মাতৃত্বের কবি

অবাঙালি হয়েও স্বামী বিবেকানন্দের আধ্যাত্মিকতা, রবীন্দ্রসাহিত্যে ছিল তাঁর অপার জ্ঞান। চর্চা করতেন ভারতীয় পুরাণ, মহাকাব্য, উপনিষদ থেকে শুরু করে লিও টলস্টয়ের দর্শনও। মালয়ালম সাহিত্যের এমন এক নারীবাদী লেখিকা এবং কবি হলেন ‘মাতৃত্বের কবি’ বালামণি আম্মা। লিখলেন সৌরভকুমার ভূঞ্যা

Must read

ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যশালী সাহিত্যের ধারা হল মালয়ালম সাহিত্য। বিগত কয়েক শতক ধরে অসংখ্য কবি-সাহিত্যিক তাঁদের সৃষ্টিতে মালয়ালম সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে চলেছেন। এঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন থুনচাত্থু রামানুজন এজুথাচ্চন যাঁকে ‘মালয়ালম সাহিত্যের জনক’ বলা হয়। এছাড়া রয়েছেন আরও অনেকে। সাহিত্যচর্চায় যেখানে নারীর ভূমিকা কখনও অস্বীকার করা যায় না, সেখানে মালয়ালম সাহিত্যও তার ব্যতিক্রম নয়। মালয়ালম সাহিত্য মহিলা সাহিত্যিকে সমৃদ্ধ। সুগাথাকুমারী, কমলা দাস, ললিতাম্বিকা অন্তর্জনম প্রমুখ উল্লেখযোগ্য লেখিকাদের কলমে উঠে এসেছে সমাজ ও জীবনের নানান দিক। আর যাঁকে বাদ দিয়ে মালয়ালম সাহিত্য আলোচনা করা যায় না, তিনি হলেন নালাপত বালামণি আম্মা, মালয়ালম সাহিত্যে যিনি ‘মাতৃত্বের কবি’ নামে বিশেষ পরিচিত।
১৯০৯ সালের ১৯ জুলাই কেরলের ত্রিশূর জেলার পুন্যায়ুরকুলাম নামক গ্রামে বালামণি আম্মার জন্ম। চিত্তানপুর কুনহুন্নি রাজা ও মা নালাপাত কচুকুট্টি আম্মার জ্যেষ্ঠ সন্তান ছিলেন তিনি। বাবা ছিলেন চিত্তানুর কারলাকামের রাজ পরিবারের বংশধর। তখনকার নিয়ম অনুযায়ী নায়ার পরিবার ছিল মাতৃতান্ত্রিক। তাই বালামণির জন্ম ও লালন-পালন হয়েছিল মামাবাড়িতে। বাবা তাদের সঙ্গে থাকতেন না। তিনি মাঝে মাঝে এসে দেখা করে যেতেন।

