ভাষা সন্ত্রাসের-আবহে ৭৯তম স্বাধীনতা দিবসে (Independence day) আরও একবার বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম উল্লেখ করে তাঁদের শ্রদ্ধা জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি মনে করিয়ে দিলেন ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটানোর পিছনে রক্ত ঝড়িয়ে ছিলেন বাঙালিরাও। এখন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে শুধুই বাঙালি-নির্যাতন চলছে যা কিনা লজ্জার! এই দিনে শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
মুখ্যমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, “ভারতের ৭৯তম স্বাধীনতা দিবসে (Independence day) আমার সকল দেশবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।
প্রণাম জানাই আমাদের পূর্বপুরুষ-পূর্বনারীদের – তাঁদের দেশপ্রেম, নির্ভীক আত্মবলিদানই এই দিনটিকে সম্ভব করে তুলেছিল।
আজকের এই দিনে আমি এই মাটিকেও প্রণাম জানাই যে মাটিতে জন্ম হয়েছিল দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ক্ষুদিরাম বসু, প্রফুল্ল চাকী, কানাইলাল দত্ত, বিপিনচন্দ্র পাল, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, মাতঙ্গিনী হাজরা, মাস্টারদা সূর্য সেন, বিনয়-বাদল-দীনেশ, বাঘা যতীন – এর এর মতো সোনার ছেলে-মেয়ের। এই বাংলাই সেদিন বিদেশী শক্তির বিরুদ্ধে, অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছিল। লড়াই আমাদের রক্তে। আজও আমরা অন্যায় দেখলে গর্জে উঠি।
আরো আমরা প্রণাম জানাই নতমস্তকে বাংলা নবজাগরণের অগ্রদূত রাজা রামমোহন রায়কে, পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে যিনি আমাদের দিয়েছিলেন ‘বর্ণপরিচয়’, শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস দেবকে যাঁর বিখ্যাত বাণী ছিল ‘যত মত তত পথ’, স্বামী বিবেকানন্দকে যিনি বিশ্বের দরবারে আমাদের মাথা উঁচু করে তুলে ধরেছিলেন, বঙ্কিমচন্দ্রকে যাঁর ‘বন্দে মাতরম’ গানে (যা আজ জাতীয় গান) এই দেশ মুখরিত হয়েছে। আর প্রণাম জানাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে যিনি আমাদের শিখিয়েছেন ‘চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির’, যিনি শুনিয়েছেন ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ যা আমাদের স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করেছে, যিনি লিখেছেন ‘জনগণমন অধিনায়ক’, যা আজ এই স্বাধীন দেশের জাতীয় সঙ্গীত। আরো যত মনীষী আমাদের নবজাগরণের সময় থেকে বাংলা তথা ভারতকে নতুন করে গড়ে তুলেছিলেন, সকলকে প্রণাম।
আগামীদিনেও, এই পথিকৃৎদের দেখানো পথে প্রত্যেক দেশবাসীর সম্মান রক্ষা করার জন্য আমাদের লড়াই জারি থাকবে। যে সোনার দেশের স্বপ্ন দেখে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা জীবন-মৃত্যুকে পায়ের ভৃত্য করেছিলেন, সেই দেশ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। আমি নিশ্চিত, এই লড়াইয়ে মানুষ আমাদের পাশেই থাকবেন।
জয় হিন্দ! বন্দেমাতরম্! জয় বাংলা!”
আরও পড়ুন-সিইউ-র পরীক্ষাসূচি নিয়ে মিথ্যা বিবৃতির অভিযোগ
অভিষেক জানিয়েছেন,”স্বাধীনতা দেওয়া হয় না, কেড়ে নিতে হয়।
৭৮ বছর আগে এই দিনে ভারত স্বাধীনতার জন্য জেগে উঠেছিল। অপরিসীম ত্যাগ, সাহস এবং ঐক্যের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতা। আজ, যখন আমরা আমাদের তিরঙ্গাকে অভিবাদন জানাই, তখন আমাদের নিজেদেরকে জিজ্ঞেস করা উচিত: আমরা কি সেই ঐতিহ্যকে সম্মান করি?
প্রকৃত স্বাধীনতার অর্থ ভয়, ক্ষুধা, অবিচার এবং বৈষম্য থেকে মুক্তি। দুঃখের বিষয় হল ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা, সাম্য এবং ভ্রাতৃত্বের নীতি দ্বারা পরিচালিত ভারতের ধারণাকে নষ্ট করা হচ্ছে।
এই স্বাধীনতা দিবসে আসুন আমরা আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা করার, সংবিধানকে সমুন্নত রাখার, প্রতিটি ভারতীয়ের অধিকার রক্ষা করার, যেকোনো মূল্যে আমাদের অঙ্গীকার পুনর্নবীকরণ করি। এটাই আমাদের শহীদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলি।”