প্রতিবেদন : বাংলাভাষী (Bengali Language) ও বাঙালিদের উপর কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপির রাজ্যগুলি পরিকল্পিত চক্রান্ত চালাচ্ছে। এবার বাংলাকে বাংলাদেশি ভাষা বলে দেগে দিয়ে বিদ্বেষকে চূড়ান্ত সীমায় নিয়ে গেল অমিত শাহর দিল্লি পুলিশ। তারই প্রতিবাদে রবিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে গর্জে উঠলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষকে পাশে নিয়ে তিনি বলেন, বাংলা ভুলিয়ে হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার একটা গভীর চক্রান্ত চলছে দেশে। বিজেপি চায় ওয়ান নেশন ওয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ। বাংলা ভাষাকে অপমানের পাল্টা দিয়ে ব্রাত্যর প্রশ্ন, পাকিস্তানের ভাষা তো হিন্দি। সেই ভাষায় তো দিল্লির মানুষও কথা বলেন! তাহলে কি দিল্লির নেতাদের পাকিস্তানি বলে দাগিয়ে দেব?
তাঁর কথায়, বিশ্বের ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ বাংলা (Bengali Language) ভাষায় কথা বলেন। আমাদের জাতীয় সঙ্গীত লেখা হয়েছে এই ভাষায়। এই ভাষায় লেখা দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত। তাই বাংলাকে আপনি এভাবে অপমান করতে পারেন না। আমাদের বাংলাদেশি তকমা দিতে পারেন না। হিন্দি মহান ভাষা। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, কাজী নজরুল ইসলাম, ওঁরা বাংলা লিখতেন বলেই কি বাংলাদেশি?
আরও পড়ুন-দেশবিরোধী, অসাংবিধানিক : মুখ্যমন্ত্রী
কেন্দ্রকে নিশানা করে তিনি বলেন, এই বাংলা ভাষা কত আন্দোলন, প্রতিবাদ, বিপ্লবের জন্ম দিয়েছে, জানেন? এটি ইউনেসকো স্বীকৃত ভাষা, বিশ্বের প্রথম সাতটি ভাষার একটি। আজও তামিলনাড়ুতে হিন্দি বললে ঢোকা যায় না। আমরা তো বলছি না কিছু। বাংলায় সব ভাষা চলতে পারে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো রাজবংশী ভাষার জন্যও লড়াই করেন। তাহলে আপনাদের কেন এত বাংলা-বিদ্বেষ? বিজেপি হিন্দু বাঙালিদের এনআরসি নোটিশ পাঠাচ্ছে অপমান করতে। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে দিলীপকুমার সাহা আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর স্ত্রী আরতি সাহা কাঁদতে কাঁদতে ভিডিওতে এই কথা বলেছেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের অনুপ্রবেশকারী বলা হচ্ছে। পুণেতে এক কার্গিল যোদ্ধাকেও অনুপ্রবেশকারী বলা হয়েছে। বিজেপি নেতারা, বাংলায় থাকেন, বাংলা বলেন। এবার এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে বলুন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি একজন শিক্ষিত মানুষ। আমি তাঁকে বহুবার ভাষা, সংস্কৃতি নিয়ে বলতে শুনেছি। তাঁকে বাংলা কবিতা পড়তেও শুনেছি। তাহলে বলুন, আমরা এটা মেনে নেব না। কিন্তু সেই সৎ সাহস আপনাদের নেই।
শুনে রাখুন, বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া মানব না। এরপর তো স্কুলের বাচ্চারা বাংলা ভাষায় কথা বললে বলবে অন্য রাষ্ট্রের লোক, বর্ণ পরিচয় পড়লে বলবে অন্য রাষ্ট্রের লোক। আমরা প্রেমচন্দের সাহিত্যে পড়েছি। কিন্তু আপনারা আমাদের রবীন্দ্রনাথ, অতুলপ্রসাদকে ছোট করতে চাইছেন কেন? এসব আমরা মানব না।