প্রতিবেদন : পুরভোটে বাজিমাত করলেন প্রমীলা বাহিনী। শাসক-বিরোধী উভয় পক্ষেই মহিলা ব্রিগেডের জয়জয়কার। মহিলা ক্ষমতায়নের উপর বরাবরই বিশ্বাসী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই একাধিকবার মহিলা ব্রিগেডের উপর আস্থা রেখেছেন। লোকসভা, রাজ্যসভা বা পুরভোট— সবক্ষেত্রেই মহিলা প্রার্থীকে বেশি করে গুরুত্ব দিয়েছেন। এবারের পুরভোটেও তার অন্যথা হয়নি। বাস্তবে মহিলার দাপট যে কতখানি, তা কলকাতার পুরভোটে দেখিয়েও দিয়েছে প্রমীলা বাহিনী। দলনেত্রীর ভরসাকে মর্যাদা দিয়েছেন তৃণমুলের ৬৪ জন মহিলা প্রার্থী।
আরও পড়ুন : কলকাতার উন্নয়নে নতুন মুখ
অবশ্য বিরোধী মহিলা প্রার্থীরাও তাঁদের দলকে নিরাশ করেননি। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মেয়েদের জন্য কন্যাশ্রী-রূপশ্রী থেকে শুরু করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো একাধিক প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের পুরভোটে বিশাল সংখ্যক মহিলা প্রার্থীকে টিকিট দিয়েছিল তৃণমূল। যদিও হেভিওয়েট প্রার্থীদের জেতার বিষয়ে সংশয় ছিল না। তৃণমূল মহিলা প্রার্থীদের মধ্যে সর্বাধিক ভোট পেয়েছেন ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়েছেন ৩৭ হাজার ৬৬৮ ভোটে। যদিও এনিয়ে দ্বিতীয়বার পুরভোটে জয়ী হলেন তিনি। তবে সেই সঙ্গে যোগ হয়েছিল একাধিক নতুন মুখ। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রীর ভ্রাতৃবধূ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়। ৬৪৯৩ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তিনি। অন্যদিকে নতুন মুখ ছিল ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়। তিনিও প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা মুখোপাধ্যায়কে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন। প্রথমবার ময়দানে নেমেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূজা পাঁজা, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের সুপর্ণা দত্ত, ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের বসুন্ধরা গোস্বামী। অন্যদিকে টিকিট পেয়েছিলেন প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ও। জয় পেয়েছেন তিনিও। আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী ৮১ নম্বর ওয়ার্ডের জুঁই বিশ্বাসের ঝুলিতে এসেছে ৭ হাজারের বেশি ভোট। জিতেছেন ইকবাল আহমেদের মেয়ে সানা আহমেদও। বিপুল ব্যবধানে জয় পেয়েছেন শান্তনু সেনের স্ত্রী দু’নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী কাকলি সেনও। আবার তারক সিংয়ের স্ত্রী কাকলি সিংও বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছেন। অন্যদিকে বিরোধীদের মহিলা ব্রিগেডও মুখ রেখেছে। বিজেপির টিকিটে প্রার্থীপদ পেয়ে ২২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ফের জয়ী হয়েছেন মীনাদেবী পুরোহিত। অন্যদিকে জয়ের হাসি হেসেছেন ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিআইএম প্রার্থী নন্দিতা রায় এবং সিপিআই প্রার্থী মুধছন্দা দেব। পুরভোটে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয় পেয়েছেন ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের আয়েশা কনিজ, ১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের রুবিনা নাজ ও ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাশা নস্কর। সবমিলিয়ে কলকাতা পুরভোটে প্রমীলা বাহিনীর জয়জয়কার।