রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়
বড়দিন কীভাবে কাটাবেন?
এখন ছেলের জন্য কেক বানাই। ছেলে দিনটা দারুণ এনজয় করে। প্রতিবছর গাড়ি নিয়ে ছেলের সঙ্গে একটু বেরোই। পার্ক স্ট্রিটের লাইট দেখে আসি। কেক কিনেও আনি। এইভাবেই আমাদের বড়দিন কাটে। এই বছরেও সেই রকমই পরিকল্পনা আছে।
ছোটবেলায় দিনটি কীভাবে কাটত?
মনে পড়ে, ছোটবেলায় বড়দিনে বাড়িতে কেক আসত। মাও বানাতেন। সবাই মিলে বাড়িতে সেলিব্রেট করতাম। তারপর যখন একটু বড় হলাম, স্কুল পেরিয়ে কলেজ, তখন বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিসমাস পার্টি করতে যেতাম। পার্ক স্ট্রিটে বেড়াতে যেতাম। এই ভাবেই কাটত। আগের দিন অর্থাৎ ২৪ ডিসেম্বরের রাতে টলি ক্লাবে যেতাম বন্ধুরা মিলে। ওখানে গিয়ে খুব আনন্দ করতাম। মজা করতাম। তারপর একটা সময় যুক্ত হয়ে গেলাম অভিনয়ের জগতে। ৩৬৫ দিন কাজ। ২৫ ডিসেম্বর বা নিউ ইয়ার বলে কিছু আলাদা করে আর মনে হয়নি।
আপনার জীবনে সান্টাক্লজ কে?
আমার জীবনের সান্টাক্লজ আমার বাবা-মা। তাঁরাই আমার সব স্বপ্ন সফল করেছেন। জীবনের যাবতীয় চাহিদা পূরণ করেছেন। যেটুকু সাফল্য পেয়েছি তাতে মা-বাবার হাত ছিল। তাই তাঁরাই আমার কাছে সান্টাক্লজ।
ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়
কীভাবে কাটাবেন এবারের বড়দিন?
বড়দিনের আগে ও পরে অনেকগুলো কাজ আছে। ছবির শুটিং চলছে। সেই কাজটা বড়দিনের পরেই শেষ হয়ে যাবে। একটুখানি বাকি আছে। তারসঙ্গে অন্যান্য কাজকর্মও চলছে। সামনের বছর শুটিং করতে বাইরে চলে যাচ্ছি। কয়েক দিনের জন্য। তার গোছগাছ চলছে। বড়দিন কাটাব মায়ের সঙ্গে। আমাদের পাড়ায় বেশকিছু বাচ্চা আছে। আমার ভাই-বোনের মতো। আমার মা তাদের খুব ভালবাসেন। চকোলেট দেন, মিষ্টি দেন, বিভিন্ন রকমের খাবার খবার দেন। ২৫ ডিসেম্বর ওদের মধ্যে একজনের জন্মদিন। মা ঠিক করেছেন, সবাইকে নিয়ে ওর জন্মদিন সেলিব্রেট করবেন, কেক কাটবেন। পাড়ার ভাই-বোনেদের ডেকে খাওয়াবেন। আমিও সিদ্ধান্ত নিয়েছি মায়ের সঙ্গে সারাদিন থাকব। পাশাপাশি দেখা করব বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গেও। বাবা এবার থাকতে পারবেন না। কারণ বাবার নাটকের শো আছে।
ছোটবেলায় দিনটি কীভাবে কাটত?
ছোটবেলায় আমি ক্রিসমাসে যে বিরাট কিছু সেলিব্রেট করতাম, তা নয়। যখন ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুলে পড়তাম, তখন স্কুলে একটা বড় ইভেন্ট হত। সেটার নাম অস্পিরেশন। সেটায় সময় কাটত। আমি বরাবর ক্রিসমাসে ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে চলি। বিশেষত পার্ক স্ট্রিটের ভিড়। শীতকাল মূলত নাটকের সিজন। এই ক্রিসমাস এবং নিউ ইয়ার-এর সময় প্রচুর নাটকের শো থাকে। আমাদের নাটকের শোও থাকত। নান্দীকার-এর জাতীয় নাট্যমেলা বরাবর এই সময় হয়। এইবারও তাই হচ্ছে। এই নাট্যমেলায় বড় বড় নাটক আসত। আমরা সেই নাটক দেখতে যেতাম। খুব ছোটবেলায় ক্রিসমাসের দিন বাবা সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল চার্চে নিয়ে যেতেন। হয় অ্যাকাডেমিতে নাটক দেখে বা নাটকের শো সেরে। সঙ্গে থাকত আমার দিদিও।
আপনার জীবনে সান্টাক্লজ কে?
আমার জীবনের সান্টাক্লজ দু’জন। আমার বাবা এবং মা। সান্টাক্লজ-এর কাছে উইশ করলে উপহার পাওয়া যায়। কিন্তু আমি জীবনে এমন অনেক কিছু পেয়েছি, যেগুলো পাবার কথা কোনওদিন ভাবিনি। সেগুলো পেয়েছি বাবা-মার কাছে। যদিও সেগুলো মেটিরিয়াল গিফট নয়। হাতে ধরা যায় এরকম কোনও গিফট নয়। সেগুলো একান্ত ব্যক্তিগত কিছু গিফট। কিছু অনুভূতি। কিছু মূল্যবোধ। এগুলো পেয়েছি না চাইতেই। তাই আমার জীবনের সান্টাক্লজ আমার মা এবং বাবা।
আরও পড়ুন-ভার্জিন মেরি ও আজকের সিঙ্গল মাদার
কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়
এবার বড়দিনে কী করছেন?
