ছেলেকে খুন করে FBI-র হাতে ধৃত মোস্ট ওয়ান্টেড মহিলার ভারত যোগ

জানা গিয়েছে, এফবিআই-এর ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকার প্রথম দশে নাম ছিল সিন্ডি রড্রিগেজ সিংয়ের। খবরটি নিশ্চিত করেছেন এফবিআই-এর ডিরেক্টর কাশ প্যাটেল

Must read

নিজের ছ’বছরের পুত্র সন্তানকে খুনের অভিযোগ উঠেছে এক মহিলার বিরুদ্ধে। ঘটনা ২০২৩ সালের। তবে তারপর থেকে মার্কিন নাগরিক সিন্ডি রড্রিগেজ সিং ভারতে আত্মগোপন করেছিলেন বলে জানিয়েছে এফবিআই। অবশেষে বৃহস্পতিবার টেক্সাসের (Texas) সেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। জানা গিয়েছে, এফবিআই-এর ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকার প্রথম দশে নাম ছিল সিন্ডি রড্রিগেজ সিংয়ের। খবরটি নিশ্চিত করেছেন এফবিআই-এর ডিরেক্টর কাশ প্যাটেল।

আরও পড়ুন-কলকাতার বুকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের ‘বাংলাদেশী’ ও ‘রোহিঙ্গা’ বলে হেনস্থার অভিযোগ

২০২৩ সালে ছ’বছরের ছেলে নোয়েল আলভারেজকে খুনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ‘ক্যাপিটাল মার্ডার’-এর মামলা রুজু হয়। এরপরেই তিনি লুকিয়ে ছিলেন ভারতে। সূত্রের খবর, সিন্ডিকে টেক্সাসে ২০২৩-এর ২২ মার্চ শেষবার দেখা গিয়েছিল। সেদিন তিনি স্বামী অর্জদীপ সিং ও ছয় সন্তানকে নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে উঠেছিলেন এবং তাঁদের গন্তব্য ছিল ভারত। কিন্তু তাদের ছ’বছরের ছেলে নোয়েল সেই সময়ে তাঁদের সাথে ছিল না, সে ফ্লাইটে ওঠেইনি। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে সিন্ডির বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করে ইন্টারপোল। ভারত সরকারের কাছে সিন্ডিকে প্রত্যর্পণের আবেদনও জানানো হয়।

আরও পড়ুন-তরুণীর সঙ্গে প্রেমে পেট্রোল পাম্প কেনার প্রতিশ্রুতি, ধৃত প্রাক্তন বিএসএফ

এদিন এক্স হ্যান্ডলে কাশ প্যাটেল জানিয়েছেন তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য টেক্সাসের পুলিশ আধিকারিকদের, মার্কিন বিচারবিভাগ এবং ভারতকে ধন্যবাদ। এফবিআই ডালাস এবং এফবিআই নিউ ইয়র্কও অসাধারণ কাজ করেছে। সিন্ডিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, এরপরেই তাঁকে টেক্সাসে নিয়ে বিচারপ্রক্রিয়ার আওতায় আনা হবে। ২০২২-এর অক্টোবর থেকে সিন্ডির ছেলে নোয়েলকে আর দেখা যায় নি। সেই সময় সিন্ডি যমজ সন্তান প্রসব করে। ২০ মার্চ ২০২৩-এ, টেক্সাস ডিপার্টমেন্ট অব ফ্যামিলি অ্যান্ড প্রোটেকটিভ সার্ভিসেস-এর অনুরোধে স্থানীয় এভারম্যান পুলিশ নোয়েলের খোঁজে তাঁদের বাড়িতে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে সিন্ডি জানিয়েছিলেন নোয়েল মেক্সিকোতে সিন্ডির বাবার সঙ্গে থাকে। কিন্তু পুলিশ পরে জানিয়েছে এই তথ্য সম্পূর্ণভাবেই মিথ্যে। এরপরেই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠে সিন্ডির বিরুদ্ধে। তিনি নাকি বিশ্বাস করতেন তাঁর এই ছেলে ‘অভিশপ্ত’, এবং তার মধ্যে কোনও শয়তানের অস্তিত্ব রয়েছে। এই ছেলে ভবিষ্যতে তাঁর সদ্যোজাত যমজ সন্তানদের ক্ষতি করবে বলেই তিনি মনে করতেন। জানা গিয়েছে, নোয়েলের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ছিল এবং ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার ফলে নিয়মিত অক্সিজেন নিতে হত। পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, নোয়েলকে নিয়মিত খাবার ও জল পর্যন্ত খেতে দেওয়া হত না। সিন্ডি নিজের সন্তানের ডায়াপার বদলাতে চাইত না। প্রত্যক্ষদর্শীরা এই বিষয়ে জানিয়েছেন, একবার জল খেতে চাইলে সিন্ডি চাবির গোছা দিয়ে শিশুটির মুখে আঘাত করে।

আরও পড়ুন-জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তরুণীর

বেশ কিছু ক্ষেত্রেই সিন্ডির বয়ানে অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। একবার বলতেন নোয়েলকে মেক্সিকোয় পাঠানো হয়েছে, আবার জানা গিয়েছিল ফিয়েস্তা মার্কেটের পার্কিংয়ে এক মহিলার কাছে নোয়েলকে বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, ফ্লাইটে ওঠার আগের দিন অর্জদীপ একটি কার্পেট ফেলে দেন বাইরের ডাম্পস্টারে। সেই কার্পেট ও তাঁদের বাড়ির নতুন প্যাটিওতে মানবদেহের অস্তিত্ব বুঝতে পারে পুলিশ কুকুর। এরপর থেকেই সিন্ডি নিখোঁজ। তবে এবার ধরা পড়লেন সেই মহিলা।

Latest article