বঙ্গবিদ্বেষী বাঙালি বিরোধী ছুঁড়ে ফেলো বিজেপি

পদ্ম ফুলের বাংলার প্রতি ন্যূনতম সহমর্মিতা নেই, নেই সমমর্মিতা। অসম-সহ একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি আক্রান্ত। বাঙালি বিপন্ন। গেরুয়া বদমায়েশি বাঙালিকে ঘরছাড়া, মৃত্যুমুখী করছে। অথচ বিজেপি শাসিত রাজ্যের শিক্ষা দফতরের দুর্নীতি বেপরোয়া। হিসাবশাস্ত্রের জটিল সূত্র জানার দরকার নেই, সাধারণ পাটিগণিতের হিসাবও গুলিয়ে যাচ্ছে তার সৌজন্যে। এই বিজেপিকে একটি ভোটও নয়। লিখছেন সাগ্নিক গঙ্গোপাধ্যায়

Must read

কোচবিহারের বক্সিরহাটের ঝাউকুটি গ্রামের বাসিন্দা। এমন এক পরিবারের সদস্য যাঁরা বহু প্রজন্ম ধরে সেখানে বসবাস করছেন। এহেন ঘোষ পরিবারের একমাত্র দোষ ছিল তাঁদের মেয়েকে অসমের একটি পরিবারে বিয়ে দেওয়া। বাংলা-বিরোধী অসম সরকার ৫২ বছর বয়সি আরতিকে বিদেশি বা অনুপ্রবেশকারী আখ্যা দিয়ে এনআরসি তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ দেয়। এর ফলে তাঁকে তাঁর শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে আবার কোচবিহারে ফিরে আসতে হয়। এনআরসিতে নাম তোলার আবেদন বাতিল হওয়ার ফলে অসমে হয়রানির শিকার হওয়া বহু উদাহরণের মধ্যে একজন আরতি ঘোষ।

‘অপরাধ’ শুধু বাংলায় কথা বলা। স্রেফ তার জন্যই ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের উপর হেনস্তার ঘটনা বাড়ছে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে। পুলিস-প্রশাসনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বটেই, বাংলাদেশি পরিচয় দিয়ে ওপার বাংলায় পাঠিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। দিল্লি থেকে আটক করে পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে কি না, তা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে বিস্তারিত রিপোর্টও চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আর তার মধ্যেই অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা খোলাখুলি জানিয়ে দিয়েছেন, অসমের কোনও বাসিন্দা জনগণনার নথিতে মাতৃভাষা বাংলা লিখলেই বোঝা যাবে রাজ্যে কতজন বিদেশি (বাংলাদেশি) বসবাস করছে। হিমন্তের বার্তা স্পষ্ট, দিল্লি বা ওড়িশার মতো বিজেপি-শাসিত অসমেও কেউ যদি বাংলা ভাষায় কথা বলে, তাহলে তাকে ‘বাংলাদেশি’ তকমা দেওয়া হতে পারে।

আমরা দেখছি, বিজেপি-শাসিত (Shame On BJP) রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাংলার মেয়ের নাম এনআরসিতে বাদ দিয়ে তাঁর নাগরিকত্ব হরণ করে তাঁকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি বলে তকমা সেঁটে দেওয়া হচ্ছে। কোথাও আটক করা হচ্ছে। আবার কোথাও হয়রানি। পুশব্যাক করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া পর্যন্ত হয়েছিল। ওড়িশা, মুম্বই, দিল্লি সহ বিভিন্ন বিজেপি-শাসিত রাজ্যে এমন ঘটনা সামনে এসেছে। বাংলার বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিকরা অন্য রাজ্যে গিয়ে হেনস্থার সম্মুখীন হছেন। বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের বিরুদ্ধে এই অপমান এবং ঘৃণার প্রতিবাদে এবার পথে নামতে চলেছেন জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন-কাশ্মীর : গদ্দারকে পাল্টা কল্যাণের

পশ্চিমবঙ্গে নাকি দুর্নীতির আখড়া। আর ডবল ইঞ্জিন শাসিত রাজ্যগুলিতে নাকি সততার স্রোত বইছে। এমন একটা ধারণা তৈরির চেষ্টা চলছে গেরুয়া মহল থেকে। কিন্তু তাতে কি আস্থা রাখার কোনও অবকাশ আছে?
এই প্রসঙ্গে মধ্যপ্রদেশের একটা ঘটনার কথা তুলে ধরা যাক।
অঙ্কটা কিছুতেই মেলানো যাচ্ছে না। ব্যাক ক্যালকুলেশন করতে গিয়েও গরমিল থেকে যাচ্ছে একটি জায়গায়। দেওয়াল রং করতে কেন রাজমিস্ত্রির প্রয়োজন পড়বে? অথচ মধ্যপ্রদেশের দু’টি স্কুল রং করতে খরচের যে হিসেব দেওয়া হয়েছে, তার চালানে জ্বলজ্বল করছে রাজমিস্ত্রিদের মজুরিও। এরমধ্যে একটি স্কুলের একটিমাত্র দেওয়ালে রং করা হয়েছে। এজন্য লেগেছে ৪ লিটার রং। কাজ করেছেন মোট ২৩৩ জন মিস্ত্রি! অন্য স্কুলে যে খরচের হিসেব দেওয়া হয়েছে, তা আরও এককাঠি সরেস! শুধুমাত্র ১০টি জানালা ও চারটি দরজা রং করার কাজে লেগেছে ২৭৫ জন রংমিস্ত্রি এবং ১৫০ রাজমিস্ত্রি। স্বাভাবিকভাবেই খরচেই এই হিসেবে মেলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। গোটা ঘটনায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এটি শহদল জেলার বায়োহরি বিধানসভার এলাকার শাকন্দি গ্রামে সরকারি স্কুলের হিসাব।

একইভাবে নিপানিয়া গ্রামের স্কুলটিতে ১০টি জানালা এবং চারটি দরজা রং করার জন্য লেগেছে ২৭৫ জন রংমিস্ত্রি এবং ১৫০ রাজমিস্ত্রি। বরাদ্দ ২ লক্ষ ৩১ হাজার ৬৫০ টাকা। নিপানিয়া স্কুলের রং করার দায়িত্বে ছিল সুধাকর কনস্ট্রাকশন। ৫ মে খরচের হিসেব দেখিয়ে বরাদ্দ অর্থ তুলে নিয়েছে সংস্থা।
ডবল ইঞ্জিন সরকারের প্রশাসনই দুর্নীতি মুক্ত প্রশাসন, তারই নমুনা এটি।
আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচন। সেই নির্বাচনে মা-মাটি-মানুষের নামে কুৎসা রটিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চাইছে বিজেপি।
কোন বিজেপি?
বাংলা বিদ্বেষী, বাঙালির শত্রু বিজেপি।
কোন বিজেপি?
যে বিজেপির দুর্নীতি ডবল ইঞ্জিন চালিত রাজ্যে রাজ্যে প্রকাশিত।
এই বিজেপির সরকার, আমাদের নেই দরকার।
বাংলার শত্রু, বাঙালির শত্রু বিজেপিকে ছুঁড়ে ফেলুন। আমাদের জীবন-জীবিকার স্বার্থে বিজেপিকে আগামী নির্বাচনে একটা ভোটও নয়।

Latest article