আরও পড়ুন-মাতৃত্বের কবি

বালামণিদের পরিবার ছিল শিক্ষিত ও সংস্কৃতিমনস্ক। পরিবারে যেমন জ্ঞানচর্চার ধারা ছিল, তেমনি ছিল সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল। বালামণির মামা নালাপত নারায়ণ মেনন ছিলেন মালয়ালম সাহিত্যের একজন খ্যাতনামা লেখক এবং অনুবাদক। বালামণি আম্মার জীবনে তাঁর মামার প্রভাব অপরিসীম।
প্রথাগত শিক্ষার সুযোগ হয়নি বালামণির। সেই সময় সমাজে নারীদের স্কুলে গিয়ে শিক্ষার অধিকার ছিল না। নারায়ণ মেনন সমাজের রীতিনীতির বাইরে যেতে পারেননি। তবে মেয়েদের শিক্ষার অনুরাগী ছিলেন তিনি। তাই গৃহশিক্ষক রেখে বালামণি ও তাঁর বোন আম্মানু আম্মার শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন। শ্রী ভাতামোর নামবাসান নামক সেই গৃহশিক্ষকের কাছে বালামণিরা মালয়ালম, সংস্কৃত এবং অংক শেখেন। পরবর্তী সময়ে নিজের চেষ্টায় তিনি ইংরেজি শিখেছেন। ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন।
ছোটবেলা থেকে বালামণির ছিল পড়াশোনার প্রতি তীব্র আগ্রহ। মামা সাহিত্যিক হওয়ায় নিয়মিত অনেক পত্রপত্রিকা বাড়তে আসত। পাশাপাশি নানা ধরনের প্রচুর বইয়ের সংগ্রহ ছিল তাঁর। সেসব পড়তেন বালামণি। পড়ার এই অভ্যাস বালামণি তাঁর মায়ের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। মায়ের পড়াশোনার আগ্রহ ছিল প্রচুর। একটু বড়ে হওয়ার পর মায়ের সঙ্গে বই পড়তেন, তাঁর সঙ্গে লেখালিখি নিয়ে আলোচনা করতেন। বিয়ের পূর্বে মামার বিশাল সংগ্রহের প্রায় সব বই পড়া হয়ে গিয়েছিল বালামণির। ভারতীয় পুরাণ, মহাকাব্য, উপনিষদ থেকে শুরু করে লিও টলস্টয়ের দর্শন, স্বামী বিবেকানন্দের আধ্যাত্মিকতা থেকে রবীন্দ্র-রচনাবলী— তাঁর পাঠ ছিল বহুমুখী ও বিচিত্র ধারার। পাশাপাশি ধর্মতত্ত্বের ওপরও অনেক বই পড়েছিলেন তিনি।
বারো বছর বয়স থেকে বালামণির লেখালিখি শুরু। মামার সাহিত্যগুণ সঞ্চারিত হয়েছিল তাঁর মধ্যে। নারায়ণ মেনন নিজে সাহিত্যিক হওয়ায় বাড়িতে অনেক কবি-সাহিত্যিক আসতেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ভাল্লাথোল মেনন, যিনি ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে পদ্মভূষণ সম্মান পেয়েছিলেন। তিনি বালামণিকে উৎসাহিত করতেন লেখালিখির ব্যাপারে।
কলকাতার ওয়ালফোর্ড ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির সিনিয়র অফিসার ভি এম নায়ারের সঙ্গে উনিশ বছর বয়সে বালামণির বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে কলকাতায় আসেন তিনি। শুরু হয় তাঁর জীবনের এক নতুন অধ্যায়। তাঁদের চার সন্তান— মোহন, কমলা, শ্যামসুন্দর ও সুলোচনা। কমলা দাস ছিলেন মায়ের মতো একজন স্বনামধন্য লেখিকা। বালামণির স্বামী ভি-এম নায়ারের ইংরেজি সাহিত্যে ছিল অগাধ জ্ঞান। পরবর্তী সময়ে তিনি মালয়ালম দৈনিক পত্রিকা ‘মাতৃভূমি’র সম্পাদনা করেন, এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর হয়েছেন।
বালামণি আম্মার সাহিত্যজীবনে তাঁর স্বামীর বিশেষ অবদান ছিল। ভি এম নায়ার সাহিত্যানুরাগী ছিলেন। স্ত্রীর মধ্যেকার অসাধারণ কাব্যিক প্রতিভা তিনি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। লেখালিখির ব্যাপারে তিনি তাঁকে উৎসাহ দিতেন, অনুপ্রেরণা জোগাতেন। শুধু তাই নয়, বালামণি যাতে লেখালিখিতে পুরোপুরি মনোনিবেশ করতে পারেন তার জন্য সাংসারিক কাজকর্মের জন্য লোক রেখেছিলেন। স্বামীর সাহায্য ও অনুপ্রেরণা বালামণির সাহিত্যের পথচলাকে মসৃণ করেছিল।

