প্রতিবেদন : ব্রিটিশরাও দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে বাংলা-ভাগের চক্রান্ত করেছিল। আর তা রুখে দিতে পথে নেমেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রাখি পরিয়ে বাঙালির সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলেছিলেন তিনি। এখন আবার সেই বিদ্বেষের বিষ ছড়িয়ে দিতে সক্রিয় হয়েছে বিজেপি। বাঙালির চিরন্তন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিই পারে সৌভ্রাতৃত্বের সেই বন্ধনকে আবার দৃঢ় করতে। শনিবার ধর্মতলায় দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ রাখিবন্ধন উৎসব পালন করে বিজেপির বাংলা-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে গর্জে উঠল। এদিন ‘গণমঞ্চ বার্তা’ প্রকাশ করে তারা জানিয়ে দিল, দেশে বিদ্বেষের রাজনীতি পুষ্ট হয়েছে আরএসএস-এর হাত ধরে। এখন সেটাই বিজেপির মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে হিংসার আকারে।
আরও পড়ুন-কলকাতা থেকে জেলা, রাখি-উৎসবে বাংলা
শনিবার সৌভ্রাতৃত্বের বার্তার প্রচার করে দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ প্রকাশ করল ‘গণমঞ্চ বার্তা’র বিশেষ সংখ্যা। এই সংখ্যার প্রধান বিষয় ছিল— ‘আরএসএস কীভাবে ভারতবর্ষের সংবিধান এবং সমাজকে ধ্বংস করছে।’ সেখানেই তুলে ধরা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে গোটা দেশ জুড়ে ধর্মীয় অস্থিরতা তৈরিতে বিজেপির পরিকল্পনার পিছনে রয়েছে আরএসএসেরই ইন্ধন। স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময় থেকে যেভাবে আরএসএস ব্রিটিশকে ইন্ধন জুগিয়ে দেশভাগে এবং সর্বোপরি ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগে প্রভাবিত করেছিল, সেই একই ছবি বর্তমান সময়েও দেখা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে নেতৃত্বে আরএসএস নয়, রয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন-রাখিবন্ধন, স্বরূপের উদ্যোগে ভিন্ন ছবি টলিপাড়ায়
পূর্ণেন্দু বসু-র সম্পাদনায় ‘গণমঞ্চ বার্তা’র বিশেষ সংকলনে লিখেছেন অভিরূপ সরকার, শিবাজিপ্রতিম বসু, উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুরাধা দেবের মতো বহু বিশিষ্টজন। এদিন উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পী, সাহিত্যিক, অধ্যাপক, সাংবাদিক এবং বাণিজ্য জগতের গুণীজনরা। এদিন রাখিবন্ধনে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে গণমঞ্চের পক্ষে বিশিষ্টরা জানান, ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে শুধুমাত্র ভাষার কারণে হিংসা ও বিদ্বেষের শিকার হতে হচ্ছে বাঙালিদের। গোটা দেশে ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের বাস্তব পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে আরএসএস ও তার সহযোগী শক্তিগুলিকে পরাজিত করতে হবে। আরএসএস-এর ইতিহাস, উত্থান বর্তমান কার্যক্রম বিশদে তুলে ধরা হয়। সেই সঙ্গে যে বিজ্ঞান, জাতীয়তাবাদ নিয়ে আরএসএস নেতারা প্রকাশ্যে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন, আরএসএসের সেই বিজ্ঞান চিন্তা, জাতীয়তাবাদের প্রতি চিন্তার স্বরূপ তুলে ধরা হয়।