চিত্তরঞ্জন খাঁড়া
টেবল টপারের লড়াই ছিল। গত ১৪ মাসে টানা ৩৩ ম্যাচে অপরাজিত থাকা ডায়মন্ড হারবার এফসি ডুরান্ডের প্রথম দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষকে ১০ গোল দিয়ে নেমেছিল আইএসএল চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে। চোট ও কার্ড সমস্যায় মূল দলের পাঁচ ফুটবলারকে ছাড়াই মোহনবাগানের ফাইভ স্টার পারফরম্যান্স। ডায়মন্ড হারবার এফসি-কে ৫-১ গোলে চূর্ণ করে গ্রুপ শীর্ষে থেকে ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল মোহনবাগান। জয়ের হ্যাটট্রিকে তিন ম্যাচে ৯ পয়েন্ট। শেষ ৪০ মিনিট ১০ জনে খেলতে হওয়ায় ডায়মন্ড হারবারের কাজটা আরও কঠিন হয়ে যায়। যুবভারতীতে ফুল ফোটালেন সাহাল আব্দুল সামাদ। দুরন্ত জেসন কামিন্স, অনিরুদ্ধ থাপারা। বাগানের পাঁচটি গোল থাপা, জেমি ম্যাকলারেন, লিস্টন, সাহাল ও কামিন্সের। ডায়মন্ড হারবারের একমাত্র গোল লুকা মাজসেনের। প্রথমবার ডুরান্ডে নেমে ভাল শুরু করেও বিদায়ের মুখে ডায়মন্ড হারবার। গ্রুপ ডি-তে আইটিবিপি ম্যাচের উপর নির্ভর করছে লুকাদের ডুরান্ড ভাগ্য। এদিনের বড় হারে দ্বিতীয় স্থানে নেমে গেল ডায়মন্ড। গোল পার্থক্যও কমল।
আরও পড়ুন-আর এক বিজেপি বিধায়কের অশ্লীল ছবি নিয়ে তোলপাড়
এই ম্যাচের আগে বলা হচ্ছিল, মরশুমে প্রথম কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে চলেছে মোহনবাগান। কারণ, আত্মপ্রকাশের মাত্র তিন বছরের মধ্যে আই লিগে উত্তীর্ণ হওয়া ডায়মন্ড হারবারের ধারাবাহিকতা। কিন্তু এত সহজে মোলিনার ছেলেরা কঠিন হাডল পেরিয়ে যাবেন, তা হয়তো ভাবতে পারেননি সমর্থকরা। ডায়মন্ড হারবার কোচ কিবু ভিকুনা মোহনবাগানকে আই লিগ দিয়েছেন। পুরনো দলের বিরুদ্ধে আবেগের ম্যাচ জিততে মরিয়া ছিলেন। কিন্তু দুই স্প্যানিশ কোচের মগজাস্ত্রের লড়াইয়ে মাত কিবু। শুরুতে রণকৌশলে একটি ভুল করে ফেলেছিলেন ডায়মন্ড হারবার কোচ। গোলের মধ্যে থাকা লিস্টনকে বোতললবন্দি করতে গিয়ে ছেড়ে রাখলেন সাহালকে। তাতেই প্রথমার্ধে ২-১ করে ফেলল মোহনবাগান। দুটি গোলের ক্ষেত্রেই সাহালের অবদান। ডায়মন্ড রক্ষণের বিরাট ভুল। ১৮ মিনিটে সাহালের ছোট্ট টাকায় বল পান থাপা। দেখেশুনে নিখুঁত ফিনিশে বল জালে জড়ান। কাউন্টার আক্যাটাক থেকে ২৪ মিনিটেই সমতা ফেরায় ডায়মন্ড হারবার। বাগান রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে গোল করে যান লুকা। ৩৫ মিনিটে সাহাল-ম্যাকলারেন যুগলবন্দিতে ২-১ করে ফেলে মোলিনার দল। সাহালের থ্রু ধরে গোল করেন জেমি।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাকলারেনের পরিবর্তে আসেন কামিন্স। পাঁচ মিনিটের মধ্যে পেনাল্টি পায় মোহনবাগান। লিস্টনকে বক্সের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবারের নরেশ সিং। রেফারি তাঁকে লাল কার্ড দেখান। ৫২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ৩-১ করেন লিস্টনই। ডুরান্ডে তিন ম্যাচে পাঁচ গোল তাঁর। এরপর ম্যাচের বাকি সময়ে দাপট শুধু মোহনবাগানের। ১০ জন হয়ে যাওয়ায় ডায়মন্ড হারবার তখন সবুজ-মেরুন ঝড় সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সুযোগের সদ্ব্যবহার করে আরও দু’টি গোল করে মোলিনার দল। ৬৪ মিনিটে ৪-১ করেন সাহাল। জেমির পরিবর্তে নামা কামিন্সের পাসে পা ছোঁয়াতে পারেননি কেরলের ফুটবলার। ডায়মন্ড হারবারের রবিলালের পায়ে লেগে বল আসে সাহালেরই কাছে। গোল করতে ভুল করেননি তিনি। ডায়মন্ড হারবারের কফিনে শেষ পেরেক গেঁথে দেন কামিন্স। ৮০ মিনিটে বড় বক্সের উপর থেকে বাঁ-পায়ের নিখুঁত শটে গোল করেন অস্ট্রেলীয় বিশ্বকাপার।