আরও পড়ুন-সন্তানে কেন না

১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে বালামণির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কুপ্পুকাই’ প্রকাশিত হয়। এই বইটি প্রকাশের পর বালামণি কোচির প্রক্তন শাসক পরীক্ষিত থামপুরানের কাছ থেকে ‘সাহিত্য নিপুনা পুরস্কার’ লাভ করেন যা তাঁকে সাহিত্যে জগতে পরিচিতি দান করে। এগিয়ে চলে তাঁর কলম। সারাজীবনে তিনি পাঁচশোর বেশি কবিতা লিখেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে আম্মা, মুথাসাসি, স্ত্রীহৃদয়ম, কুদুম্বিনী, নাগারথিল, নৈবেদ্যম, মাত্রুহৃদয়ম, অম্বলতিলেক্কু, কালিক্কোত্তা, প্রণামাম, সন্ধ্যা, টু মাই ডটার প্রভৃতি। পাশাপাশি তিনি প্রবন্ধ লিখেছেন, অনুবাদের কাজ করেছেন। মামার লেখা ‘টু দ্য হরিজন’-এর ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন। নিজের কিছু কবিতাও তিনি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন।
বালামণি আম্মার লেখার মধ্যে যেমন ফুটে উঠেছে প্রকৃতি, সমাজ, পুরাণ, নারী-জীবনের কথা তেমনি করে এসেছে দেশপ্রেমের কথাও। প্রসঙ্গত বলার, তাঁর পরিবার গান্ধীজির আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিল। তিনি নিজেও খাদির শাড়ি পরতেন, চরকা কাটতেন। গান্ধীজিকে তিনি গভীরভাবে শ্রদ্ধা করতেন। তাঁর মৃত্যুকে স্মরণ করে তিনি ‘এ বোকে অব ফলেন পেটালস’ নামে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন।
পুরাণ, উপনিষদে বালামণির ছিল অগাধ জ্ঞান। পুরাণের বেশকিছু চরিত্রকে নিয়ে তিনি কবিতা লিখেছেন। তবে এক্ষেত্রে তাঁর মধ্যে স্বতন্ত্রতা দেখা যায়। পুরাণের কাহিনিকে তিনি ভিন্ন আঙ্গিকে প্রকাশ করেছেন। আমরা জানি শরবিদ্ধ ক্রৌঞ্চের মৃত্যু দেখে বাল্মীকি এতটাই শোকগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন যে তাঁর মুখ দিয়ে শ্লোক নির্গত হয়েছিল। এই ঘটনা বাল্মীকি অন্যভাবে প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে, পাখির মৃত্যু দেখে বাল্মীকির মনের মধ্যে ভেসে ওঠে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনা। নিজের দোষে তিনি তাঁর সুখের পরিবার নষ্ট করেছেন। এই ভাবনাই তাঁকে শোকাতুর করে তোলে। অনুরূপভাবে সীতা, দ্রৌপদী, কুন্তী, গান্ধারী প্রভৃতি চরিত্রগুলি নিয়ে লিখতে গিয়ে মহাকাব্যিক ভাবনার রূপান্তর ঘটিয়েছেন।
বালামণি আম্মা ছিলেন একজন নারীবাদী লেখিকা। তাঁর কবিতায় ফুটে উঠেছে নারী জীবনের দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা; তাঁদের আত্মত্যাগ, আত্মসম্মানবোধ প্রভৃতি। পাশাপাশি পুরুষের ছায়া থেকে বের করে নারীদের তিন স্বতন্ত্র সত্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বিশেষ করে পুরাণ, মহাকাব্যের নারীচরিত্রগুলি নিয়ে যে লেখা তিনি লিখেছেন সেখানে এই বৈশিষ্ট্য বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর সেই প্রতিবাদ সরব নয়, নীরব কিন্তু বলিষ্ঠ।
বালামণি আম্মার সৃষ্টির কথা আলোচনা করতে গেলে অবশ্যই করে আসে মাতৃত্বের কথা। মা তাঁর কাছে কেবল এক সম্পর্ক নয়, এক গভীর অনুভব। মাতৃত্ব মানে স্নেহ, ত্যাগ ও সৃষ্টির ধারা। মা মানে কেবল সন্তানের জন্ম দেওয়া নয়। মা মানে নিজের আত্মাকে অন্যের মধ্যে নিঃস্বার্থভাবে বিলিয়ে দেওয়া। সন্তানকে মানুষ করতে গিয়ে মা নীরবে নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দেন। নিজে হয়তো একাকী জীবন কাটান। মা কিংবা মাতৃত্ব আসলে এক শক্তি যা সন্তানের মধ্যে চালিত হয়ে তার চলার পথকে মসৃণ ও মজবুত করে।
বালামণি আম্মার অনেক কবিতায় উঠে এসেছে মায়ের কথা। মাকে নিয়ে তাঁর বিখ্যাত কবিতা আম্মা। নিজের মাকে উদ্দেশ্য করে তিনি কবিতাটি লিখেছেন। কবিতায় ফুটে উঠেছে মায়ের আত্মত্যাগের কথা। মা তাঁর কাছে দেবী। সেই দেবীর চরণের ধুলো হতে চেয়েছেন তিনি। তাঁর জীবনের সমস্ত দুঃখ, দুর্দশা মা নীরবে নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। কবিতার মধ্যে সেই মাকে খুঁজেছেন তিনি। আর তাঁকে খুঁজে না পাওয়ার মর্মস্পর্শী বেদনা ফুটে উঠেছে কবিতার শেষ ছত্রে। মায়ের চরিত্রের যে ছবি তিনি তুলে ধরেছেন তা কেবল নিজের মায়ের কথা নয়, পৃথিবীর সকল মায়ের কথা। তাঁর এই কবিতা কাব্যজগতে আলোড়ন তোলে। জওহরলাল নেহরু তাঁর এই কবিতা পড়ে মুগ্ধ হয়ে এক চিঠিতে তাঁকে লিখেছিলেন, “Your poem ‘Amma’ brought tears to my eyes. It remembered me of my own mother, and the love that transcends words.”

