প্রতিবেদন : ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ১০৬তম প্রতিষ্ঠাদিবসে কোচ ব্রুজোর নেতৃত্বে যখন ইস্টবেঙ্গল সিনিয়র দল মঞ্চে উঠল, তখন ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে সমর্থকদের উচ্ছ্বাসে কান পাতা দায়। কলকাতা লিগে ডার্বি জয় আর ডুরান্ড কাপে প্রথম ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে পাঁচ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার পর সমর্থকদের স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছে। ক্লাবের প্রতিষ্ঠাদিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও মেয়র ফিরহাদ হাকিম নতুন মরশুমে মশালবাহিনীর ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেন।
আরও পড়ুন-আবাস যোজনা, অভিষেকের প্রশ্নে সংসদে নাজেহাল কেন্দ্র
ক্রীড়ামন্ত্রী বললেন, ডার্বি দিয়ে শুরু হয়েছে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সূর্য উঠেছে। সমর্থকদের পাশে থাকতে হবে। ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে সব জায়গায় আমি যাই। ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে বাকি সবার একটা জায়গাতেই পার্থক্য, এই ক্লাব অতীত মনে রাখে। সবাইকে সম্মান দিতে জানে। প্রতি বছর এই যে ভারত গৌরব সম্মান দেওয়া হয় ক্রীড়াক্ষেত্রে বিভিন্ন নক্ষত্রদের, এটা আর কোনও ক্লাব করে না। বাংলার লিয়েন্ডার পেজ, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, অরুণ ঘোষদের ভারত গৌরব সম্মান দিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। এবার আপনারা আশা করুন, ক্লাব ফুটবল মাঠে সাফল্য পাবে। খেলোয়াড়রা খেলুক মাঠে, সমর্থকরা থাকুক মাঠের বাইরে। এগিয়ে চলুক ইস্টবেঙ্গল। মেয়র ফিরহাদ হাকিম অনুষ্ঠান শেষে বলে গেলেন, ইস্টবেঙ্গল এবার শক্তিশালী দল গড়েছে। সাফল্য আসবেই। একটা বড় ক্লাব টানা ব্যর্থ হতে পারে না। ক্রীড়ামন্ত্রী ও মেয়রকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পক্ষ থেকে। ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগ ও কন্যাশ্রী কাপ জয়ী ইস্টবেঙ্গল মহিলা দলকে সংবর্ধনাও দেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
আরও পড়ুন-ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে রাহুল-শশী দ্বন্দ্ব তীব্র
ইস্টবেঙ্গলের প্রতিষ্ঠাদিবসে আমন্ত্রিত ছিলেন মোহনবাগান ক্লাবের সহসভাপতি কুণাল ঘোষ। মঞ্চে দাঁড়িয়ে কুণাল বলেন, আমি অবশ্যই মোহনবাগানের সমর্থক। কিন্তু আমি তিন প্রধানেরও সমর্থক। যদি ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগানকে বা মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গলকে না হারায়, তাহলে কীসের ফুটবল। ফুটবল তো বাংলার। মোহনবাগান যদি স্বাধীনতার প্রতীক হয়, তবে ইস্টবেঙ্গল কিন্তু সংগ্রামের প্রতীক। আমাদের তিন প্রধানের দায়িত্ব বাংলার ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। মোহনবাগান যদি চ্যাম্পিয়ন না হয়, তাহলে চাইব ইস্টবেঙ্গল বা মহামেডান জিতুক ট্রফি। বাংলাতেই থাকুক ফুটবল।
এবারের ভারত গৌরব সম্মান পেলেন অলিম্পিকে জোড়া ব্রোঞ্জজয়ী ভারতীয় হকি দলের প্রাক্তন গোলকিপার পি আর শ্রীজেশ। তাঁকে জার্সি পরিয়ে হাতে সম্মান তুলে দেন ক্রীড়ামন্ত্রী ও মেয়র। আপ্লুত শ্রীজেশ বলেন, আমার কাছে বিরাট মুহূর্ত। কারণ, আমি হকি থেকে এসেছি। সম্পূর্ণ আলাদা ব্যাকগ্রাউন্ড। সেখানে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের তরফে এই সম্মান পেয়ে আমি অভিভূত। যোগ করেন, আমি অনেকটা ধোনি ও কোহলির মিশ্রণ। লর্ডসে দাদার জার্সি ঘোরানোর মুহূর্ত মনে আছে। ক্লাবের তরফে প্রাইড অফ বেঙ্গল সম্মান তুলে দেওয়া হল ইস্টবেঙ্গল ও ভারতীয় মহিলা দলের বঙ্গতনয়া সঙ্গীতা বাসফোরকে। জীবনকৃতি সম্মান পেলেন প্রাক্তন অধিনায়ক সত্যজিৎ মিত্র ও মিহির বসু। ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে বর্ষসেরার সম্মান পেলেন সৌভিক চক্রবর্তী ও সৌম্যা গুগুলথ। সেরা উদীয়মান ফুটবলারের সম্মান পেলেন পি ভি বিষ্ণু। প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় স্মৃতি পুরস্কার সম্মানে ভূষিত হলেন বাংলার সন্তোষজয়ী কোচ সঞ্জয় সেন। মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের হাত থেকে পুরস্কার নিয়ে তিনি বলেন, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু তারা আমাকে সম্মান দিল। যদি ইস্টবেঙ্গল আমাকে কখনও সুযোগ দেয়, আমি সুদে-আসলে ফিরিয়ে দেব।