প্রতিবেদন: ভারতের অর্থমন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সামনে সম্প্রতি বিস্ফোরক তথ্য স্বীকার করেছেন ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (আরবিআই) গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা। সংসদীয় কমিটির সামনে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্যে তিনি বলেছেন, ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে দেশে জাল নোটের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এই প্রবণতা উদ্বেগজনক বলে স্বীকারও করেছেন মালহোত্রা। বিশেষ করে ৫০০ টাকার জাল নোটের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। কমিটির বৈঠকে এক সংসদ সদস্য উল্লেখ করেছিলেন যে ২০২৪-২৫ সালে ১.১২ লক্ষ ৫০০ টাকার জাল নোট পাওয়া গেছে। তবে, আরবিআই-এর বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২৪-২৫ অনুসারে, ৫০০ টাকার জাল নোটের সংখ্যা বার্ষিক ৩৭ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়ে ১.১৮ লক্ষ হয়েছে, যা সাংসদের উল্লিখিত সংখ্যার চেয়েও অনেকটা বেশি। দেশে ৫০০ টাকার নোটগুলিই সবচেয়ে বেশি জাল হচ্ছে বলে ধরা পড়ছে।
আরও পড়ুন-পড়ুয়াদের সামাজিক করার লক্ষ্যে পর্ষদের নয়া উদ্যোগ
চলতি বছরের মে মাসে প্রকাশিত আরবিআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ সালে অন্যান্য মূল্যের জাল নোটের মধ্যে ১০০ টাকার ৫১,০৬৯টি, ২০০ টাকার ৩২,৬৬০টি এবং ২০০০ টাকার ৩,৫০৮টি জাল নোট পাওয়া গিয়েছে। মোট ৬ কোটিরও বেশি নোটের মধ্যে থেকে এই জাল নোটগুলি শনাক্ত করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ সালে মোট জাল নোটের সংখ্যা (২.২৩ লক্ষ) ২০২৩-২৪ সালের (২.১৮ লক্ষ) থেকেও কিছুটা বেশি।
আরও পড়ুন-সুডা-র সাম্প্রতিক সমীক্ষায় বড় সাফল্য, প্রথম ডেঙ্গিমুক্ত এলাকা স্বীকৃতি পেল পানিহাটি
বিজেপি সাংসদ ভর্তৃহরি মাহতাবের নেতৃত্বাধীন কমিটিকে আরবিআই গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা জানিয়েছেন যে, ২০০০ টাকার নোটগুলি বর্তমানে লেনদেনের প্রচলন থেকে তুলে নেওয়া হলেও সেগুলিকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়নি এবং সেগুলি এখনও বৈধ মুদ্রা হিসেবে বিবেচিত হবে। সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিরোধী দলের সদস্যরা আরবিআই-এর ভূমিকার মধ্যে অসঙ্গতির অভিযোগ তুলে প্রশ্ন করেছেন। কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি প্রস্তাব করেছেন যে, আরবিআই-এর উচিত ব্যাঙ্ক নিয়ন্ত্রণ এবং কয়েকটি নির্বাচিত ক্ষেত্রে তার মূল কার্যকলাপে মনোযোগ দেওয়া, যাতে স্বার্থের সংঘাত এড়ানো যায়। কমিটি ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণ নিয়েও আলোচনা করেছে, তবে আরবিআই এই বিষয়ে কী বলেছে তা প্রকাশ্যে জানানো হয়নি। কমিটির চেয়ারম্যান মাহতাব জানিয়েছেন, ২৩ বা ২৪ জুলাই আবার বৈঠকে বসবেন তাঁরা। জাল নোটের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা দেশের অর্থনীতিতে একটি উদ্বেগের কারণ, বিশেষ করে ৫০০ টাকার নোটের ক্ষেত্রে। সংসদীয় কমিটির এই আলোচনা এবং আরবিআই-এর পদক্ষেপগুলি দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।