আরও পড়ুন-৭২০ শ্রমিককে দেওয়া হল ১ কোটি ৪ লক্ষ টাকার সহায়তা

মা সম্পর্কিত তাঁর আরও কিছু উল্লেখযোগ্য কবিতার মধ্যে রয়েছে মুথাসাসি, মাজুভান্তে কথা, প্রভাতগীতম, লোকাম, স্ত্রীহৃদয়ম, লোকান্তরাঙ্গলিল প্রভৃতি। ‘মুথাসাসি’ কবিতায় তিনি ব্যক্ত করেছেন সংসারে ঠাকুমার ভূমিকার কথা। তাঁকে তিনি অন্ধকারের দীপশিখা বলে উল্লেখ করেছেন। যাঁর মুখের কথা বৈদিক মন্ত্রের ন্যায়। ‘মাজুভান্তে কথা’ কবিতায় ফুটে উঠেছে এক মায়ের আত্মত্যাগের কাহিনি। সন্তানকে মানুষ করতে গিয়ে একজন মা যোদ্ধার মতো সমাজ ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। ‘লোকাম’ কবিতায় মায়ের চোখে উঠে আসে সমগ্র বিশ্ব। সংসার, সন্তান, প্রকৃতি ও ঈশ্বর— সবকিছু নিয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গিতে এক নতুন বিশ্ব নির্মাণ করে মা।
সবমিলিয়ে মা একদিকে স্নেহশীলা জননী, অন্যদিকে ত্যাগ ও সেবার প্রতীক। তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক। এক অঙ্গে বহুরূপের অধিকারী মা তার সন্তানকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে তৈরি করেন আগামীর আদর্শ নাগরিক হিসেবে। তার আত্মত্যাগ, নীরব কষ্ট যন্ত্রণার কথা আড়ালেই থেকে যায়। এককথায় তাঁর অসংখ্য কবিতায় তিনি এইভাবে মায়ের বহুমাত্রিক রূপ ফুটিয়ে তুলেছেন। সে কারণেই তাঁক যথার্থভাবে বলা হয় ‘মাতৃত্বের কবি।’
সারাজীবনে তিনি অনেক সম্মাননা ও পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কেরালা সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, কেন্দ্র সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, আসান পুরস্কার, ভাল্লাথোল পুরস্কার, ললিতাম্বিকা অন্তরজানম পুরস্কার। ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মভূষণ সম্মান প্রদান করেন। ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে তাঁর ‘নৈবেদ্যম’ কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি সরস্বতী সম্মান পান। প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে এই সম্মান লাভ করেন তিনি। দীর্ঘ পাঁচ বছর অ্যালঝাইমার রোগে ভোগার পর ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের ২৯ সেপ্টেম্বর পঁচানব্বই বছর বয়সে তিনি মারা যান।
মালয়ালম সাহিত্যের ইতিহাসে বালামণি আম্মা একটি উজ্জ্বল ও উল্লেখযোগ্য নাম। সংসারের গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ থেকেও নিজেকে তিনি গড়ে তুলেছেন সাহিত্যের বলিষ্ঠ স্তম্ভ রূপে। তাঁর কবিতা কেবল ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার বর্ণনা নয়, সেগুলির মধ্য দিয়ে ফুঠে উঠেছে মাতৃত্বের গভীর অনুভব, নারীর আত্মসন্ধান। নীরব কিন্তু বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরে তিনি নারী হৃদয়ের কথা ব্যক্ত করেছেন। বলেছেন তাদের স্নেহ, করুণা, আত্মত্যাগ ও মানবিক সত্তার কথা। এসব মিলে তাঁর কবিতাকে তিনি পৌঁছে দিয়েছেন এক উচ্চ জায়গায়। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন নীরবতা কেবল দুর্বলতা নয়, অনেক সময় তা হয়ে ওঠে প্রতিবাদের বলিষ্ঠ ভাষা যা উঠে আসে হৃদয়ের গভীর আবেগ ও বেদনা থেকে। তাঁর লেখা কেবল সময়ের দলিল নয়, সাহিত্যের ধারাকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি তা আগামী প্রজন্মের নারীদের জীবনের পথচলায় এক উজ্জ্বল অনুপ্রেরণা।

Latest article