এবার তেমন কিছু করছি না। বাড়িতেই থাকব। মেয়ের সঙ্গেই সময় কাটাব। যদিও এখন শুটিংয়ের প্রচুর চাপ। তবু ক্রিসমাসের দিন কোনও কাজ করব না।
আগে বড়দিনে কী করতেন?
নিউমার্কেট যেতাম। কেক কিনতাম। বাবা ক্রিসমাস টুপি কিনে দিতেন। বাঁশি কিনে দিতেন। মনে পড়ছে, বাবার সঙ্গে আমি চার্চেও গেছি। এখন পুরনো সব কথা মনে পড়ে। নস্টালজিয়া মোড়া।
আপনার জীবনের সান্টাক্লজ কে?
আমার জীবনে কোনও সান্টাক্লজ নেই। আমিই আমার জীবনের সান্টাক্লজ। আমার স্বপ্নপূরণ আমি নিজেই করেছি। পাশাপাশি আমি আমার মেয়েরও সান্টাক্লজ। ও যা যা ভালবাসে, সেগুলো দেওয়ার চেষ্টা করি। খুব ছোট্ট হলেও ও রীতিমতো সান্টাকে বোঝে, জিঙ্গল বেলস বোঝে। এগুলো নিয়েই আমার উত্তেজনা, ঘর সাজানো। ক্রিসমাসের জন্য সুন্দর আলো দিয়ে আমরা ঘরটা সাজিয়েছি। আমার মেয়েকে মাঝেমধ্যে আমার সান্টা বলে মনে হয়। সে আমার সমস্ত আনন্দের উৎস। আমরা একে অপরের সান্টা।
সৌমিত্র রায়
এবার বড়দিনে কী করছেন?
প্রত্যেক বছর আমার বাড়িতে ক্রিসমাস সেলিব্রেট করি। এবারও তাই করব। আত্মীয় বন্ধুবান্ধবরা আসবেন। তারকাখচিত ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়েছে। বাড়িতে আমার গিন্নি কেক বানায়। সেই কেক সবাইকে দেওয়া হয়। এবারও হবে। আর খাওয়া-দাওয়া তো আছেই। আনন্দ হই-হুল্লোড়ে মেতে উঠব সবাই। হবে গানবাজনা। অন্যান্য বছর চেষ্টা করি এই দিন বাইরে অনুষ্ঠান না রাখতে। তবে এই বছর ২৫ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বাংলা সংগীত মেলা শুরু হচ্ছে। আমাকে থাকতে হবে দেশপ্রিয় পার্কে। পাশাপাশি সল্টলেকে একটা গানের অনুষ্ঠানেও যেতে হবে। উদ্যোক্তাদের বলেছি আমাকে তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিতে। কারণ আমার বাড়ির অনুষ্ঠান শুরু হবে প্রতিবছরের মতো রাত ন’টায়। তার আগে আমাকে পৌঁছতে হবে।
ছোটবেলায় দিনটি কীভাবে কাটত?
ছোটবেলায় মা কেক তৈরি করতেন। পাড়া-প্রতিবেশীদের সেই কেক খাওয়ানো হত। আমাদের বাড়িতে ক্রিসমাস উপলক্ষে ছোটখাটো অনুষ্ঠান হত। মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে ছিল আমাদের পারিবারের গভীর সম্পর্ক। আমার মা-বাবাকে তিনি খুব ভালবাসতেন। একবার তিনি আমার মাকে বলেন, আমরা বাড়িতে ক্রিসমাস সেলিব্রেট করব। তোমরা এসো। মা শুনে বলেছিলেন, আমরাও তো বাড়িতে ক্রিসমাস সেলিব্রেট করি। সেটা জানার পর মহানায়ক উত্তম কুমার, আমার উত্তমকাকু, ক্রিসমাসের দিন আমাদের বাড়ি এসেছিলেন। খুব আনন্দ করেছিলেন সবার সঙ্গে। আমি পড়তাম দার্জিলিং কনভেন্ট স্কুলে। ক্রিসমাসের সময় স্কুলে লম্বা ছুটি থাকত। আমার মামার বাড়ি ছিল জব্বলপুরে। ছোটবেলায় কয়েক বছর সেখানেও ক্রিসমাস সেলিব্রেট করেছি। মামারা ছিলেন আর্মিতে। তাঁরা দিল্লি চলে যাওয়ার পর ক্রিসমাসের ছুটিতে আমরা দিল্লিতেও গেছি। একটু বড় হওয়ার পর আমরা ক্রিসমাস সেলিব্রেট করেছি কলকাতার বাড়িতেই।
আপনার জীবনের সান্টাক্লজ কে?
আমার জীবনের সান্টাক্লজ আমার বাবা। তিনি আমার জীবনের বহু শখ পূরণ করেছেন।