প্রতিবেদন: দেশের প্রগতিশীল বিচারপতিদের মধ্যে তিনি অগ্রণী ভূমিকায়। তাঁর সাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নিঃসন্দেহে এক দৃষ্টান্ত। স্বাধীনতা আন্দোলনের আদর্শ এবং মূল্যবোধের সুস্পষ্ট প্রতিফলন তাঁর মধ্যে। সংবিধান এবং গণতন্ত্রের উপরে আক্রমণ রুখতেই উপরাষ্ট্রপতি পদে সর্বসম্মত প্রার্থী হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি বি সুদর্শন রেড্ডিকে বেছে নিল বিরোধী জোট।
প্রার্থী হিসেবে বিচারপতি বি সুদর্শন রেড্ডির নাম ঘোষণা করে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে জানান, সব বিরোধী দল এই বিষয়ে একমত। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ আজ হুমকির মুখে। খাড়্গের কথায়, বিরোধী জোটের সব দল একজন সাধারণ প্রার্থী মনোনয়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতভাবে নেওয়া হয়েছে। আমি আনন্দিত যেসব বিরোধী দল একটি নামের বিষয়ে একমত হয়েছে। এটি গণতন্ত্রের জন্য একটি বড় অর্জন।
আরও পড়ুন-নেতাজিকে অপমান, নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে সিপিএমকে
বি সুদর্শন রেড্ডি ১৯৪৬ সালের ৮ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭১ সালের ২৭ ডিসেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশ বার কাউন্সিলের একজন আইনজীবী হিসেবে নথিভুক্ত হন। তিনি অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টে তাঁর আইনি পেশা শুরু করেন, যেখানে তিনি প্রধানত রিট এবং দেওয়ানি মামলার উপর মনোযোগ দেন। তিনি ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত হাইকোর্টের সরকারি আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন এবং ১৯৯০ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অতিরিক্ত স্থায়ী কাউন্সেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনি উপদেষ্টা এবং স্থায়ী কাউন্সেলের ভূমিকাও পালন করেন। রেড্ডি ১৯৯৫ সালের ২ মে অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টের একজন স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে তিনি গুয়াহাটি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হন। ২০০৭ সালের ১২ জানুয়ারি তিনি ভারতের সুপ্রিম কোর্টে উন্নীত হন এবং ২০১১ সালের ৮ জুলাই তাঁর অবসর গ্রহণের আগে পর্যন্ত সেই দায়িত্ব পালন করেন।
এক সাক্ষাৎকারে রেড্ডি বলেন, আমি এনডিএ-সহ সব দলের কাছে আমাকে সমর্থন করার জন্য আবেদন করছি। তিনি আত্মবিশ্বাসী, বিরোধী জোটের প্রার্থী হিসেবে তিনি ভারতের ৬০% মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিরোধী দলগুলো বিচারপতি রেড্ডিকে বেছে নিয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের এনডিএ সহযোগী চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি এবং পবন কল্যাণের জনসেনা-র উপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য। অন্যান্য তেলুগু দল, যেমন বিআরএস এবং ওয়াইএসআরসিপি, যারা ইতিমধ্যেই এনডিএ-র প্রার্থীর প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছে, তারাও তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারে। আসলে এনডিএ তামিলনাড়ুর রাধাকৃষ্ণণকে প্রার্থী করার প্রতিক্রিয়ায় বিরোধীদের এই সিদ্ধান্ত। যার লক্ষ্য দ্রাবিড় দলগুলোকে চাপে ফেলা। বিচারপতি রেড্ডিকে প্রার্থী করে বিরোধী জোটের ঐক্যের সব শর্ত পূরণ করা হয়েছে, ডিএমকে দক্ষিণ ভারতের কাউকে চেয়েছিল, আর তৃণমূল কংগ্রেস একজন অরাজনৈতিক প্রার্থীর পক্ষে ছিল।