প্রতিবেদন: গাজায় কর্মরত সাংবাদিকদের ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রেখে মেরে ফেলা এবং তাঁদের লক্ষ্যবস্তু করার প্রতিবাদে ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ইনস্টিটিউট (আইপিআই) সহ ১৫টি আন্তর্জাতিক সংস্থা একজোট হয়েছে। তারা ইজরায়েলের কাছে দাবি জানিয়েছে, গাজায় বিদেশি সংবাদমাধ্যমের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হোক। এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমাদের মতো সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় কর্মরত সংস্থা, সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং সত্য ও স্বচ্ছতার প্রবক্তারা একযোগে ইজরায়েলের কাছে গাজায় সাংবাদিকদের ইচ্ছাকৃত অনাহার ও লক্ষ্যবস্তু করা বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন-ট্রাম্পের নয়া লক্ষ্য এবার পুতিন-জেলেনস্কি বৈঠক
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলির অভিযোগ, গাজায় সাংবাদিকদের ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রেখে মেরে ফেলা হচ্ছে। এটি কোনও আলংকারিক কথা নয়, বরং এধরনের কাজ ইচ্ছাকৃত এবং বাস্তব সময়ে ঘটছে, আর গোটা বিশ্ব তা দেখছে। এখন গাজার যা পরিস্থিতি তাতে প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন দিনের পর দিন খাবার ছাড়া থাকছেন। অনাহারে থাকা মানুষগুলির মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিকরা, যাঁরা এখনও গাজার ভিতরে থেকে বস্তুনিষ্ঠ খবর পরিবেশন করছেন। অসমসাহসী এই ব্যক্তিরাই ইজরায়েলের গাজা যুদ্ধের মানবিক প্রভাব সম্পর্কে বিশ্বকে অবগত রাখছেন। আর এখন তাঁদের অনাহারে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এটি কোনও দুর্ঘটনা নয়, এটি একটি পরিকল্পিত যুদ্ধকৌশল। সাংবাদিকদের এই দুর্ভোগ কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, ইজরায়েল তাঁদের অনাহারে রেখে সত্যকে চাপা দেওয়ার জন্য ইচ্ছাকৃত এই কৌশল ব্যবহার করছে।
আরও পড়ুন-সংবিধান-গণতন্ত্রের উপরে আক্রমণ রুখতেই বিরোধী জোটের প্রার্থী রেড্ডি
প্রসঙ্গত, অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজায় ২৩০ জনেরও বেশি সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী নিহত হয়েছেন। যাঁরা বেঁচে আছেন, তাঁরা এবং তাঁদের পরিবার ক্রমাগত লক্ষ্যবস্তু, ভয়ভীতি এবং মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত। এখন তাঁদের বিমান হামলায় মৃত্যু অথবা অনাহারে মৃত্যুর মধ্যে একটি বেছে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাঁদের পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ এবং দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। সাংবাদিক সংগঠনগুলির আবেদন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি অবিলম্বে হস্তক্ষেপ না করে, তাহলে গাজার সাংবাদিকদের জীবন গুরুতর হুমকির মুখে পড়বে এবং তাঁদের কণ্ঠস্বর চিরতরে স্তব্ধ হয়ে যেতে পারে। এই যৌথ মঞ্চের দাবি: অবিলম্বে খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহ করা হোক। সুরক্ষিত মানবিক করিডরের মাধ্যমে গাজার সমস্ত সাংবাদিকের কাছে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য, বিশুদ্ধ জল এবং চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করা হোক। গাজায় বিদেশি সংবাদমাধ্যমের প্রবেশে অবরোধ তুলে নেওয়া হোক এবং বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হোক। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সাংবাদিকদের অনাহার ও হত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের তদন্ত ও বিচার করা হোক। সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক এবং বিশেষত যাঁরা অবরোধের মধ্যে থেকে খবর
সংগ্রহ করছেন, তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট সহায়তা দেওয়া হোক।