বাতুমি, ২৮ জুলাই : চৌষট্টি খোপের লড়াইয়ে ইতিহাস দিব্যা দেশমুখের। প্রথম ভারতীয় দাবাড়ু হিসাবে মেয়েদের দাবা বিশ্বকাপ জিতলেন ১৯ বছর বয়সী দিব্যা। রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে সোমবার তিনি টাইব্রেকারে ২.৫-১.৫ স্কোরে হারিয়েছেন আরেক ভারতীয় দাবাড়ু কোনেরু হাম্পিকে। পুরুষদের কনিষ্ঠতম দাবা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন ডি গুকেশ। এবার দেশকে গর্বিত করলেন দিব্যা।
এর আগে প্রথম দু’টি ক্লাসিক্যাল গেম ড্র হওয়াতে খেতাবি লড়াই গড়িয়েছিল টাইব্রেকারে। সেখানে প্রথম র্যাপিডে সাদা ঘুঁটি নিয়ে খেলেন দিব্যা। অন্যদিকে, কালো ঘুঁটি নিয়ে খেলছিলেন হাম্পি। তিনি শুরু করেন পেট্রভস ডিফেন্স দিয়ে। দু’জনেই খুব দ্রুত চাল দিচ্ছিলেন। যদিও জেতার মতো সুযোগ কেউই তৈরি করতে পারেননি। ফলে ড্রয়ের সিদ্ধান্ত নেন দিব্যা ও হাম্পি।
আরও পড়ুন-অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ গড়িয়া মেট্রো স্টেশন
দ্বিতীয় র্যাপিড গেমে সাদা ঘুঁটি নিয়ে খেলেন হাম্পি। তিনি শুরু করেন কুইন্স গ্যাম্বিট দিয়ে। তবে কালো ঘুঁটি নিয়ে খেলা দিব্যা শুরু থেকেই দ্রুত চাল দেওয়ার লড়াইয়ে হাম্পিকে পিছনে ফেলে দেন। একটা সময় তো হাম্পির থেকে ৮ মিনিট এগিয়ে যান দিব্যা। ফলে বাধ্য হয়েই দ্রুত চাল দিতে গিয়ে চাপের মুখে একটা ভুল চাল দিয়ে ফেলেন হাম্পি। আর সেটাই কাজে লাগান দিব্যা। ৩৪ চালের পর, হার মেনে নিতে বাধ্য হন হাম্পি। ৩৮ বছরের হাম্পির থেকে অভিজ্ঞতায় অনেকটাই পিছিয়ে ছিলেন দিব্যা। কিন্তু আক্রমণাত্মক স্ট্র্যাটেজিতে প্রতিপক্ষকে মাত করে দিলেন। প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি দিব্যা। কেঁদে ফেলেন তিনি। ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন মাকে।
এদিন বিশ্বকাপ জেতার সঙ্গে সঙ্গে দিব্যার বাড়তি প্রাপ্তি গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম। তিনি চতুর্থ ভারতীয় মহিলা দাবাড়ু, যিনি গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম পেলেন। সব মিলিয়ে ভারতীয় দাবাড়ুদের মধ্যে তিনি ৮৮তম গ্র্যান্ডমাস্টার। দিব্যার কোচ শ্রীনাথ নারায়ণ আবার নিজের ছাত্রীর সঙ্গে তুলনা টেনেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনির। তাঁর বক্তব্য, চাপের মুখে ধোনির মতোই মাথা ঠান্ডা থাকে দিব্যার। সদ্য বিশ্বকাপজয়ী দিব্যা বলছেন, এই খেতাব আমার কাছে বিরাট প্রাপ্তি। আশা করি, এটা সবে শুরু। ভবিষ্যতে আরও সাফল্য পাব। তবে তার জন্য আমাকে আরও উন্নতি করতে হবে। একদিন গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম পাব বিশ্বাস ছিল। কিন্তু সেটা বিশ্বকাপ জিতে পাব, এতটা ভাবিনি।