শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী
তিনি বাংলার ব্যান্ডিট কুইন, ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনে নিয়েছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ব্রিটিশরা তাঁকে বলত দস্যুরানি সেই দেবী চৌধুরানি (devi chowdhurani) এবার ‘উৎকর্ষিণী’র মঞ্চে। ৪ অগাস্ট গিরিশ মঞ্চে মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজার উদ্যোগে সূচনা হল ‘উৎকর্ষিণী’ দুর্গাপুজো সম্মান ২০২৫-এর। প্রতিবারের মতো এবারেও যাঁরা শৈলী ও নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখবেন তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে এই সম্মান। যার শুভ সূচনা করলেন বিশিষ্ট অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। পুজোয় মুক্তি পেতে চলেছে পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্রের ছবি ‘দেবী চৌধুরানি’। নাম ভূমিকায় রয়েছেন শ্রাবন্তী। অন্যদিকে ভবানী পাঠকের চরিত্রে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। উদ্বোধনের পাশাপাশি নিজের ছবির প্রচারও সারলেন শ্রাবন্তী। প্রদর্শিত হল এই ছবির প্রথম ঝলক। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় দুজনেই যেন টেক্কা দিলেন গেলেন একে-অপরকে। গায়ে কাঁটা ধরানো সেই প্রি-টিজার। এই প্রসঙ্গে শ্রাবন্তী বলেন, দু’বছর ধরে গোটা টিমের অক্লান্ত পরিশ্রম ফল ‘দেবী চৌধুরানি’ (devi chowdhurani)।
আরও পড়ুন-বাংলা ও বাঙালি নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-সমাবেশ
মন্ত্রী শশী পাঁজার উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুর বিধানসভা কেন্দ্রে একশোর বেশি পুজো হয়। তার মধ্যে তথাকথিত মাঝারি বাজেট বা ছোট বাজেটের যে পুজোগুলো হয় তাঁদের নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু করেছেন তিনি। সেরা প্রতিমা, সেরা মণ্ডপ, সেরা অলঙ্কার-সহ পুরোহিত অর্থাৎ সেরা পুরোহিত, ভিউয়ার্স চয়েজ, উদ্বোধনী চমক, সেরা চালচিত্র, হাত বাড়ালেই বন্ধু, পরিবেশবান্ধব ইত্যাদি প্রায় ২১টি বিভাগের জন্য দেওয়া হবে এই সম্মান। অভিনবত্ব রয়েছে বিচারকমণ্ডলীর ক্ষেত্রেও। এই বিধানসভা কেন্দ্রেরই অন্তর্গত সাতটা বিগ বাজেটের, ঐতিহ্যবাহী, নামকরা পুজো কমিটির থেকেই বেছে নেওয়া হয়েছে একজন করে বিচারক। কারণ হিসেবে ডাঃ শশী পাঁজা বললেন, একটা সুন্দর যোগসূত্র তৈরি করা এবং আগামী দিনে এই পুজো কমিটিগুলো যাতে আরও বেশি উৎসাহিত হয় এবং নিজেদের উৎকর্ষতা বৃদ্ধিতে সচেষ্ট হয় সেই অনুপ্রেরণা দেওয়া। বিচারকের আসনে থাকা সাতটি পুজো কমিটি হল বাগবাজার সার্বজনীন, কাশীবোস লেন, কুমারটুলী সার্বজনীন, কুমারটুলী পার্ক, আহিরীটোলা যুববৃন্দ, আহিরীটোলা সার্বজনীন ও জগৎ মুখার্জি পার্ক। ‘উৎকর্ষিণী’ ২০২৫-এর মঞ্চে এদিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বর্গীয় রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের পুত্র শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়, দেবজ্যোতি বোস, বিশিষ্ট গায়ক শুভঙ্কর ভাস্কর, চিত্রশিল্পী সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক, রাজনীতিক, সাহিত্যিক, অভিনেতা কুণাল ঘোষ। এছাড়াও ছিলেন উত্তর কলকাতার বহু পুজো উদ্যোক্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। বর্ণময় অনুষ্ঠান মাতিয়ে দেন মসলন্দপুরের ঢাকশিল্পীরা। যাঁর চণ্ডীপাঠ ছাড়া বাঙালির দুর্গাপুজো অসম্পূর্ণ সেই বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের এদিন ছিল জন্মদিন। সেই উপলক্ষে তাঁকে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়। অনুষ্ঠানে অতিথি তথা বিচারকদের হাতে তুলে দেওয়া উত্তরীয় এবং মিষ্টি।
ছবি : শুভেন্দু চৌধুরি