রাত পোহালেই সোমবার একুশে জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool congress) ‘শহিদ দিবস’। ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভামঞ্চ ও বেশ কয়েকটি জায়গায় পরিদর্শন করেন তিনি। আজ, রবিবার, ২০ জুলাই সভামঞ্চ পরিদর্শনে গিয়ে ফের একবার বিরোধীদের নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন,‘‘পুলিশের অনুমতি ছাড়া নবান্ন অভিযান হলে আপত্তি কোথায় থাকে?’’
আরও পড়ুন-হাইকোর্টের নির্দেশে তৎপর কলকাতা পুলিশ, রাস্তায় নিষেধাজ্ঞা
দস্তুর মতই ধর্মতলায় ২১ জুলাইয়ের সভাস্থল পরিদর্শনে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবদিক খতিয়ে দেখে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের আন্দোলন দমানোর ক্ষমতা ছিল না সিপিএমের। গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করতে গিয়ে ওরা এমন ভাবে গুলি চালিয়েছিল যে, ১৩ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। জীবন দিয়ে লড়াই করেছিল আমাদের সহকর্মীরা। দেড়শো জন পুলিশের গুলিতে আহত হন। গণতন্ত্র দিবস হিসেবে এই দিন পালিত হয়। প্রায় ৩৩ বছর ধরে এই প্রোগ্রাম এখানে হয়, তার কারণ এখানে অনেকগুলো প্রাণ লুটিয়ে পড়েছিল। তাই আমাদের বছরে একটাই প্রোগ্রাম শহিদ স্মরণে আমরা এখানেই করি। দাবি ছিল নৌ আইডি, নো ভোট। টিএন সেশন নির্বাচন কমিশনার হওয়ার পরে মানুষ ভোট দেওয়ার অধিকার ফিরে পায়। অনেক লড়াই, সংগ্রাম, জীবন যুদ্ধের কাহিনি আজও ছড়িয়ে আছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যে কাউকে ভোট দিতে দেয় না। সিপিএমের আমলে সবাই দেখেছেন। আর আজকে টিভি-তে বসে বড় ভাষণ দিচ্ছে। লড়াইটা লড়েছিল আমাদের সহকর্মীরা মাঠে ময়দানে। সমস্ত শহিদদের স্মরণে মা মাটি দিবস, গণতন্ত্র দিবস পালন করি আমরা।”
এরপরেই তিনি বাম আমলের শাসনকে নিশানা করে বলেন, ”এই নিয়েও অনেকের আপত্তি আছে। আমার বক্তব্য, তারা যখন নবান্ন অভিযান করেন, পুলিশের অনুমতি ছাড়া, তখন আপত্তি কোথায় থাকে? আমাদের দেখে ওদেরও প্রোগ্রাম করতে হয়। কই আমরা তো ওদের দেখে প্রোগ্রাম করি না! তৃণমূলের থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। লক্ষাধিক মানুষ এসেছেন। অতিবৃষ্টির কারণে অনেক অঞ্চল প্লাবিত। তবে, শেকড়ের টানে, শহিদদের টানে, শহিদ তর্পণে তাঁরা এসেছেন। আজকে যে গণতন্ত্র যে দেখতে পাচ্ছেন, সেটা সিপিএমের আমলে ছিল না। আগে মানুষ ভোট দিতে পারত না। সমস্ত বিল্ডিংয়ে তালা দিয়ে রাখা হত। গ্রামেও কাউকে ভোট দিতে দিত না। এই অবস্থায় আমাদের বিরাট আন্দোলন হয়েছিল। সেই আন্দোলনকে রুখতে গিয়ে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল। ১৩ জন স্পটে মারা গিয়েছিলেন। ২০০ জনের মতো মানুষ আহত হয়েছিলেন। ১৫০ জন শুধু পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছিলেন।”
আরও পড়ুন-জখম স্ত্রীকে হাসপাতালে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন
তৃণমূল সমর্থকদের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “ঝড়-জল হলেও আসবেন। শান্তিপূর্ণভাবে আসুন। একুশে জুলাইয়ের অনুষ্ঠান চিরকাল চলবে। সাধারণ মানুষের হয়তো একটু অসুবিধা হবে কালকে। ইতিমধ্যে লক্ষাধিক মানুষ চলে এসেছেন। আগামিকালও জেলাগুলি থেকে মানুষ আসবেন।”