উন্নয়নের নামে শুধুই প্রহসন মধ্যপ্রদেশে বিজেপির গ্রাম পঞ্চায়েতে

 রিলের পঞ্চায়েত ফুলেরা - বাস্তবের মহোরিয়া। মধ্যপ্রদেশের একটি ছোট গ্রাম, যা এখন দেশের প্রতিটি লোকের কাছেই অত্যন্ত চেনা।

Must read

সৌভিক মহন্ত, মহোরিয়া, মধ্যপ্রদেশ থেকে ফিরে: রিলের পঞ্চায়েত ফুলেরা – বাস্তবের মহোরিয়া। মধ্যপ্রদেশের একটি ছোট গ্রাম, যা এখন দেশের প্রতিটি লোকের কাছেই অত্যন্ত চেনা। কারণ একটাই, পঞ্চায়েত ওয়েব সিরিজ। দুটো গ্রাম সম্পূর্ণ আলাদা হলেও তাদের মিলও কিন্তু প্রচুর। ঠিক যেমন পঞ্চায়েতের শুরু থেকেই গ্রামবাসীদের প্রধানজীর বিরুদ্ধে উন্নয়ন না করার অভিযোগ ছিল। এই বাস্তবের মহোরিয়া গ্রামের চিত্রটাও একইরকম। বিজেপি শাসিত মহোরিয়াতেও পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে উন্নয়ন না করারই অভিযোগ। ওয়েব সিরিজে যেমন পঞ্চায়েতের প্রধানকে চালাতেন তাঁর স্বামী। এখানেও প্রধানকে আদতে চালাচ্ছে তাঁর ছেলে ভূপেন্দর ধনগড়ই। খারাপ রাস্তা, বিদ্যুৎ থেকে পানীয় জল। অসন্তোষ গ্রামবাসীদের মধ্যে।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

জনপ্রিয়তায় তুঙ্গে পৌঁছনো পঞ্চায়েতের গ্রাম এখন সকলের কাছে টুরিস্ট স্পট। সেই জায়গা দেখতে আমরাও চলে গিয়েছিলাম মধ্যপ্রদেশের শিহোরের মহোরিয়ায়। গিয়ে যা দেখা গেল তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। রিল এবং বাস্তবের অনুন্নয়নের চিত্রটা হুবুহু একরকম। কেন্দ্রে যেমন বিজেপির শাসন। তেমনই আবার মধ্যপ্রদেশেও বিজেপির সরকার। বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকার মানেই নাকি উন্নয়নের জোয়ার। কিন্তু মহোরিয়া গ্রাম তো সম্পূর্ণ অন্য কথাই বলছে। মহোরিয়া গ্রামে কান পাতলে শুধুই অভিযোগের সুর শোনা যায়। আর সেই অভিযোগ কার বিরুদ্ধে? বিজেপি শাসিত পঞ্চায়েত থেকে প্রধানই তাদের কাঠগড়ায়। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় চলা ফেরা করা দায়। একটা কিংবা দুটো জায়গা বাদ দিলে সব জায়গাতেই কাঁচা রাস্তা। একটু বৃষ্টি হলেই গ্রামবাসীদের তথৈবচ অবস্থা। সেইসঙ্গে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না। রিলের পঞ্চায়েতও কিন্তু ঠিক এমনটাই ছিল। যখন তখন বিদ্যুৎ সংযোগ চলে যাওয়া। কখন আসবে তার হিসাব নেই। তেমনই রাস্তা সারানো নিয়ে সকলের প্রধানজীর কাছে আবেদন করা।

আরও পড়ুন-ভারতীয় স্বামীকে গুপ্তচরবৃত্তিতে নামার জন্য চাপ দিতেন রুশ স্ত্রী

সেখানেও প্রধানজি যেমন শুধুই প্রতিশ্রুতি দিতেন। বাস্তবের মাটিতেও কিন্তু ব্যপারটা একেবারেই তেমন। বারবার পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে বলা হলেও, গ্রামে কাজ কিছুই হয়নি। গ্রামেরই বাসিন্দা মোহন সিং দরবার বলছিলেন, আমাদের এখানে কোনও কাজ হয়নি। রাস্তা তো একেবারেই খারাপ। বহু কষ্টের মধ্যে দিয়েই চলা ফেরা করতে হয়। পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ির দিকের রাস্তা টুকুই শুধু ভালোভাবে করা হয়েছে। অর্ধেকের বেশি সময় বিদ্যুৎ থাকে না বললেই চলে। জলের পাইপে জলও পাই না সব সময়। যখন ওদের মনে হয় তখন দেয়। পঞ্চায়েতকে বারবার বলেলেও কিছুই কাজ হয় না। বারবার প্রতশ্রুতি দেয় কিন্তু কিছুই করে না।
গ্রামেই সোয়াবিনের চাষ করেন গজেন্দ্র সিং চৌহান। তাঁরও গলা থেকেও ঝড়ে পড়ল একরাশ অভিযোগ। তিনি জানাচ্ছিলেন, আমাদের এখানকার রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। জল হলেই এই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করাটা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়ে। আমাদের এই রাস্তা ঠিক হবে না। পঞ্চায়েত এবং প্রধানকে বারবার বলেছি কিন্তু কিছুই কাজ করেনি তারা। পঞ্চায়েত ওয়েব সিরিজ হলেও, সেখানে যে আদতে বাস্তবের মাহোরিয়ার অনুন্নয়নের ছবিই ফুটে উঠেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Latest article