলে দেন ইংল্যান্ডকে। কিন্তু সেই বল একটু পুরনো হতেই স্মিথ আর কার্স অবস্থা সামলে নেন। বিশেষ করে স্মিথ শুরু থেকেই দাপটে ব্যাট করেছেন। এখানেও কেউ তাঁকে সমস্যায় ফেলতে পারেনি।
ডিউক বল নিয়ে বিতর্ক জারি ছিল এদিনও। আগের দুই টেস্টেও দেখা গিয়েছে এই বলের আকার খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হচ্ছে। শুক্রবার যেমন বল ১০ ওভার পুরনো হতেই বদলে দেন আম্পায়াররা। যা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন শুভমন। প্রশ্ন হল, এত তাড়াতাড়ি বলের আকার নষ্ট হয় কী করে? ভারতীয় দল আম্পায়ার সরফুদ্দৌলা সৈকতের কাছে জানতে চায় এত দ্রুত বলের আকার নষ্ট হয় কী করে!
এজবাস্টনেও এই ঘটনা ঘটেছিল। বল পাল্টাতে গিয়ে ম্যাচের অনেকটা সময় নষ্ট হয়েছে। এদিন ১০ ওভারের পুরনো বল হিসাবে ভারতীয়দের হাতে যে বল তুলে দেওয়া হয়েছিল সেটা অনেকের মনে হয়েছিল ২০ ওভারের। তাই এই বল পাল্টে আরেকটা বল দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন শুভমনরা। কিন্তু দুই আম্পায়ার তাতে কর্ণপাত করেননি।

Latest article