প্রতিবেদন : এসআইআরের নামে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার কমিশনের চক্রান্তের বিরুদ্ধে উত্তাল হল রাজধানী দিল্লি। বিরোধী দলের সাংসদদের মিছিল আটকাতে নাজেহাল হল পুলিশ। বিরোধীদলগুলির মিছিলে উৎসাহিত সাধারণ মানুষও পা মিলিয়েছিলেন মিছিলে। বাছাই করে আক্রমণ করা হল তৃণমূলের মহিলা সাংসদদের। কমিশনে নিয়ে যাওয়ার নাম করে সাংসদদের তুলে নিয়ে আটকে দেওয়া হল থানাতে। সময় দিয়েও কমিশনকর্তারা দেখা করার সাহস করলেন না। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়ান বলেন, কমিশনের আসলে কোনও যুক্তি নেই। তাই সাংসদদের মুখোমুখি হতে ভয় পেল। মিথ্যাচার করে থানায় পাঠানো হল। দিল্লি যখন উত্তাল, তখন বারবার কলকাতা থেকে নেতৃত্বের কাছে ফোনে খবর নিয়েছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খবর নেন অভিষেকও। তৃণমূলের স্পষ্ট কথা, ১১ অগাস্ট দিনটি দেশের রাজনীতির ইতিহাসে কালো দিন। কমিশন বিজেপির এজেন্টের মতো কাজ করছে। পুলিশ দিয়ে কমিশনে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এটা গণতন্ত্রের কালো দিন, সুপার ইমারজেন্সি।
আরও পড়ুন-৪ আধিকারিককে অব্যাহতি
সোমবার সকালে যথারীতি মুলতবি প্রস্তাব আনা হয় এসআইআর নিয়ে আলোচনা করার জন্য। দুই কক্ষেই তা বাতিল হওয়ার পর সাংসদেরা সংসদ ভবন ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। মিছিল করে তাঁরা হাঁটতে শুরু করেন কমিশন অফিসের দিকে। ট্রান্সপোর্ট ভবনের কাছে আসার পরই মিছিল আটকে দেওয়া হয়। সেখানেই বসে পড়েন সাংসদেরা। পুলিশ বুঝতে পারে, অনড় প্রতিবাদীদের ঘটনাস্থল থেকে সরানো যাবে না। শুরু হয় পুলিশি দমন-পীড়ন। লক্ষ্য সেই তৃণমূলের মহিলা সাংসদেরা। মারধর, শাড়িটানা, চুলের মুঠি টানতে টানতে বের করে আনার চেষ্টা-সহ ন্যক্কারজনক পুলিশি অত্যাচার দেখল রাজধানী। আহত হলেন মহুয়া মৈত্র, সাগরিকা ঘোষ। হাসপাতালে নিয়ে যেতে হল মিতালি বাগকে। ওই অস্থির অবস্থার মধ্যেও বিরোধী জোটের পারস্পরিক সহমর্মিতার ছবি চোখে পড়েছে। রাহুল গান্ধী আহত তৃণমূল সাংসদদের সরিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগ নেন। এসআইআর নিয়ে বিরোধী সাংসদদের প্রতিবাদ-আন্দোলন যে এমন সর্বাত্মক হবে তা ভাবতে পারেনি বিজেপি। তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সরকারের লক্ষ্য জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভারতের মানুষকে ভাগ করা। নির্বাচন কমিশন বিজেপির হাতের পুতুল। বিজেপির এজেন্ট কমিশনের বিরুদ্ধে বিরোধীরা আসলে দেশের বিরোধের মধ্যে ঐক্যের চিত্র। বিরোধীদের হাতে ছিল সংবিধান। ছিল প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা ছিল ‘চুপি চুপি ভোটের কারচুপি’। প্রত্যেকটি রাজ্যের নিজেদের ভাষার পোস্টার-ব্যানার। রাজধানীর মানুষ অনেকেই পা মিলিয়েছেন সাংসদদের মিছিলে। এ যেন তাঁদেরও ভোটাধিকার ধরে রাখার লড়াই!