এক সংগ্রামী চেতনার অবসান: প্রয়াত আজিজুল হক, শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

Must read

প্রয়াত বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক, বক্তা ও বামপন্থী চিন্তক আজিজুল হক (Azizul Haque)। তাঁর সঙ্গেই শেষ হল এক সংগ্রামী চেতনার। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন ৮৪ বছর বয়সী আজিজুল। সোমবার দুপুর ২টো ২৮ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পারিবারিক সূত্রের খবর, বাড়িতে পড়ে গিয়ে হাতে গুরুতর চোট পাওয়ার পর থেকেই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে আজিজুল হকের। সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শেষ ক’দিন ভেন্টিলেশনে রেখে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় একের পর এক জটিলতা দেখা দেয়।

আরও পড়ুন- ঢাকার স্কুলে বায়ুসেনার বিমান ভেঙে পড়ার ঘটনায় বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, জখম ৭০

নকশালবাড়ি আন্দোলনের অন্যতম মুখ ছিলেন আজিজুল হক (Azizul Haque)। চারু মজুমদারের মৃত্যুর পর সিপিআই (এম-এল)-এর দ্বিতীয় কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধানের দায়িত্ব নেন তিনি। তাঁর লেখা “কারাগারে ১৮ বছর” গ্রন্থটি নকশাল আন্দোলন ও রাজনৈতিক বন্দিদের উপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের এক প্রামাণ্য দলিল হিসেবে পরিচিত। জীবনের প্রায় দু’ দশক তিনি জেলেই কাটিয়েছেন। ১৯৭৭ সালে জেল থেকে মুক্তি পেলেও ফের ১৯৮২ সালে ফের গ্রেফতার হন তিনি। জেলের ভেতরে তাঁর উপর হওয়া শারীরিক নির্যাতন ও কারাগারের করুণ অবস্থা নিয়ে সে সময় ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছিল। পরে বামফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ও যতীন চক্রবর্তী তাঁর মুক্তির পক্ষে সওয়াল করেন।

দীর্ঘদিন রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণভাবে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন আজিজুল হক। যদিও, সমাজচিন্তা ও লেখালেখিতে সক্রিয় ছিলেন শেষ দিন পর্যন্ত। কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘ভাষা শহিদ স্মারক সমিতি’। নিয়মিত লিখতেন বিভিন্ন দৈনিকে। আজিজুল হকের মৃত্যু এক ঐতিহাসিক সময়ের অবসান।

আজিজুল হকের মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ”প্রবীণ রাজনীতিক আজিজুল হকের প্রয়াণে আমি গভীর শোক জ্ঞাপন করছি। আজিজুল হক একজন লড়াকু, সংগ্রামী নেতা ছিলেন। তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি কখনো মাথা নত করেননি। তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার ও সহযোগীদের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা জানাই।”

Latest article